ভেন্টিলেটর তৈরি করছে ওয়ালটন

মেডিকেল যন্ত্রপাতি তৈরির বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান মেডট্রনিকের সহায়তায় বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন করোনা মোকাবিলায় তৈরি করেছে ভেন্টিলেটর (কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার যন্ত্র)। এখন এ ভেন্টিলেটর পাঠানো হচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে। প্রয়োজনীয় অনুমোদন শেষে পাঠানো হবে ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার জন্য।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ। 

করোনাভাইরাসের সংক্রমণে কিছু রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে। তখন কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার যন্ত্র দিয়ে রোগীকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়। তখন মানুষের জীবন বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে ভেন্টিলেটর। কিন্তু সারা বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করলে বিশ্বব্যাপী ভেন্টিলেটরের সংকট দেখা দেয়। মানুষের জীবন বাঁচানোর মানবিক তাগিদ থেকে এগিয়ে আসেন মেডট্রনিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও চেয়ারম্যান বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকার নাগরিক প্রকৌশলী ওমর ইশরাক। মেডট্রনিকের একটি ভেন্টিলেটর তৈরির কৌশলের পেটেন্ট উন্মুক্ত কর দেয় মেডট্রনিক। বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগকে ভেন্টিলেটর তৈরির সোর্স কোডও তুলে দেয় মেডট্রনিক। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন তৈরি করেছে তিন মডেলের ভেন্টিলেটর। 

সংবাদ সম্মেলনে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জানান, আইসিটি বিভাগ সুপারিশসহ ওয়ালটনের তৈরি তিন মডেলের ভেন্টিলেটর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠাবে। এরপর অধিদপ্তরের নির্দেশনামতো পরবর্তী সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। 

ওয়ালটন ভেন্টিলেটর তৈরি প্রকল্পের প্রধান গোলাম মুর্শেদ, প্রকল্পটির উপদেষ্টা লিয়াকত আলী, সরকারের আইসিটি বিভাগের এলআইসিটি প্রকল্পের নীতিবিষয়ক উপদেষ্টা সামি আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। 

কোনো স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন নেওয়া হয়েছে কি না, কতজনের মধ্যে, কোথায় ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল দেওয়া হবে—প্রথম আলোর এমন প্রশ্নের জবাবে জানানো হয়, আগামীকাল বুধবার আইসিটি বিভাগের সুপারিশসহ ভেন্টিলেটর প্রোটোটাইপ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জমা দেওয়া হবে। প্রতিষ্ঠানটির নির্দেশনা অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

দেশের কতটি প্রতিষ্ঠান এখন পর্যন্ত ভেন্টিলেটর তৈরি করতে সমর্থ হয়েছে—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমার জানামতে, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী, মাইওয়ান, আইসিটি বিভাগের ইনোভেশন ল্যাব ১৮ ধরনের প্রোটোটাইপ তৈরি করেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলতে পারবে।’

আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম সংবাদ সম্মেলনে সমাপনী বক্তব্য দেন।