মুরগির সরবরাহে টান, দাম লাফাচ্ছে

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানীর বাজারে যে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১১০ টাকায় নেমেছিল, সেটা এখন ১৬০ টাকায় উঠেছে। হঠাৎ করে লাফিয়ে লাফিয়ে মূল্যবৃদ্ধির কারণ সরবরাহ–সংকট।

সাধারণ ছুটির শুরুর দিকে, অর্থাৎ মার্চ মাসের শেষ ও এপ্রিলের শুরুর দিকে খামারের মালিকেরা চাহিদা না থাকায় মুরগি ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছিলেন। হ্যাচারির মালিকেরা এক দিনের বাচ্চা বিক্রি করতে না পেরে মেরে ফেলেছিলেন। এখন তৈরি হয়েছে ঘাটতি।

গাজীপুর এলাকার খামার পর্যায়েই ব্রয়লার মুরগির কেজিপ্রতি দর ১৩০ টাকা। এটা হাতবদল হয়ে ভোক্তার কাছে পৌঁছাচ্ছে ১৬০ টাকা কেজি দরে।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে বাজারে এখন ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা। এক মাসে দাম বেড়েছে ৪৩ শতাংশ।

পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের সভাপতি ও গাজীপুরের শ্রীপুরের খামারি খন্দকার মো. মহসিন প্রথম আলোকে বলেন, খামারিরা লোকসান ও মুরগি বিক্রি করতে না পারায় নতুন বাচ্চা ওঠাতে পারেননি। সে কারণেই এখন ঘাটতি। এটা সাময়িক।

বাজারে কক মুরগির দাম কেজিপ্রতি ২২০ টাকা। এ ক্ষেত্রে দামের তেমন কোনো হেরফের হয়নি। আর দেশি মুরগির কেজিপ্রতি দর ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা। এ দামটি অনেক দিন ধরেই চড়া।

গরুর মাংসের দামও আর কমেনি। বাজারে এখন গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৫৭০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ব্যবসায়ীরা পাইকারি পর্যায়ে গরমমসলার সর্বোচ্চ দর নির্ধারণ করে দিয়েছে। পাইকারি পর্যায়ে জিরা (ভারত) প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৪০ টাকা, দারুচিনি (চীন) কেজি ৩১০ থেকে ৩৩০ টাকা, দারুচিনি (ভিয়েতনাম) কেজি ৩৫০ থেকে ৩৭০ টাকা, লবঙ্গ কেজি ৬৮০ থেকে ৭২০ টাকা, এলাচি কেজি ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা, গোলমরিচ (সাদা) ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকা এবং গোলমরিচ (কালো) ৩৬০ থেকে ৩৮০ টাকা দরে কেনাবেচা হবে।

>

সাধারণ ছুটির শুরুর দিকে মুরগির দাম তলানিতে নেমেছিল
ক্রেতা না থাকায় বাচ্চা ফেলে দিতে হয়

ঢাকার কাজীপাড়া, পীরেরবাগ ও মিরপুর-১ নম্বর সেকশন বাজার এবং দুটি জনপ্রিয় অনলাইন পণ্য বিক্রির প্রতিষ্ঠানে দেখা গেছে, বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামেই মসলাজাতীয় পণ্য বিক্রি হচ্ছে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ পাইকারি গরমমসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘যে দরটি নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটা আগে থেকেই কার্যকর। আগে থেকেই আমরা এ দামে বিক্রি করছি।’

খুচরা বাজারে দাম এত বেশি কেন, জানতে চাইলে এনায়েত উল্লাহ বলেন, খুচরা দোকানে মসলা বিক্রি হয় অল্প অল্প করে। পাইকারি বাজার থেকে কিনে নিতেও পরিবহন খরচ আছে।

পেঁয়াজের দাম আরও কিছুটা কমেছে। কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা দরে। দেশি রসুনের কেজি ১০০ থেকে ১১০ টাকা। আর চীনা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজিতে। এক মাস আগে যে আদা ৩০০ টাকা কেজির বেশি ছিল, সেটা ১৫০ থেকে ১৬০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে।

বাজারে বেশির ভাগ পণ্যের দাম কমতির দিকে। কিন্তু সমস্যা হলো চাহিদা ও মানুষের আয় কমে গেছে। কাজীপাড়া বাজারে কেনাকাটা করতে যাওয়া শামসুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্যবসা-বাণিজ্য নেই। বেশির ভাগ মানুষের হাতে টাকা নেই। অনেকে বোনাস পাবেন না। এ সময় দাম কমলেও কিনবে কতজন।’