আট জেলায় ৬০ শতাংশ মোবাইল টাওয়ার আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত: অ্যামটব

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ঘূর্ণিঝড় আম্পানে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট, ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর ও রাজশাহীর প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ মোবাইল সাইট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (অ্যামটব)।

এদিকে তিন মোবাইল অপারেটর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের পরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে নেটওয়ার্ক চালু করতে তারা কাজ করছে। এ জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বিদ্যুৎসেবা।
আজ বিকেল পাঁচটার দিকে অ্যামটবের মহাসচিব এস এম ফরহাদ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আম্পানের আঘাতে দেশের টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক অবকাঠামোয় অনেক ক্ষতি হয়েছে। যে কারণে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে টেলিযোগাযোগসেবা ব্যাহত হয়েছে।’

অ্যামটব জানায়, ঘূর্ণিঝড়টি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলে আঘাত হানার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে অপারেটররা ব্যাটারির সাহায্যে মোবাইল টাওয়ার চালু রাখে। তবে ব্যাটারির ক্ষমতা শেষ হয়ে গেলে অপারেটররা সেবা চালিয়ে যাওয়ার জন্য জেনারেটরের সাহায্য নেয়।

অ্যামটবের হিসাবে, আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত টাওয়ারের প্রায় ৩০ শতাংশ বা ১৩ হাজার সাইট জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ পাচ্ছিল না। বর্তমানে দেশে প্রায় ৩৫ হাজার মোবাইল টাওয়ার রয়েছে।
অ্যামটব বলেছে, ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎ সেবা চালু করতে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ নিরলস পরিশ্রম করছে। তবে যেহেতু ক্ষতিগ্রস্ত টাওয়ারগুলো বেশির ভাগ পল্লি অঞ্চলে অবস্থিত, তাই সেখানে সেবা চালু করতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিশেষ সহায়তা প্রয়োজন।

অ্যামটব এ-ও বলছে যে সারা দেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থার কারণে বিভিন্ন স্থানে মোবাইল সেবাদানকারী ও তাদের অংশীদার সংস্থার কর্মীদের চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা জরুরি।

এদিকে গ্রাহকসংখ্যায় সবচেয়ে বড় অপারেটর গ্রামীণফোন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ফাইবার অপটিক কেবল ও বৈদ্যুতিক সংযোগে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে। তারা সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতির একটি মূল্যায়ন করছে।
আজ বিকেল সাড়ে চারটায় পাঠানো এক বিবৃতিতে গ্রামীণফোনের হেড অব এক্সটার্নাল কমিউনিকেশনস মুহাম্মদ হাসান বলেন, ‘আমাদের নেটওয়ার্কের দুই-তৃতীয়াংশ ১২ ঘণ্টা ধরে বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ-সংযোগ ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে।’

বিকেল সাড়ে পাঁচটায় পাঠানো এক বিবৃতিতে দ্বিতীয় শীর্ষ অপারেটর রবি আজিয়াটার চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি কর্মকর্তা সাহেদ আলম বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উপকূলবর্তী ও তৎসংলগ্ন এলাকায় আমাদের প্রায় আড়াই হাজার সাইট বিদ্যুৎ-সংযোগবিছিন্ন রয়েছে। সেগুলো চালু করতে রবির কর্মীরা কাজ করছেন।’ তিনি বলেন, জরুরি সেবা হিসেবে উপকূলবর্তী এলাকায় দ্রুততম সময়ে মোবাইল সেবা চালু করার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ, বিশেষ করে পল্লী বিদ্যুতের ঐকান্তিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

বাংলালিংকের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশন্স আংকিত সুরেকা বলেন, জেনারেটরের সক্ষমতা সর্বোচ্চ ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা। ঝড়-পরবর্তী সময়ে যত দ্রুত বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে, তত দ্রুত সাইট চালু করা যাবে। আজ বেলা তিনটা পর্যন্ত বাংলালিংকের প্রায় তিন হাজার সাইটে বিদ্যুৎ ছিল না বলে জানান তিনি।