করোনায় বিশ্বের পণ্য বাণিজ্য ১৩-৩২% কমতে পারে: ডব্লিউটিও

করোনার প্রভাবে বিশ্বে বাণিজ্য কমছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) প্রাক্কলন অনুসারে, এ বছর বিশ্বের পণ্য বাণিজ্য ১৩ থেকে ৩২ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে।

পরিস্থিতির যদি আশাব্যঞ্জক উন্নতি হয়, তা হলে ১৩ শতাংশ কমবে। কিন্তু মহামারি নিয়ন্ত্রণে আনা না গেলে তা ৩২ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে বলে জানিয়েছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা।

ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক রবার্তো আজেভেদো এক ভিডিও বার্তায় বলেন, 'প্রতি বছর বসন্তে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অর্থনীতিবিদেরা বাণিজ্যের পূর্বাভাস দিয়ে থাকেন। এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। করোনায় সারা পৃথিবী আক্রান্ত। আমরা আশঙ্কা করছি, বিশ্বের সব জায়গায়, অর্থনীতির সব ক্ষেত্রে বাণিজ্য কমবে।'

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উত্তর আমেরিকা ও এশিয়ার রপ্তানি সবচেয়ে বেশি কমবে বলে ধারণা করছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা।

অর্থনীতির সব ক্ষেত্রেই বাণিজ্য কমবে, তবে ইলেকট্রনিক পণ্য ও অটোমেশনের মতো জটিল সরবরাহব্যবস্থা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছে সংস্থাটি। তারা বলছে, যোগাযোগ ও যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সেবা বাণিজ্যে আঘাত লাগবে একদম শুরুতেই।করোনা শুরু হওয়ার আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধ চলছিল। এ ছাড়া আরও কিছু দেশের সঙ্গে বাণিজ্য বিরোধে জড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে ২০১৯ সালে বিশ্ব পণ্য বাণিজ্য এমনিতেই শূন্য দশমিক ১ শতাংশ কমেছে। ২০১৯ সালে বিশ্বের পণ্য রপ্তানি বাণিজ্যের মূল্যমান ডলারের সাপেক্ষে ৩ শতাংশ কমেছে। এই সময়ে বাণিজ্যিক সেবা রপ্তানির মূল্য ২ শতাংশ বেড়েছে।

এখনকার অবস্থা ১৯৩০-এর দশকের মহামারি ও ২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের মতো নয় বলে মনে করেন রবার্তো আজেভেদো। তাঁর মতে, বিশ্বজুড়ে ব্যাংকগুলোতে যে পুঁজির ঘাটতি আছে, তা নয়। অর্থনীতিও মোটামুটি সন্তোষজনক জায়গায় আছে। কিন্তু এই মহামারি অর্থনীতির ইঞ্জিনে তেলের সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতির ইঞ্জিনে তেলের সরবরাহ পুনরায় সচল করা গেলে বৈশ্বিক অর্থনীতি দ্রুত আগের জায়গায় ফিরে যাবে। 

তবে সব কিছুই অনিশ্চিত বলে মনে করেন রবার্তো আজেভেদো। মহামারি নিয়ন্ত্রণে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং সেগুলো কতটা কার্যকর হয়, তার ওপর সব নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।