গভর্নর ফজলে কবিরকে রাখতে আইন সংশোধন করছে সরকার

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। ছবি: সংগৃহীত

বিদ্যমান আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের মেয়াদ বৃদ্ধির আর কোনো সুযোগ নেই। কারণ, তাঁর বয়স ৬৫ বছর ছুঁই ছুঁই। বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার অনুযায়ী, ৬৫ বছর বয়স হয়ে গেলে আর কেউ গভর্নর থাকতে পারেন না। তারপরও সরকার তাঁকে আরেক দফায় গভর্নর পদে রাখতে চাইছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শুধু ফজলে কবিরকে আবার নিয়োগ দিতেই সংশোধন করা হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, যা দেশের ইতিহাসে প্রথম ঘটনা। তিনি দুই বছরের জন্য নিয়োগ পেতে পারেন। এখন যেহেতু জাতীয় সংসদের কোনো অধিবেশন নেই, তাই রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে এ অর্ডার সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আসলে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট আর্থিক খাতের ক্ষতিগুলো মোকাবিলায় যতগুলো প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে, সেগুলোর বেশির ভাগই বাস্তবায়নের দায়িত্ব ব্যাংক খাতের। গভর্নর হিসেবে নতুন কেউ এলে বুঝতে বুঝতেই কয়েক মাস লেগে যাবে। মূল কারণ এটিই।’

রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ তৎকালীন গভর্নর আতিউর রহমান পদত্যাগ করলে তাড়াহুড়ো করে পরদিনই ফজলে কবিরকে চার বছরের জন্য গভর্নর নিয়োগ দেয় সরকার। তখন তিনি বিদেশে ছিলেন এবং ফিরে এসে গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেন ২০ মার্চ। সে হিসেবে তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল এ বছরের ১৯ মার্চ। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩৪ দিন আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি গভর্নর হিসেবে ফজলে কবিরের মেয়াদ ৩ মাস ১৩ দিনের জন্য বাড়িয়ে দেয় সরকার। এতে বলা হয়, ৬৫ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত তিনি গভর্নর থাকবেন। ফজলে কবিরের বয়স ৬৫ বছর পূর্ণ হবে আগামী ৩ জুলাই।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের বয়সের সীমারেখা তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে একটি সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেছে। অর্থমন্ত্রী গত সোমবার তা অনুমোদন করেছেন। পরদিন ১৯ মে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ তা উপস্থাপন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে।

উদ্যোগটিকে কীভাবে দেখছেন—জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা আকবর আলি খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন গভর্নরকে মাথায় রেখে আইন বদলানোর পরিবর্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে গভর্নরের বয়সসীমা কত হওয়া উচিত। তবে এটাও ঠিক যে অনেক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরেরই সর্বোচ্চ কোনো বয়সসীমা নেই।’ এর বাইরে কোনো মন্তব্য করতে চাননি আকবর আলি খান।