এশিয়ার শেয়ারবাজারে তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ চাঙাভাব

এশিয়ার শেয়ারবাজার ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। আজ সোমবার এই মহাদেশের বড় শেয়ারবাজারগুলোতে, অর্থাৎ পূর্ব এশিয়ায় সূচকগুলো গত তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, কয়েকটি কারণে এশিয়ার শেয়ারবাজারে চাঙাভাব দেখা দিয়েছে। প্রথমত, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীনের সঙ্গে বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু না করায় এবং করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও হংকং ইস্যুতে উত্তেজনা উসকে না দিয়ে, তা এড়িয়ে চলায় শেয়ারবাজারে প্রভাব পড়েছে।

দ্বিতীয়ত, চীনা অর্থনীতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ দেখা দেওয়ায় এবং এই অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হওয়ায় শেয়ারবাজার নিয়েও খানিক আশাবাদ তৈরি হয়েছে। তৃতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে দাঙ্গা প্রশমিত হয়ে আসাতেও এশিয়ার শেয়ারবাজারে স্বস্তি ফিরেছে।

আজ হংকংয়ের হেংসেং সূচক ৩ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ২৩ হাজার ৭৫০ পয়েন্টে উঠেছে। চীনের সাংহাই সমন্বিত সূচক ২ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ৯১১ পয়েন্টে, জাপানের টোকিও স্টক এক্সচেঞ্জের নিক্কি ২২৫ সূচক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২২ হাজার ৬২ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে।

মিঝুহো ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সতর্কভাবে চলার ফলে এর প্রভাব পড়েছে শেয়ারবাজারে। তবে চীন-মার্কিন উত্তেজনা আবারও শুরু হতে পারে বলেও সতর্ক করে দিয়েছে ব্যাংকটি।

দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পি সূচক ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ৬৩ পয়েন্টে উঠেছে। ভারতের সেনসেক্স সূচক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩৩ হাজার ৩৮৬ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। সিঙ্গাপুরের প্রধান সূচক ২ শতাংশের সামান্য বেশি ও থাইল্যান্ডের শেয়ার সূচক ১ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার এসঅ্যান্ডপি-এএসএক্স ২০০ সূচক প্রায় ১ শতাংশ বেড়ে ৫ হাজার ৮০৫ পয়েন্টে উঠেছে।

চীনের বিজনেস ম্যাগাজিন কাইক্সিন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত মাসে সে দেশের উৎপাদন খাতে বিগত চার মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পণ্য উৎপাদিত হয়েছে। তবে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়ায় চীনের পণ্য রপ্তানি আদেশ কমেছে বলেও জানায় ম্যাগাজিনটি। এদিকে আজ এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সদ্য সমাপ্ত মে মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার রপ্তানি আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে। বিশ্বে এখন গত শতকের ত্রিশের দশকের পর সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। চীন-মার্কিন উত্তেজনার কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে বিনিয়োগকারীরা আশাবাদী হতে পারছেন না। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিলসহ কিছু দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এখনো বাড়তে থাকলেও ইউরোপের অনেক দেশে ইতিমধ্যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে শেয়ারবাজারগুলোতে আশার সঞ্চার হচ্ছে এবং সূচক বাড়ছে।

এদিকে এ লেখা তৈরি করা পর্যন্ত সময়ের ব্যবধানের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের আজকের শেয়ারবাজারের লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে এর আগে গত সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ওয়ালস্ট্রিটের প্রধান সূচক এসঅ্যান্ডপি সূচক ৩ শতাংশ বেড়েছে। ডাউ জোন্স শিল্পসূচকও সামান্য বৃদ্ধি পায় ওই দিন। এ ছাড়া নাসড্যাক সমন্বিত সূচক ১ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। সূত্র: এপি, বিজনেসলাইন