করোনাভাইরাস বিশ্ব অর্থনীতির জন্য এক 'ধ্বংসাত্মক আঘাত'

ডেভিড মালপাস। ছবি: রয়টার্স
ডেভিড মালপাস। ছবি: রয়টার্স

বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাস মনে করেন , করোনাভাইরাস মহামারী বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি 'বিধ্বংসী আঘাত'। মালপাস হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যে কয়েকশ কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা এই মহামারী দ্বারা প্রভাবিত হবে। তিনি বলেন, এর অর্থনৈতিক পরিণতি এক দশক ধরে চলতে পারে।

এর আগে গত মে মাসে মালপাস সতর্ক করেছিলেন যে, করোনাভাইরাস ৬ কোটি মানুষকে 'চরম দারিদ্র্যের' মধ্যে ঠেলে দিতে পারে।

বিশ্বব্যাংকের 'চরম দারিদ্র্য' বলতে ওই মানুষকে বলা হয়েছে, যিনি প্রতি দিন ১ দশমিক ৯০ ডলারেরের (১৬১ টাকা) চেয়ে কম অর্থে জীবনযাপন করেন।

গত শুক্রবার বিবিসি রেডিওতে দেওয়া একটি সাক্ষাত্কারে মালপাস বলেন, ৬ কোটির বেশি মানুষকে দিন প্রতি ১ ডলারের কম অর্থ দিয়ে জীবীকা নির্বাহ করতে হতে পারে। মালপাস আরও বলেন, 'এটি (করোনাভাইরাস) অর্থনীতির জন্য এক বিধ্বংসী আঘাত। করোনাভাইরাস ও এটি ঠেকাতে নেওয়া লকডাউন কোটি শ শ কোটি মানুষের জীবন ও জীবীকায় প্রভাব ফেলেছে। যা উদ্বেগজনক। দুটোরই প্রত্যক্ষ পরিণতি হলো আয় হারানো, এছাড়া স্বাস্থ্যে পরিণতি, সামাজিক পরিণতি সত্যিই কঠোর।'

মালপাস বলেন, 'আমরা দেখতে পাচ্ছি যে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজার তুলনামূলকভাবে বেশি প্রভাবিত হয়েছে। এ ছাড়া দরিদ্র দেশগুলির মানুষ কেবল বেকারই নয়, এমনকি অনানুষ্ঠানিক ক্ষেত্রেও কোনো কাজ পেতে অক্ষম হয়ে পড়ছে। আর যা আগামী এক দশকের পরিণতি হতে চলেছে।'

বিশ্বব্যাংক ও তার সহযোগীরা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলোকে সহায়তা দিচ্ছে, তবে তা যথেষ্ট নয় বলেই মনে করছেন মালপাল। ব্যাংক ও পেনশন তহবিলের মতো বাণিজ্যিক ঋণদাতাকে দরিদ্র দেশগুলোর জন্য ঋণ ও ত্রাণ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। মালপাস চান যে, তারা তাদের ঋণের শর্তাদি আরও স্পষ্ট করুক, ফলে অন্য বিনিয়োগকারীরা দরিদ্র দেশগুলোকে আত্নবিশ্বাসের সঙ্গে সাহায্য করতে পারে।

তবে সর্বপরী এই বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে মনে করেন মালপাস। তিনি বলেন, 'আমি মনে করি যে উত্তরণের উপায় খুঁজে পাওয়া সম্ভব, তবে এর জন্য দেশ এবং সরকারগুলোকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। এবং আমরা সেই প্রচেষ্টাটিকে উত্সাহিত করতে পারি। আমি একজন আশাবাদী মানুষ। মানব প্রকৃতি শক্তিশালী এবং উদ্ভাবনই আসল বলে মনে করি। বিশ্ব দ্রুতগতিতে চলছে এবং সংযোগ ... এর চেয়ে বেশি কখনও হয়নি। যা ভবিষ্যতের জন্য আশার আলো দেখায়।'