ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর উন্নয়নে ১১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দাবি

বাজেটে ক্ষুদ্র জাতিগোাষ্ঠীর মানুষের জন্য যে বরাদ্দ থাকে এর সামান্যই তাদের কাছে পৌঁছায় বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনেরা।

তাঁরা বলেছেন, কোভিড–১৯ এর এই মহামারিতে এসব জাতির মানুষের অবস্থা আরও সঙ্গীন হয়ে গেছে। তাদের জন্য ১১ হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ দরকার। এসব জাতির দরিদ্র মানুষের জন্য রেশন চালু করার দাবিও উঠেছে।

এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এসব কথা উঠে আসে। রোববার সকালে অনুষ্ঠিত এ সভারআয়োজন করে বেসরকারি সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি)। এতে সহযোগিতা করে গবেষণা প্রতিষ্ঠান এইচডিআরসি।

'গ্রামীণ নারী, আদিবাসী জনগোষ্ঠী ও ভূমি সংস্কারের জন্য জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ' শীর্ষক এ আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত। তিনি বলেন, মাথাপিছু গড় বাজেট বরাদ্দের তুলনায় দেশের সব অঞ্চলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য ২৬ থেকে২৭ শতাংশ কম এবং সমতলের আদিবাসীদের জন্য ৪৬ থেকে ৪৭ শতাংশ কম বরাদ্দ দেওয়া হয়। বারকাত বলেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো প্রকল্প নেই। যে নামেই বরাদ্দ দেয়া হোক তার সামান্য অংশই তাদেরকাছে পৌঁছায়। প্রত্যেক আদিবাসীর জন্য জাতীয় মাথাপিছু গড় বরাদ্দের তিনগুণ বরাদ্দ অর্থাৎ ১১ হাজার ১৪৯ কোটিটাকা আসন্ন বাজেটে বরাদ্দের প্রস্তাব করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বেসরকারি সংগঠন নিজেরা করি'র সমন্বয়কারী খুশী কবির। সূচনা বক্তব্যে এএলআরডিরনির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী ৫০ বছরে দেশের উন্নয়নে যাদের অবদান সবচেয়ে বেশি সেইশ্রমজীবী, কৃষিজীবী মানুষের কোনো প্রতিফলন নেই জাতীয় পরিকল্পনা, বাজেট বরাদ্দসহ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। এরজন্য দৃষ্টিভঙ্গির পরির্বতন জরুরি।

প্যানেল আলোচনায় চাকমা সার্কেলের রাণী য়েন য়েন বলেন, আগামী অর্থবছরের বাজেটে কোভিড ও কোভিড পরবর্তীপরিস্থিতিকে বিবেচনায় এনে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন। হতদরিদ্র ওপ্রান্তিক মানুষের জন্য অন্তত পাঁচ থেকে ছয় মাসের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দুর্গম অঞ্চলগুলোরশিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য বর্ধিত হারে বাজেট বরাদ্দের দাবি জানান তিনি।

সভায় সাংবাদিক আবু সাঈদ খান বলেন, প্রান্তিক মানুষের জন্য বিদ্যমান রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা বলয়কে দ্বিগুণ করতে হবে।

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সঞ্জীব দ্রং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা প্রকল্পপরিচালনায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীবান্ধব প্রতিনিধি অন্তর্ভূক্ত করার দাবি জানান।

আজ আলোচনায় অংশ নেন শাহ-ই- মোবিন জিন্নাহ, সিরাজুল ইসলাম, শামসুল ইসলাম, থিওফিল নকরেক প্রমুখ।