আপাতত বিলাসপণ্য কেনা থেকে দূরে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ

রাজস্ব আদায় বাড়াতে বিলাসপণ্যের ওপর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের চোখ পড়েছে। তাতে প্রসাধনী ক্রয়, গাড়ির ব্যবস্থাপনা, লঞ্চের এসি কেবিনে চলাচল, চার্টার্ড বিমান ও হেলিকপ্টার ভাড়ার খরচ বেড়ে যাবে। ফলে করোনার এই দুর্যোগের সময় আপাতত বিলাসপণ্য কেনা থেকে দূরে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ভ্রমণের জন্য লঞ্চ বেশ জনপ্রিয়। তবে একটু আরামের জন্য শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কেবিনে ভ্রমণ করলে আগের চেয়ে বেশি অর্থ খরচ করতে হবে। কারণ, আগামী অর্থবছরের বাজেটে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত লঞ্চ সার্ভিসের ক্ষেত্রে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করেছেন অর্থমন্ত্রী। 

এদিকে বাজেটে গাড়ির মালিকদের ওপর বার্ষিক করের পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। এমনকি বিআরটিএর থেকে কার, জিপের রেজিস্ট্রেশনসহ অন্যান্য সেবার ওপরও সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। ব্যক্তিপর্যায়ে ১৫০০ সিসির গাড়িই বেশি ব্যবহৃত হয়। সেই গাড়ির মালিকদের বার্ষিক কর ১৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। তাতে বছরে গাড়ির পেছনে ১০ হাজার টাকা বাড়তি কর দিতে হবে। 

এ ছাড়া ১৫০০ থেকে ২০০০ সিসি পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকা, ২০০০ সিসি থেকে ২৫০০ সিসি পর্যন্ত ৭৫ হাজার টাকা, ২৫০০ থেকে ৩০০০ সিসি পর্যন্ত ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা, ৩০০০ সিসি থেকে ৩৫০০ সিসি পর্যন্ত ২ লাখ টাকা এবং মাইক্রোবাসে ৩০ হাজার টাকা বার্ষিক কর দিতে হবে।

বার্ষিক কর বাড়ানোর কারণে গাড়ির বিক্রি কিছুটা কমতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সাবেক সভাপতি আব্দুল হামিদ শরীফ। তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে ৯ লাখ প্রাইভেট কার বা জিপ রয়েছে। প্রতি গাড়িতে ন্যূনতম ১০ হাজার টাকা কর হলেও ৯০০ কোটি টাকা রাজস্ব পাবে সরকার। মূলত সহজ পথে রাজস্ব আদায় করতেই এনবিআর পথটি বেছে নিয়েছে। 

বারভিডার সাবেক এই সভাপতি বলেন, বর্তমানে প্রতিবছর একেকটি গাড়ির পেছনে কমপক্ষে ২২ হাজার টাকা বার্ষিক কর, রেজিস্ট্রেশন ফি ইত্যাদি দিতে হয়। সেটি দিতেই সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। ফলে সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। তা ছাড়া আমদানির সময় বিপুল পরিমাণ অগ্রিম কর দেন গাড়ি ব্যবসায়ীরা। তারপর আবার কর আদায় দ্বৈত কর ছাড়া কিছু নয়। 

করোনার এই সময়ে চার্টার্ড বিমানে করে বিদেশ যাওয়ার বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। সেই খরচ আরেকটু বাড়িয়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি চার্টার্ড বিমান ও হেলিকপ্টার ভাড়ার ওপর সম্পূরক শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করেছেন। ফলে পুরো বিমান বা হেলিকপ্টার ভাড়া করে দেশের কোথাও কিংবা বিদেশে যাওয়ার খরচ বাড়বে।