পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ ধরতে আসা জেলেদের ফিরিয়ে দিল উত্তাল সাগর

বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা গত রোববার উঠে যাওয়ার পরদিনই পশ্চিমবঙ্গের মৎস্যজীবীরা ট্রলার নিয়ে সমুদ্রের দিকে ছোটেন। তবে পশ্চিমি ঝড়ের দাপটে উপকূলে ফিরে এসেছে প্রায় তিন হাজার ট্রলার। ইলিশ মৌসুম শুরুর প্রথমেই জোর ধাক্কা খেলেন এই রাজ্যের মৎস্যজীবীরা।

গত সোমবার থেকে শুরু হয়েছে সাগরে ইলিশ ধরার মৌসুম। আসন্ন দুর্গাপূজা পর্যন্ত তা চলবে। পশ্চিমবঙ্গে ছোট-বড় মিলিয়ে নয় হাজার জলযান ইলিশ ধরার সঙ্গে যুক্ত। এর মধ্যে বড় ট্রলার ছয় হাজার।

মৎস্য ব্যবসায়ী ও পশ্চিমবঙ্গের হিলসা ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অতুল দাস গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিবছর পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্রে ৩০ থেকে ৩২ হাজার টন ইলিশ পাওয়া যায়। গত বছর আবহাওয়া খারাপ থাকায় ১০ থেকে ১২ হাজার টন ইলিশ পাওয়া গিয়েছিল। করোনার কারণে লকডাউন থাকায় এবং আম্পানের তাণ্ডবে জেলেরা আর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাননি। এ কারণে এবার প্রচুর মাছ জন্মেছে সমুদ্রে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরের কয়েক হাজার জেলে নতুন আশা নিয়ে সোমবার পাড়ি জমান সমুদ্রে। জেলেদের আশা ছিল লকডাউন ও আম্পানের ক্ষতি তাঁরা এবার পুষিয়ে নেবেন।

সমুদ্রের বৈরী আবহাওয়া ও পশ্চিমি ঝোড়ো হাওয়ার কারণে মাছ ধরতে না পেরে ফিরে এসেছেন জেলেরা। আশ্রয় নিয়েছেন সমুদ্রের উপকূলীয় নদী, ফাঁড়ি, জঙ্গল এবং বিভিন্ন দ্বীপে। এই জেলেরা মূলত দিঘা, শংকরপুর, মন্দারমণি, তাজপুর, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জ, কাকদ্বীপ, রায়দীঘি, ডায়মন্ড হারবারসহ সমুদ্রের উপকূলের বাসিন্দা। অতুল দাস বলেন, বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ থাকলেও গত বছর বাংলাদেশ সরকার পূজার সময় পশ্চিমবঙ্গের জন্য ৫০০ টন ইলিশ রপ্তানি করে।

হিলসা ফিশ এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার মকসুদ প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ থেকে আমরা ইলিশ পাচ্ছি না। ২০১২ সালের ৬ জুলাই থেকে রপ্তানি বন্ধ। আমরা মিয়ানমারের ইরাবতী নদীর ইলিশ আমদানি করছি। তবে সেই ইলিশ বাংলাদেশের বা পশ্চিমবঙ্গের ইলিশের মতো স্বাদের নয়।’

অতুল দাস বলেন, ‘সমুদ্র থেকে ইতিমধ্যে ইলিশ বাংলাদেশের পদ্মা, মেঘনায় ঢুকতে শুরু করেছে। সেখানে ইতিমধ্যে ইলিশ ওঠাও শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল হলে আমরারাও এখানের সমুদ্রসহ উপকূলবর্তী নদী থেকে ইলিশ পাব।’