পুরো সময় রেস্তোরাঁ খোলা রাখাসহ ৫ দফা দাবি

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দেশের রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত রেস্তোরাঁ খোলা রাখতে চায়। তারা বলছে, এখন এ ক্ষেত্রে সরকারি কোনো বিধিনিষেধ নেই। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন রেস্তোরাঁ খোলা রাখতে দিচ্ছে না। আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে মালিক সমিতির পক্ষ থেকে এ দাবি করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সমিতির নেতারা সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন।

অনলাইনে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির মহাসচিব আর কে সরকার। তিনি বলেন, দেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই রেস্তোরাঁগুলোতে ক্রেতার সংখ্যা কমতে থাকে। মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে ক্রেতা একেবারেই শূন্যে নেমে আসে। তিনি বলেন, রেস্তোরাঁর মালিকেরা বড় সংকটে পড়েছেন। শ্রমিকেরা কষ্টে রয়েছেন।

আর কে সরকার যে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন সেগুলো হলো:
১. সাধারণ ছুটি নিয়ে গত ২৮ মে জারি করা প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে খাদ্য, খাবার ও সেবার সাথে ‘হোটেল-রেস্তোরাঁ’ খাত স্পষ্ট করা।
২. করোনাকালে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির যে বিল জমবে তা ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে প্রতি মাসে ১০ শতাংশ হারে আদায় করা। এখন বকেয়া বিলের জন্য সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করা।
৩. পোশাক খাতের মতো স্বল্প সুদে রেস্তোরাঁ মালিকদের ঋণ সহায়তা দেওয়া।
৪. সরকার নিম্ন আয়ের মানুষকে যে সহায়তা দিচ্ছে তার আওতায় রেস্তোরাঁ শ্রমিকদেরও সহায়তা দেওয়া।
৫. বাজেটে করোনা প্রকোপকাল ও প্রভাবকালীন সময়ের জন্য হোটেল-রেস্তোরাঁ ও দই-মিষ্টি খাতকে ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ দেওয়া।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশে রেস্তোরাঁর সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। এতে কাজ করেন ২০ থেকে ২২ লাখ শ্রমিক। শ্রমিকেরা এখন গ্রামের ফিরে অনেকটা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন খন্দকার বলেন, ‘রেস্তোরাঁয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেখানে হাত ধোয়ার সুব্যবস্থা রয়েছে। আমরা এখন গরম পানি দিচ্ছি। সামাজিক দূরত্ব মানার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।’

রুহুল আমিন খন্দকার আরও বলেন, সাধারণত রেস্তোরাঁ সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকে। এখন যেহেতু দোকান সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখা হচ্ছে, তার সঙ্গে রেস্তোরাঁগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।

সোহেল তালুকদার নামের এক রেস্তোরাঁ মালিক বলেন, ‘পুলিশ সদস্যদের কেউ কেউ রেস্তোরাঁয় গিয়ে খোলা রাখার কারণ জানতে চাইলে আমরা প্রজ্ঞাপন দেখাই। তারা বলেন, প্রজ্ঞাপনে রেস্টুরেন্ট শব্দটি নেই।’ তিনি অভিযোগ করেন, ঋণের জন্য বেসরকারি ব্যাংকে গেলে তাঁকে ব্যক্তিগত ঋণের আবেদন করতে বলা হয়। আর সরকারি ব্যাংকে গিয়ে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

যুগ্ম মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, রেস্তোরাঁগুলো ব্যাংক থেকে কখনো ঋণ পায়নি। এখন ব্যাংক গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণের কথা বলা হচ্ছে, তা রেস্তোরাঁ মালিকেরা পাচ্ছেন না।

সংবাদ সম্মেলনে সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন মৃধা, যুগ্ম মহাসচিব ইমরান হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফিরোজ আলম, কোষাধ্যক্ষ তৌফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি সৈয়দ হাসান নুর ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।