এশিয়ার শেয়ারবাজারে আবার কেন পতন

ছবি রয়টার্স
ছবি রয়টার্স

বিশ্বজুড়ে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা, নিয়ন্ত্রণে আবার কিছু বিধিনিষেধ ব্যবস্থা আরোপ হওয়ায় এশিয়ার পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আজ মঙ্গলবার লেনদেনের শুরু থেকেই সূচক কমছে গুরুত্বপূর্ণ পুঁজিবাজারগুলোতে।

করোনা নিয়ে আশঙ্কা ছাড়াও আবার উসকে ওঠা চীন-মার্কিন উত্তেজনা এবং ওপেক প্লাসের তেলের উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত কিছুটা শিথিল করার ঘোষণা প্রভাব ফেলেছে পুঁজিবাজারে। বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

আঞ্চলিক ব্যারোমিটার হিসাবে বিবেচিত সিঙ্গাপুরের অর্থনীতি দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক ৪১ শতাংশ কমেছে —এই খবরে বিনিয়োগকারীদের কিছুটা অস্থির করে তুলেছে।


মার্চজুড়ে ব্যাপক দরপতনের পর লকডাউনে থাকা অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে বিভিন্ন সরকারের নেওয়া প্রণোদনা পদক্ষেপে কিছুটা শান্ত হয় পুঁজিবাজার। এরপর সংক্রমণ কিছুটা কমে আসায় বিভিন্ন দেশ লকডাউন শিথিল করে, যা ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। তবে বিশ্বজুড়ে আবার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং অনেক অঞ্চল লকডাউন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হওয়ায় আবার নেতিবাচক অবস্থা ফিরে এসেছে।


আজ জাপানের নিকেই সূচক ও চীনের সাংহাই কম্পোজিট সূচক কমেছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ। হংকংয়ের হ্যানসেং সূচক কমেছে ১ দশমিক ২ শতাংশ। সূচক কমেছে, সিডনি, দক্ষিণ কোরিয়ার, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুরের পুঁজিবাজারে। গতকাল সোমবার এশিয়ার এই শেয়ারবাজারগুলোর বেশির ভাগই ঊর্ধ্বমুখী ছিল।
আবার বিধিনিষেধ যেসব অঞ্চলে
যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ধনী অঞ্চল ক্যালিফোর্নিয়ায় সব ইনডোর রেস্তোরাঁ, বার ও সিনেমা থিয়েটার আবার বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেসসহ অনেক শহরে গির্জা, ব্যায়ামাগার, শপিংমল, হেয়ার সেলুন, অফিস, দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে টেক্সাস, অ্যারিজোনা, ফ্লোরিডায় একই রকম বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।


নতুন করে সংক্রমণ বাড়ায় হংকং গতকাল সোমবার নতুন পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ইতিমধ্যে একটি নতুন লকডাউনের অধীনে রয়েছে। সিডনিতেও নতুন প্রাদুর্ভাবের লক্ষণ রয়েছে।


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস ঘেব্রেয়েসাস সতর্ক করেছেন, অদূর ভবিষ্যতের 'পুরোনো সাধারণের' কোনো প্রত্যাবর্তন হবে না। তিনি যোগ করেন, সরকারগুলো একটি বিস্তৃত কৌশল অবলম্বন না করলে পরিস্থিতি 'আরও খারাপের থেকে আরও খারাপের' দিকে যাবে।


চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন কিছুটা বাড়ছে। মহামারি নিয়ে বরাবরই চীনের ওপর দোষারোপ আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে হংকং ও হুয়াওয়ে ইস্যু নিয়ে এই দুই পরাশক্তির মধ্যে উত্তেজনা আবার উসকে উঠছে। এ ছাড়া তেল উৎপাদক ও রপ্তানিকারকদের জোট ওপেক ও রাশিয়াসহ ওপেক প্লাস বলছে, আগামী মাস থেকে দৈনিক ৭৭ লাখ ব্যারেল তেলের উৎপাদন কমানো হবে—এমন আলোচনা করছে তারা। অর্থাৎ, ২০ লাখ ব্যারেল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। এপ্রিল মাসে ৯৭ লাখ ব্যারেল তেলের সরবরাহ কমাতে সম্মত হয়েছিল তারা।