কৃষিঋণের লক্ষ্য ২৬ হাজার কোটি টাকা

চলতি অর্থবছরে কৃষি খাতে ২৬ হাজার ২৯২ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৯ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো ১১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ১৫ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

আর এখন সব কৃষিঋণের সুদহার ৪ শতাংশ। করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙা করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেওয়া কৃষি ও পল্লি ঋণ নীতিমালায় এর চেয়ে নতুন কিছু যুক্ত নেই। বুধবার এ নীতিমালা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা বিজ্ঞপ্তির আকারেও জানিয়েছে ব্যাংকটি।

চলতি অর্থবছরে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ ও গরু মোটাতাজাকরণেও ঋণ দেবে ব্যাংকগুলো। একই সঙ্গে গয়াল ও তিতির পাখি পালনের ক্ষেত্রে ঋণ দেবে। পাশাপাশি ফসল চাষে একরপ্রতি আগের চেয়ে বেশি ঋণ দেবে ব্যাংকগুলো। এভাবেই গত অর্থবছরের তুলনায় কৃষি খাতে ৯ শতাংশ ঋণ বাড়াতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক।

জানা যায়, গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে ব্যাংকগুলো ২২ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণ করেছে, যা মোট লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯৪ শতাংশ। গত অর্থবছরে মোট ৩০ লাখ ৬৬ হাজার ৭৮৬ জন কৃষিঋণ পেয়েছেন। এর মধ্যে ব্যাংকগুলো নিজে ও ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থার মাধ্যমে ১৫ লাখ ১৪ হাজার ৩৬৭ জন নারীকে প্রায় ৮ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। গত অর্থবছরে ২৩ লাখ ৫৪ হাজার ৮৮৮ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ১৬ হাজার ২৫০ কোটি টাকা এবং চর, হাওর প্রভৃতি অনগ্রসর এলাকার ৭ হাজার ১৭৯ জন কৃষক প্রায় ২১ কোটি টাকা কৃষিঋণ পেয়েছেন।

এদিকে করোনাভাইরাসের প্রকোপ মোকাবিলায় কৃষি খাতে চলতি মূলধন সরবরাহের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫ হাজার কোটি টাকার একটি পুনঃ অর্থায়ন স্কিম চালু করে। তফসিলি ব্যাংকগুলো গত ৩০ জুন ওই পুনঃ অর্থায়ন স্কিমের আওতায় ১৭২ কোটি টাকা এবং সুদ-ক্ষতি সুবিধার আওতায় শস্য ও ফসল খাতে ২৮৬ কোটি টাকা বিতরণ করেছে।

কৃষিঋণের সুদহার ৯ শতাংশ। তবে করোনাভাইরাসের কারণে কৃষিঋণে সরকার ৫ শতাংশ ভর্তুকি দিচ্ছে। এর ফলে কৃষিঋণ বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। তবে কৃষকদের চাহিদা থাকলেও ব্যাংকগুলো এই ঋণে আগ্রহী না।

জানা গেছে, বেসরকারি ব্যাংকগুলো নিজেরা ঋণ না দিয়ে ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থার মাধ্যমে বিতরণ করছে। ফলে ঋণের সুদ হার ২০ শতাংশের বেশি হয়ে যাচ্ছে। এই কারণে কৃষকেরা এই ঋণে আগ্রহী হচ্ছেন না। আবার সরকারি ব্যাংকগুলো ঋণ দিলেও কৃষকদের নথিপত্রে ঘাটতি থাকায় তাঁরা ঋণ পাচ্ছেন না।