দক্ষিণ কোরিয়ায় দু্ই দশকে সবচেয়ে ভয়াবহ মন্দা

দক্ষিণ কোরিয়ার মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কমেছে গত বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৯ শতাংশ। ছবি: রয়টার্স
দক্ষিণ কোরিয়ার মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কমেছে গত বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৯ শতাংশ। ছবি: রয়টার্স

করোনার কারণে মন্দায় এখন দক্ষিণ কোরিয়া। এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কমেছে গত বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৯ শতাংশ। যা আশঙ্কা করা হয়েছিল, এটি তার চেয়েও অনেক বেশি। ১৯৯৮ সালের পর সর্বাধিক অবনতি।

দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতি ব্যাপকভাবে রপ্তানিনির্ভর। দেশটির অর্থনীতির ৪০ শতাংশ রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল। করোনার কারণে রপ্তানি অনেক কমেছে। এমনকি ১৯৬৩ সালের পর সবচেয়ে কমেছে রপ্তানি। সব মিলিয়ে অর্থনীতিকে মন্দায় ফেলে দিয়েছে। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

তবে দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থমন্ত্রী হং নাম কি অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে, এ বিষয়ে আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘আমাদের পক্ষে তৃতীয় প্রান্তিকে চীনের মতো প্রত্যাবর্তন দেখা সম্ভব। কারণ উৎপাদন, স্কুল এবং হাসপাতালগুলো খুলে গেছে।’ দক্ষিণ কোরিয়া সরকার এখন পর্যন্ত করোনার প্রভাব মোকাবিলায় ২৩ হাজার ১০০ কোটি ডলার প্রণোদনা বাস্তবায়ন করেছে। তবে বাণিজ্য-নির্ভর দেশটির রপ্তানিতে কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ খুবই কম। কম্পিউটারের মেমোরি চিপ থেকে শুরু করে গাড়ি পর্যন্ত রপ্তানি করে তারা। এখানে আরেকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। তা হলো দেশটির রপ্তানি পণ্যের গন্তব্যস্থলগুলোর অবস্থা করোনার কারণে কী রকম দাঁড়িয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার রপ্তানি পণ্যের অন্যতম গন্তব্যস্থল হলো অস্ট্রেলিয়া। করোনার সংক্রমণ এখনো সেখানে বেড়েই চলেছে। ইতিমধ্যে দেশটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তাদের সর্বোচ্চ বাজেট ঘাটতির কথা জানিয়েছে। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ৬ হাজার ১৩০ কোটি ডলার, যা আরও বাড়বে বলেই মনে করছে তারা।

সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, জাপান ও সিঙ্গাপুর উভয়ই মন্দায় পড়েছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে জাপানের অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ হারে। এতে ২০১৫ সালের পর প্রথমবারের মতো মন্দায় পড়েছে দেশটি। গত সপ্তাহে খারাপ খবর শুনিয়েছে সিঙ্গাপুরও। দেশটির সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে গত বছরের তুলনায় ১২ দশমিক ৬ শতাংশ হারে, যা কিনা ১৯৬৫ সালে মালয়েশিয়া থেকে আলাদা হওয়ার পর সবচেয়ে খারাপ অবস্থা। তবে সবাই তলানিতে ঠেকলেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে চীন। গত সপ্তাহে চীন জানায়, দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশটির প্রবৃদ্ধি হয়েছে গত বছরের তুলনায় ৩ দশমিক ২ শতাংশ।