করোনায় তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি কমেছে ৩২.৯%

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

করোনার ধাক্কায় সব দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে জানাই ছিল। কিন্তু মাত্রা কতটা হবে, তা নিয়ে নানা ধরনের পূর্বাভাস ছিল। ছিল নানা আলোচনা। গত দুই দিনে বিভিন্ন দেশ নিজেদের এপ্রিল-জুনের জিডিপির পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেল, যুক্তরাষ্ট্রের সংকোচন হয়েছে ৩২ দশমিক ৯ শতাংশ, যা ইতিহাসে সর্বাধিক। আবার ইতালির ক্ষেত্রে মুছে গেছে প্রায় ৩০ বছরের প্রবৃদ্ধিই। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূত্রে এই খবর পাওয়া গেছে।

করোনা মোকাবিলায় জানুয়ারি থেকেই চীনে কঠোর লকডাউন শুরু হয়। একসময় সেই সংক্রমণ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে মার্চের মাঝামাঝি থেকে প্রায় সব দেশেই মোটামুটি বন্ধ ছিল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। বিশেষত স্পেন, ইতালি, ফ্রান্সের মতো ইউরোপীয় দেশে সংক্রমণ যত ছড়িয়েছে, ততই ঘরবন্দী হয়েছে মানুষ। সব মিলিয়ে প্রায় তিন মাস। সে কারণে এপ্রিল থেকে জুন ত্রৈমাসিক প্রান্তিকে আমদানি-রপ্তানি ও কলকারখানার উৎপাদন ধাক্কা খেয়েছে। মুখ থুবড়ে পড়েছে পর্যটননির্ভর দেশগুলোর হোটেল, পর্যটন, বিমান ও রেস্তোরাঁ পরিষেবা। যার জেরে এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে ফ্রান্সের জিডিপি কমেছে প্রায় ১৪ শতাংশ, ইতালির ১২ দশমিক ৪ শতাংশ, স্পেনের ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ ও ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতি জার্মানির ১০ দশমিক ১ শতাংশ। আর ১৯টি দেশের ইউরোপীয় অঞ্চল (যাদের মুদ্রা ইউরো) ধরলে সেই অঙ্ক ১১ দশমিক ৯ শতাংশ। ২৭ দেশের ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনীতি কমেছে ১২ শতাংশের বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রে জানুয়ারি-মার্চেই ধাক্কা খেয়েছিল অর্থনীতি। তখন জিডিপি কমেছিল ৫ শতাংশ। তার পরেই করোনার হানায় গত বছরের এপ্রিল থেকে জুনের তুলনায় এ বছর ওই তিন মাসে মার্কিন জিডিপি কমেছে ৩২ দশমিক ৯ শতাংশ। এর আগে ১৯৫৮ সালে জিডিপি কমেছিল ১০ শতাংশের বেশি। সেটাই ছিল রেকর্ড।

নিজের সাফল্য হিসেবে বরাবরই অর্থনীতির উজ্জ্বল ছবি তুলে ধরেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু মার্চ থেকে প্রায় প্রতি সপ্তাহে ১০ লাখের বেশি কাজ হারানো মানুষ এবং অর্থনীতির এই পতন নভেম্বরের নির্বাচনের আগে তাঁকে বেকায়দায় ফেলে দেবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। এখন অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরাতে প্রণোদনার সুফল দেখার অপেক্ষায় সবাই।