দ্বিতীয় ভৈরব ও দ্বিতীয় তিতাস রেলসেতু নির্মাণ করবে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান
বিদ্যুতের ৬০ হাজার খাম্বা কিনবে সরকার
বিদ্যুতের ৬০ হাজার ৬২৫টি খাম্বা কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে ১১৭ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
সচিবালয়ে গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত ক্রয় কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ কথা সাংবাদিকদের জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় ১৮ লাখ গ্রাহকের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছাতে বিভিন্ন আকারের এ খাম্বা কেনা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের খাম্বা বিদ্যুৎ ছাড়া থাকবে না। বিদ্যুৎ লাইনসহ খাম্বা থাকবে।’
এটিসহ ক্রয় কমিটিতে মোট নয়টি প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। অনুমোদিত হয়েছে ভারতীয় ঋণ সহায়তার অধীনে ‘প্রস্তাবিত রেললাইনসহ দ্বিতীয় ভৈরব ও দ্বিতীয় তিতাস রেলসেতু নির্মাণ’ কাজের ঠিকাদার নিয়োগ প্রস্তাব। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৫৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। এর মধ্যে ভারতীয় ঋণ ৮২৬ কোটি ২০ লাখ টাকা। বাকি অর্থ বাংলাদেশ সরকারের।
যৌথভাবে দ্বিতীয় ভৈরব সেতু নির্মাণের কাজটি পেয়েছে দুই ভারতীয় কোম্পানি ইরকন ও এফকন্স। এতে ব্যয় হবে ৫৬৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। অন্যদিকে দ্বিতীয় তিতাস সেতু নির্মাণে দরদাতা হিসেবে যৌথভাবে কাজ পেয়েছে ভারতীয় অন্য দুই কোম্পানি গ্যানোন ও এফএলসিএল। এতে মোট ব্যয় হবে ১৯১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
এ ছাড়া রয়েছে নেদারল্যান্ডস সরকারের অনুদানে ভোলায় পানি ব্যবস্থাপনা অবকাঠামো উন্নয়নে সমীক্ষার জন্য পরামর্শক নিয়োগে নেদারল্যান্ডসের রয়্যাল হ্যাসকোনিং ডিএইচভি এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের মধ্যে খসড়া চুক্তির প্রস্তাব।
২০১৪ সালে ইবতেদায়ি, দাখিল ও দাখিল (ভোকেশনাল) স্তরের জন্য বিনা মূল্যের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ (কাগজসহ), বাঁধাই ও পরিবহনের দরপ্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এতে চার কোটি ৬১ লাখ কপি বইয়ে ব্যয় হবে ৮৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা।
সরকারি বা আধাসরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ঢাকার মিরপুরে জয়নগর আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ১৪তলাবিশিষ্ট তিনটি আবাসিক ভবন নির্মাণকাজের ক্রয় প্রস্তাব। এতে ১৩১ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
অন্য প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে রেলওয়ের ‘দর্শনা-ঈশ্বরদী-সিরাজগঞ্জ বাজার বিজি সেকশনের লুপ লাইনের সম্প্রসারণ-পুনর্বাসন ও পুনর্নির্মাণকাজের ঠিকাদার নিয়োগ, রেলওয়ের পাঁচুরিয়া-ফরিদপুর-ভাঙ্গা সেকশন পুনর্বাসন ও নির্মাণ, ‘গণ খাতে ক্রয় সংস্কার প্রকল্প-২’ শীর্ষক দ্বিতীয় সংশোধিত কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের আওতায় একক উৎসভিত্তিক পরামর্শকপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ‘ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড অপারেশন অব ই-জিপি সিস্টেম ইন বাংলাদেশ’ সেবা গ্রহণের জন্য ক্রয় চুক্তি।
অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি: ক্রয় কমিটির পাশাপাশি অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকেও কিছু প্রস্তাব অনুমোদিত হয় গতকাল।
অর্থমন্ত্রী বলেন, যমুনা নদীর ওপর রেল চলাচলের জন্য বর্তমান সেতুর বাইরে নতুন করে আরেকটি রেলসেতু করবে সরকার। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারের (পিপিপি) মাধ্যমে এর বাস্তবায়ন হবে। ব্যয় হবে আট হাজার কোটি টাকা। তবে প্রকল্পের বিস্তারিত এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সেতুর নকশায় রেললাইন ছিল না। আগের মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন শেখ হাসিনা সেখানে রেললাইন সংযুক্ত করার প্রস্তাব করেন। যেহেতু নকশা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল, কোনো পরিবর্তন না করেই সেখানে রেললাইন করা হয়।
তবে সেটি সীমিত রাখার কথা ছিল উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, শেষ পর্যন্ত সীমিত রাখা যায়নি। আর ফাটল ধরার অন্যতম কারণও একে মনে করা হয়। বর্তমান যমুনা সেতুর কাছ দিয়ে আরেকটি রেলসেতু সহজে কম খরচে নির্মাণ করা সম্ভব হবে জানান অর্থমন্ত্রী।