চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল

এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেকের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অপর মন্ত্রীরা। ছবি: ফোকাস বাংলা
এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেকের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অপর মন্ত্রীরা। ছবি: ফোকাস বাংলা

সরকার চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি অর্থনৈতিক ও শিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে। এখানে চীনা কোম্পানিগুলোকে আকৃষ্ট করার জন্য একটি অনুকূল বাণিজ্য পরিবেশ এবং স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। চট্টগ্রামের আনোয়ারায় দ্বিতীয় অর্থনৈতিক জোনের উন্নয়নে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য এ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে লাগবে ৪২০ কোটি টাকা। 

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেকের বৈঠকে এ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। একনেকের চেয়ারপারসন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। খবর বাসস ও ইউএনবি।
একনেকের সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, একনেক ৫ হাজার ৩৯ কোটি টাকার ব্যয়ে অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠাসহ মোট সাতটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে সরকার দেবে ২ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা। বাকি ২ হাজার ১২৩ কোটি টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, প্রকল্পগুলোর মধ্যে পাঁচটি নতুন এবং দুটি সংশোধিত প্রকল্প।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, গত বছরের ৬ থেকে ১১ জুন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরের সময় একটি শিল্প জোন প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন। এরপর চীনের ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বিশেষ ইকোনমিক ও শিল্প জোন প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়। বেপজা বিদায়ী বছরের শেষ নাগাদ চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এ ব্যাপারে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। চীনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী, দীর্ঘমেয়াদি লিজের ভিত্তিতে বাংলাদেশ চীনের বিনিয়োগকারীদের জমি দেবে এবং চীন মনোনীত কোন কোম্পানি ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠা করবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশির জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বেপজা।
মন্ত্রী বলেন, একনেক সভায় ৩৬৬ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষে বৃহত্তম চট্টগ্রাম জেলা পল্লি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। চট্টগ্রাম জেলার ১৪টি উপজেলা এবং কক্সবাজার জেলার আটটি উপজেলা নিয়ে এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। সভায় ১১৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষ ডাবল লিফটিং টেকনোলজির (তৃতীয় পর্যায়) মাধ্যমে ভূ-পৃষ্ঠের পানি ব্যবহার করে সেচ সুবিধা বৃদ্ধি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ২০২০ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
একনেক সভায় অনুমোদিত অপর প্রকল্পগুলো হলো ৩ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ (প্রথম সংশোধনী) দ্বিতীয় স্থানীয় সরকার সহায়তা প্রকল্প (এলজিএসপি-২), ৬৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষ বনগাঁও-নুন্নী-হাটিপাগার সড়ক প্রশস্তকরণ ও জোরদারকরণ প্রকল্প, ৭৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষ ডাক পরিবহন ব্যবস্থা জোরদারকরণ প্রকল্প এবং ৫১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষ (প্রথম সংশোধনী) পাকিস্তানের ইসলামাবাদে চ্যান্সারী ভবন প্রতিষ্ঠা।
সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা ও প্রতিমন্ত্রীরা যোগ দেন। সভায় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যগণ এবং সংশ্লিষ্ট সচিবরাও উপস্থিত ছিলেন।