তিন বছর না যেতেই ফারমার্স ব্যাংকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ

নতুন ব্যাংক হিসেবে কার্যক্রম শুরুর তিন বছর না যেতেই ফারমার্স ব্যাংকে পর্যবেক্ষক বসিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ পর্যবেক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সাম্প্রতিক সময়ে নতুন অনুমোদন পাওয়া ব্যাংকগুলোর মধ্যে পর্যবেক্ষক নিয়োগের ঘটনা এটিই প্রথম।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক এ এন এম আবুল কাশেমকে ফারমার্স ব্যাংকে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে তিনি ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদসহ গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণী সভায় উপস্থিত থাকবেন।
ক্ষমতাসীন বর্তমান সরকারের আগের মেয়াদে ২০১৩ সালের জুনে ফারমার্স ব্যাংককে বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর।
নতুন ব্যাংকে পর্যবেক্ষক নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করছে নতুন এ ব্যাংকটির বেশ কিছু বিষয়ে উন্নতি দরকার। বিশেষ করে ব্যাংকটির ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও ঋণশৃঙ্খলা উন্নত করা দরকার। এ কারণেই ব্যাংক কোম্পানি আইনের সুনির্দিষ্ট বিধান অনুযায়ী পর্যবেক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুসন্ধানে নতুন এ ব্যাংকটির বেশ কিছু ঋণ অনিয়মের ঘটনা উদ্ঘাটিত হয়। নামে-বেনামে অস্তিত্বহীন কোম্পানির বিপরীতেও বড় অঙ্কের ঋণ অনুমোদন করা হয়। এ ছাড়া ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও বেশ কিছু দুর্বলতা পাওয়া গেছে অনুসন্ধানে।
নানা অনিয়মের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন নির্দেশনা দিলেও ব্যাংকটি তা যথাযথভাবে পরিপালন করেনি। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক শেষপর্যন্ত পর্যবেক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।
ফারমার্স ব্যাংকের নিজস্ব ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ব্যাংকটির ৩৮টি শাখা রয়েছে। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) এটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্যসংখ্যা ২১ জন। চেয়ারম্যান মহীউদ্দীন খান আলমগীর ছাড়া অন্য পরিচালকেরা হলেন মোহাম্মদ আতহার উদ্দিন, মাহাবুবুল হক চিশতি, আজমত রহমান, হাফিজুর রহমান সরকার, মোহাম্মদ মাসুদ, নাফিসা কামাল, মারুফ আলম, তাজনীন আমান, মো. সাহাবুদ্দিন, মোহাম্মদ আবু আলম, আবাসন ব্যবসায়ী সাঈদ আহমেদ, শরীফ চৌধুরী, আবদুর রাজ্জাক খান, মেহেদী হাসান, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও জাতীয় পার্টির নেতা মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম, রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, চৌধুরী নাফিজ শরাফত, হাসান তাহের ইমাম ও এমডি চৌধুরী মোশতাক আহমেদ।