উপাচার্য নিয়োগে নীতিমালা চায় ইউজিসি

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় উপাচার্য নিয়োগে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছ হওয়া উচিত বলে মনে করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। একই সঙ্গে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও গবেষকদের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিতে সরকার ইউজিসির মতামত গ্রহণ করতে পারে।

আজ বুধবার ইউজিসিতে আয়োজিত এক প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর এ কথা বলেন।
মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, সহ–উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের কোনো সুস্পষ্ট নীতিমালা নেই। কীভাবে একজন উপাচার্য হবেন, সে প্রক্রিয়াও স্বচ্ছ নয়। সুস্পষ্ট নীতিমালার মাধ্যমে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হলে এ নিয়ে বিতর্ক বন্ধ হবে বলে তিনি মনে করেন।

ইউজিসির এ সদস্য আরও বলেন, ইউজিসি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মানসম্পন্ন শিক্ষা ও গবেষণার উৎকর্ষসাধনসহ উচ্চশিক্ষার সার্বিক বিষয় দেখভালের দায়িত্ব পালন করে। অথচ উপাচার্য নিয়োগপ্রক্রিয়ায় ইউজিসির কোনো ধরনের মতামত দেওয়ার সুযোগ নেই। প্রকৃত শিক্ষাবিদদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য সরকার ইউজিসির মতামত গ্রহণ করতে পারে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে উদ্দেশ্যে ইউজিসি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেটি বাস্তবায়ন করা জরুরি।

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত উপাচার্যরা যদি বিধিবিধান মেনে যথাযথভাবে তাঁদের অর্পিত দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে বিদ্যমান পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো অভিযোগ উঠলে তা সঙ্গে সঙ্গে প্রতিকারের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে কোনো ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হবে না।

ইউজিসির সচিব ফেরদৌস জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় এ অনুষ্ঠান।
বর্তমানে দেশের ৫০টির বেশি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের বিরুদ্ধে নিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানা রকমের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ রয়েছে, দলীয় বিবেচনায় বা ব্যক্তি পছন্দের কারণে তুলনামূলকভাবে কম যোগ্য শিক্ষকদের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে গতকাল জাতীয় সংসদেও আলোচনা হয়েছে। দলীয় বিবেচনার বাইরে গিয়ে প্রকৃত শিক্ষাবিদদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্য পদে নিয়োগ দেওয়ার দাবি ওঠে জাতীয় সংসদে। একটি বিল পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দলের একাধিক সদস্য এ দাবি জানান। জবাবে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘আমাদের বরেণ্য শিক্ষকেরা আছেন, যাঁদের উপাচার্য হিসেবে পেলে গর্ব অনুভব করতাম। কিন্তু তাঁদের অনেকেই এ প্রশাসনিক দায়িত্ব নিতে আগ্রহী হন না। আমরা চাইলেও সবচেয়ে ভালো কেউ আগ্রহী হবেন, তেমন নয়।’

আরও পড়ুন