এসডিজি অর্জনে পোশাকশিল্পে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার জরুরি

অনুষ্ঠানে বুয়েটের শিক্ষক, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা অংশ নেন।
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের পোশাকশিল্প বর্তমানে নতুন শিখরের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানোর অপেক্ষায়। টেকসই উৎপাদনের জন্য নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া তাই আরও জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষ করে এসডিজি অর্জনে পোশাকশিল্পে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার অবধারিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই পানি, বিদ্যুৎ, রাসায়নিকে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, বাস্তুতন্ত্রের সুরক্ষা, মানবসম্পদের সঠিক ব্যবহার সামগ্রিক পরিসরে অত্যন্ত প্রয়োজন। এটি নিশ্চিত করলে এ শিল্প চলে যাবে ভিন্ন মাত্রায়।

আজ বৃহস্পতিবার পোশাকশিল্প-সংশ্লিষ্ট বিশিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতিতে এক সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে আয়োজিত শেয়ারহোল্ডার সংলাপের অনুষ্ঠানে এসব কথা আলোচিত হয়। ‘সাসটেইনেবিলিটি অব দ্য অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশ: পলিসিজ, স্কোপস অ্যান্ড কন্সট্রেইন্টস’ শিরোনামের এ অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করছে সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এস্টেক্স (এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবিলিটি ইন টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ)। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে অংশ নিয়েছেন ৬০ স্বনামধন্য ব্যক্তি, পোশাকশিল্পসহ সরকারি-বেসরকারি এবং অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস প্রোভাইডার, ব্যাংক, মাল্টিন্যাশনাল ক্লথিং ব্র্যান্ডের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।

বক্তারা জানান, বর্তমান সময়ে অত্যাধুনিক ও এনার্জি-ইফিশিয়েন্ট মেশিন এবং প্রযুক্তির উপযোগিতা অত্যন্ত জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং ক্লিনার প্রোডাকশনের সম্ভাবনা ও ফ্যাক্টরিগুলোর সাসটেইনেবিলিটি অর্জনের সুযোগকে বাড়িয়ে দিয়েছে। এসব প্রযুক্তি স্মার্ট ব্যবসায়িক ও ইকোসিস্টেমের বেশ প্রয়োজনীয় উপাদান, যা বাড়িয়ে দিতে পারে টেকসই লক্ষ্যমাত্রা পূরণের সম্ভাবনা। সেই সঙ্গে ফ্যাক্টরিগুলোর কাজের পরিবেশকে উন্নত করতে এবং একই সঙ্গে শ্রমিকদের দ্রুত পরিবর্তিত এ সেক্টরের সঙ্গে খাপ খাইয়ে তুলতে পারে। সেই সুবাদে বিজনেস ইকোসিস্টেমের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কমপ্লায়েন্স ট্রেড, ইনভেস্টমেন্ট ইস্যুকে কেন্দ্র করে যথাযথ পলিসি তৈরি করতে হবে। এ অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ছিল পলিসি মেকার ও সেক্টোরাল স্টেকহোল্ডারদের পলিসির দূরত্বগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা, সীমাবদ্ধতা ও পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা, নতুন সুযোগ-সুবিধাগুলো আলোচনা করা এবং পোশাকশিল্পের নতুন উদ্যোগ, বাধা, সমাধান নিয়ে বিশদ পর্যালোচনা করা।

সুচারু উপায়ে এফ্লুয়েন্ট ম্যানেজমেন্ট নিয়ে এবং সেই সুবাদে ইকোলজিক্যাল ফুটপ্রিন্ট কীভাবে কমিয়ে আনা যায় ও স্ট্যান্ডার্ড ভ্যালু অর্জনে কী কী সীমাবদ্ধতা ফ্যাক্টরিগুলোর রয়েছে, সেসব বিষয় নিয়ে এ সেশনে আলোচনা করা হয়।

অনুষ্ঠানটি দুটি আলাদা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে পৃথক সেশনে আয়োজিত হয়েছে। এনভায়রনমেন্ট, ইকোলজিকাল ফুটপ্রিন্ট ও এনার্জি নিয়ে আয়োজিত দুটি সেশনেই পৃথক সংলাপ ও পরিসংলাপে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম সেশনে ছিল এফ্লুয়েন্ট ম্যানেজমেন্ট ও ইকোলজিক্যাল ফুটপ্রিন্ট। এই সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান। এ সেশনে বক্তারা আলোচনা করেন সুচারু উপায়ে এফ্লুয়েন্ট ম্যানেজমেন্ট নিয়ে এবং সেই সুবাদে ইকোলজিক্যাল ফুটপ্রিন্ট কীভাবে কমিয়ে আনা যায় ও স্ট্যান্ডার্ড ভ্যালু অর্জনে কী কী সীমাবদ্ধতা ফ্যাক্টরিগুলোর রয়েছে, সেসব বিষয় নিয়ে।

দ্বিতীয় সেশনে আলোচনার বিষয় ছিল ‘এনার্জি ম্যানেজমেন্ট ও সাসটেইনেবল গ্রোথ অব দ্য অ্যাপারেল সেক্টর’। বুয়েটের ডিন অব ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির অধ্যাপক এম. তামিম ছিলেন এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি। সংলাপের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে অনুষ্ঠানের এ সেশনে পোশাকশিল্পে ইনভেস্টমেন্টের জন্য পলিসি ফরমুলেশন ও পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দুটি সেশনের শুরুতে ছিল সূচনা বক্তব্য, ছিল কি-নোট প্রেজেন্টেশন এবং অতিথিদের আলাপ-আলোচনা। প্রতিটি পর্ব সঞ্চালনা করেন এসটেক্সের প্রজেক্ট ম্যানেজার ও বুয়েটের কেমিকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মহিদুস সামাদ খান।

অনুষ্ঠানটি সমাপ্ত হয়েছে যথাক্রমে সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার কান্ট্রি ম্যানেজার সেলিম রেজা হাসান ও এসটেক্সের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মহিদুস সামাদ খানের সমাপ্তিসূচক বক্তব্য দিয়ে।