সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ জীববিজ্ঞান বিষয়ের অধ্যায়-১১ থেকে একটি সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।
ক. পরাগায়ন কাকে বলে?
খ. নিষেক বলতে কী বোঝো?
গ. চিত্রটি কিসের? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্ভিদের বংশবিস্তারে প্রদর্শিত চিত্রটির গুরুত্ব বিশ্লেষণ করো।

উত্তর-ক.
পরাগায়ন: পরাগধানী থেকে পরাগ রেণু স্থানান্তরিত হয়ে ফুলের গর্ভমুণ্ডে পতিত হওয়াকে পরাগায়ন বলে।
উত্তর-খ.
বিসদৃশ দুটি জননকোষ অর্থাত্ স্ত্রীগ্যামেট তথা ডিম্বাণুর সঙ্গে পুংগ্যামেটের যৌন মিলনকে নিষেক বলে। নিষেকের ফলে ফুলের গর্ভাশয় ফলে পরিণত হয় এবং ডিম্বকগুলো বীজে পরিণত হয়। বীজ উদ্ভিদের বংশ রক্ষা করে। আর এই বীজ সৃষ্টি না হলে উদ্ভিদকুল বিলীন হয়ে যেত। অন্যভাবে বলা যায়, নিষেক না ঘটলে উদ্ভিদকুল বিলীন হয়ে যেত।
উত্তর-গ.
প্রদর্শিত চিত্রটি পতঙ্গ পরাগায়নের। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পতঙ্গ মধু আহরণকালে এক ফুলের পরাগ রেণু অন্য ফুলে স্থানান্তর করে পরাগায়ন ঘটিয়ে থাকে। পতঙ্গের মাধ্যমে যে ফুলের পরাগায়ন ঘটে, তাদের পতঙ্গপরাগী ফুল বলে। সরিষা, তুলসী, অর্কিড, গোলাপ এগুলো পতঙ্গপরাগী ফুল। ফুলের বর্ণ ও গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে মধু সংগ্রহের জন্য ফুলে ঢোকার সময় পতঙ্গের দেহে পরাগ রেণু লেগে যায়। এ পতঙ্গ মধু সংগ্রহের জন্য যখন একই প্রজাতির অন্য ফুলে ঢোকে, তখন এদের দেহে লেগে থাকা পরাগ রেণু ওই ফুলের গর্ভমুণ্ডে লেগে পরাগায়ন ঘটায়।
উত্তর-ঘ.
বিচিত্র ধরনের উদ্ভিদ নিয়ে আমাদের এই উদ্ভিদ জগত্। এই বিচিত্র ধরনের উদ্ভিদরাজি সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ার মূলেই আছে উদ্ভিদের বংশবিস্তার। উদ্ভিদের বংশবিস্তারে প্রদর্শিত চিত্রটি (পতঙ্গ পরাগায়ন) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উদ্ভিদের ফুলই এর প্রজনন অঙ্গ। ফুলের ভেতর পুংজননকোষ ও স্ত্রীজননকোষ সৃষ্টি হয়। পতঙ্গ ফুলের বর্ণ ও গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে মধু সংগ্রহের সময় পরাগ রেণু পতঙ্গের ডানা ও পায়ে লেগে যায়। এই পতঙ্গ যখন একই প্রজাতির অন্য ফুলে বসে, তখন ডানা ও পায়ে লেগে থাকা পরাগ রেণু গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হয়ে পরাগায়ন ঘটায়। ফলে পরাগায়েনের পুংজননকোষ ও স্ত্রীজননকোষের মিলনে জাইগোট সৃষ্টি হয়। এই জাইগোট থেকে ফল ও বীজ উত্পন্ন হয়। উদ্ভিদের ফল ও বীজ বিভিন্ন বাহকের মাধ্যমে অনেক দূরদূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে। বীজ উদ্ভিদের বংশ রক্ষা করে। কারণ অনুকূল পরিবেশে এ বীজ থেকে নতুন চারা গাছ সৃষ্টি হয়। বীজ উদ্ভিদের বংশরক্ষার পাশাপাশি বংশ বৃদ্ধি করে। যদি বীজের সৃষ্টি না হতো, তাহলে উদ্ভিদ সম্প্রদায় বিলীন হয়ে যেত। বীজ সৃষ্টিতে প্রধান ভূমিকা রাখে পরাগায়ন ও নিষেক। পরাগায়ন না ঘটলে উদ্ভিদের প্রজনন বন্ধ হয়ে যেত। ফলে নতুন কোনো উদ্ভিদ জন্মাতে পারবে না। উদ্ভিদকুল ধ্বংসের মুখে পতিত হবে। সুতরাং উদ্ভিদের বংশবিস্তারে ও জীবের অস্তিত্ব রক্ষায় প্রদর্শিত চিত্রের (পতঙ্গ পরাগায়ন) গুরুত্ব অপরিসীম।
প্রভাষক, রূপনগর মডেল স্কুল ও কলেজ, ঢাকা