ঢাবিতে আর হবে না ‘ঘ’ ইউনিটের পরীক্ষা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ঘ ইউনিটের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা হয়ে গেল আজ শনিবার। এই পরীক্ষার মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটল আশির দশক থেকে চলে আসা ‘ঘ ইউনিট’ অধ্যায়ের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিষদের (একাডেমিক কাউন্সিল) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঘ ইউনিট বাদ দিয়ে চারটি ইউনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা হবে।

আজ বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত (দেড় ঘণ্টা) ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা হয়। গতবারের মতো এবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে দেশের আটটি বিভাগের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে। ঢাকা বিভাগের পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।

বিংশ শতাব্দীর আশির দশক থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচটি ইউনিটভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা হয়ে আসছিল। এর মধ্যে ঘ ইউনিটের মাধ্যমে বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে উচ্চমাধ্যমিকের বিভাগ পরিবর্তনের সুযোগ পেতেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু গত মার্চে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিষদের (একাডেমিক কাউন্সিল) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে ভর্তি পরীক্ষা হবে চারটি ইউনিটে। থাকবে না সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ঘ ইউনিট। এর সঙ্গে বদলে যাবে ইউনিটগুলোর নামও।

২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে ইউনিটগুলোর নাম হবে—বিজ্ঞান ইউনিট, ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিট, চারুকলা ইউনিট এবং কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিট। ঘ ইউনিট বাতিলের কারণ হিসেবে পরীক্ষার বোঝা ও ভোগান্তি কমানোর চেষ্টা বলে উল্লেখ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। ঘ ইউনিট বাতিল করলেও চালু হতে যাওয়া কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিভাগ পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। পরিদর্শন শেষে উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, ‘সর্বোচ্চ নিরাপত্তার সঙ্গে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ঢাকার বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকেও আমরা খবর পেয়েছি, কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়াই তারা যথাযথভাবে পরীক্ষা পরিচালনা করছেন। আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও কথা বলেছি প্রশ্নপত্রের মান ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে, তাঁরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।’

ঘ ইউনিটের আজকের পরীক্ষায় ১ হাজার ৩৩৬ আসনের বিপরীতে ৭৮ হাজার ৩১ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। সেই হিসাবে প্রতি আসনের জন্য লড়ছেন ৫৮ জন। তবে ঠিক কতজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন, সে তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।
ঘ ইউনিটে গতবারের মতো এবারও মোট ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে ৬০ নম্বরের বহুনির্বাচনী ও ৪০ নম্বরের লিখিত অংশ ছিল। দুই অংশের উত্তর দেওয়ার জন্য ৪৫ মিনিট করে মোট ৯০ মিনিট সময় পেয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

‘বাধার অভিযোগ ছাত্রদলের’

এদিকে ঘ ইউনিটে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানাতে আজও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসেছিল ছাত্রদল। সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আকতার হোসেন ও সদস্যসচিব আমানউল্লাহ আমানের নেতৃত্বে আজ দুপুর ১২টার দিকে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা কলাভবনের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় অবস্থান নেন। পরীক্ষা শেষে ওই ফটক দিয়ে বের হওয়া শিক্ষার্থীদের ফুল ও কলম দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় ছাত্রদল।

ছাত্রদলের এই শুভেচ্ছা জানানোকে কেন্দ্র করে কলাভবনের ফটকে আগে থেকেই পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের উপস্থিতি ছিল। দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ফটক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী তাঁদের ভেতরে ঢুকতে নিষেধ করেন। পরে কলাভবনের ওই ফটকের উল্টো পাশে মিনিট দশেক অবস্থান করেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। অবশ্য পরে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে টিএসসি হয়ে ক্যাম্পাস ছাড়েন।

ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আকতার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ ছাত্রলীগ কোনো বাধা না দিলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে বাধা ও অসহযোগিতা ছিল, তবু আমরা আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করেছি।’