প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপে আবেদন শেষ ৩০ নভেম্বর

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে জনপ্রশাসনের দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় উচ্চতর শিক্ষায় (পিএইচডি ও মাস্টার্স) ‘প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপ’ দেওয়ার জন্য আবেদন আহ্বান করেছে। পিএইচডি ও মাস্টার্স করতে ফেলোশিপ দিতে প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশের নাগরিকেরা শর্ত সাপেক্ষে মাস্টার্স ও পিএইচডি পড়তে প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

বিজ্ঞপ্তির শর্ত অনুসারে, বাংলাদেশের নাগরিক, যাঁরা এর আগে বিদেশে কোনো মাস্টার্স বা পিএইচডি করেননি, তাঁরাই ফেলোশিপের আওতায় মাস্টার্স বা পিএইচডির জন্য আবেদন করতে পারবেন। সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে চাকরি স্থায়ী হলে এবং চাকরিতে প্রবেশের পর কোনো মাস্টার্স বা পিএইচডি করেননি, শুধু তাঁরাই আবেদন করতে পারবেন এ ফেলোশিপের জন্য।

ফেলোশিপের জন্য নির্বাচিত প্রার্থীরা পিএইচডি করতে মোট দুই কোটি টাকা পাবেন। আর মাস্টার্স করতে এ ফেলোশিপের আওতায় দেওয়া হবে মোট ৬০ লাখ টাকা।

আবেদনকারীকে প্রত্যাশিত ডিগ্রির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিঃশর্ত অ্যাডমিশন অফার আবেদনের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে হবে। অ্যাডমিশন অফারে ভর্তির শেষ তারিখ ১ জানুয়ারি ২০২২ থেকে ৩০ জুন ২০২২-এর মধ্যে হতে হবে।

The Times Higher Education World University overall ranking 2022 অনুযায়ী মাস্টার্সের জন্য ১ থেকে ২০০ এবং পিএইচডির জন্য ১ থেকে ১০০-এর মধ্যে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়/ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অফার লেটার আনতে হবে। আবেদনপত্র গ্রহণ ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রে উল্লিখিত র‌্যাঙ্কিংয়ের বাইরে অথবা অন্য কোনো র‌্যাঙ্কিং বিবেচনায় নেওয়া হবে না।

পিএইচডি ও মাস্টার্সে কত অর্থ
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ফেলোশিপের জন্য নির্বাচিত প্রার্থীরা পিএইচডি করতে মোট দুই কোটি টাকা পাবেন। আর মাস্টার্স করতে এ ফেলোশিপের আওতায় দেওয়া হবে মোট ৬০ লাখ টাকা। বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে (দ্য টাইমস হায়ার এডুকেশন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি ওভারঅল র‌্যাঙ্কিং ২০২২) ১ থেকে ৩০-এর মধ্যে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি বা মাস্টার্স করতে চাইলে শিক্ষার্থীরা আরও ১০ শতাংশ অতিরিক্ত টাকা পাবেন। এ ক্ষেত্রে মাস্টার্সে ৬৬ লাখ এবং পিএইচডিতে ২ কোটি ২০ লাখ টাকা হতে পারে।

বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে (দ্য টাইমস হায়ার এডুকেশন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি ওভারঅল র‌্যাঙ্কিং ২০২২) ১ থেকে ৩০-এর মধ্যে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি বা মাস্টার্স করতে চাইলে শিক্ষার্থীরা আরও ১০ শতাংশ অতিরিক্ত টাকা পাবেন। এ ক্ষেত্রে মাস্টার্সে ৬৬ লাখ এবং পিএইচডিতে ২ কোটি ২০ লাখ টাকা হতে পারে।

টোফেল ও আইইএলটিএস স্কোর কত
প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপের আওতায় মাস্টার্সে পড়ার জন্য সর্বোচ্চ ১৮ মাস এবং পিএইচডি ডিগ্রির জন্য সর্বোচ্চ চার বছরের ফেলোশিপ পাবেন নির্বাচিত প্রার্থীরা। ফেলোশিপের মেয়াদ বৃদ্ধিসংক্রান্ত কোনো আবেদন বিবেচনা করা হবে না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। আবেদনের শেষ তারিখ পর্যন্ত টোফেল ও আইইএলটিএসের (একাডেমি) কার্যকর মেয়াদ থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে আইইএলটিএসে ৬ দশমিক ৫, আর টোফেলে ন্যূনতম ৮৮ ও পিটিই একাডেমিকের ক্ষেত্রে মোট স্কোর হতে হবে ৫৯। এর কম স্কোর পাওয়া প্রার্থী আবেদন করতে পারবেন না।

আবেদনে কোনো অসম্পূর্ণ, মিথ্যা বা যেকোনো ধরনের জালিয়াতি ফেলো নির্বাচন বা ফেলোশিপের যেকোনো পর্যায়ে জানা গেলে আবেদন বা ফেলোশিপ তাৎক্ষণিক বাতিল হিসেবে গণ্য হবে।

আবেদন পদ্ধতি
আবেদনকারীকে ফেলোশিপের ওয়েবসাইটে গিয়ে একটি টেস্টে অংশ নিতে হবে। এ টেস্টে উত্তীর্ণ হলেই আবেদনকারী ফেলোশিপের ওয়েবসাইটে নিজের একটি ই-মেইল অ্যাকাউন্ট ও মুঠোফোন নম্বর ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। এ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আবেদনকারী তাঁর আবেদন তৈরি ও জমা দিতে পারবেন। আবেদন জমা দিলেও সংশোধনের সুযোগ আছে। চাইলে একাধিকবার আবেদন সংশোধন করা যাবে। আবেদন জমা দেওয়ার পর ই-মেইল ও মুঠোফোনে নিশ্চয়তা সূচক একটি বার্তা পাবেন আবেদনকারী। আবেদনের হার্ড কপি সংরক্ষণ করতে হবে।
তিনটি ক্যাটাগরিতে আবেদন গ্রহণ করা যাবে। বিসিএস ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তারা ‘বিসিএস সরকারি কর্মকর্তা’, অন্য সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা ‘নন বিসিএস সরকারি (বিসিএস ব্যতীত অন্যান্য)’ এবং বেসরকারি ব্যক্তিদের জন্য ‘বেসরকারি ক্যাটাগরি’ তে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন ফরমে বিসিএস কর্মকর্তা ছাড়া অন্য সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিরা ‘নন বিসিএস সরকারি (বিসিএস ছাড়া অন্যান্য)’ ক্যাটাগরিতে বিবেচিত হবেন।

ফেলোশিপের আওতায় প্রদেয় বিভিন্ন ভাতার হার ও ফেলোশিপ–সংক্রান্ত অন্যান্য প্রশ্নের উত্তরের জন্য গভর্ন্যান্স ইনোভেশন ইউনিটের ওয়েবসাইটে রক্ষিত Frequently Asked Questions (FAQ) দেখা যেতে পারে। FAQ-তে বর্ণিত নেই এমন যেকোনো তথ্যের জন্য +৮৮০১৩১০৫৯৪৫১০ নম্বরে অফিস চলাকালে (সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত) যোগাযোগ করা যেতে পারে।

আবেদনের শেষ তারিখে আবেদনকারীর সর্বোচ্চ বয়স পিএইচডির ক্ষেত্রে ৪৫ বছর আর মাস্টার্স কোর্সের ক্ষেত্রে বয়স সর্বোচ্চ ৪০ বছর হতে হবে।

কারা আবেদন করতে পারবেন, কারা পারবেন না
আবেদনের শেষ তারিখে আবেদনকারীর সর্বোচ্চ বয়স পিএইচডির ক্ষেত্রে ৪৫ বছর আর মাস্টার্স কোর্সের ক্ষেত্রে বয়স সর্বোচ্চ ৪০ বছর হতে হবে। পিএইচডি কোর্সের জন্য আবেদনকারীকে ন্যূনতম মাস্টার্স সম্পন্ন এবং মাস্টার্স কোর্সের জন্য আবেদনকারীকে ন্যূনতম স্নাতক সম্পন্ন হতে হবে। পিএইচডি সম্পন্ন করলে সেই প্রার্থী এ ফেলোশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন না বা বিবেচিত হবেন না। কোনো আবেদনকারীর বিদেশি কোনো ডিগ্রি থাকলে ওই ডিগ্রির জন্য আবশ্যিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সমতা সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে। এ ছাড়া বিদেশি ডিগ্রির সার্টিফিকেট মূল্যায়নের জন্য বিবেচিত হবে না।

আবেদনের শেষ সময়
৩০ নভেম্বর ২০২১, বাংলাদেশের স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৫৯ মিনিট।