বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়

অধ্যায়-৩

প্রিয় পরীক্ষার্থী, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের ২য় অধ্যায়ের ওপর একটি সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।

# সায়রার বাবা আকবর সাহেব তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী। সকালবেলা বাসা থেকে বের হলে রাতের আগে বাসায় আসতে পারেন না। আজ রাতে বাসায় ফিরে যখন দেখলেন টিভিতে ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ সিনেমাটি চলছে, তখন মেয়েকে নিয়ে তা দেখতে থাকলেন।

প্রশ্ন:

ক. আকারের দিক থেকে পরিবার কত প্রকার?

খ. অনুলোম বিবাহভিত্তিক পরিবার কী? বুঝিয়ে লেখো।

গ. উদ্দীপকের প্রথম অংশে পরিবারের কোন ধরনের কাজের কথা বোঝানো হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. আকবর সাহেবের বাসায় ফেরার পরের কাজটি কী সামাজিকীরণে ভূমিকা রাখে? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।

উত্তর: ক

আকারের দিক থেকে পরিবারকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

উত্তর: খ

উঁচু বর্ণের সঙ্গে নীচু বর্ণের পাত্রীর বিবাহের মাধ্যমে যে পরিবার গঠিত হয়, তাকে অনুলোম বিবাহভিত্তিক পরিবার বলে।

পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের দিক থেকে পরিবারকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। অন্তর্গোত্র ও বহির্গোত্র বিবাহভিত্তিক পরিবার। আবার বহির্গোত্রভিত্তিক পরিবারকে বর্ণগত দিক থেকে অনুলোম ও প্রতিলোম বিবাহভিত্তিক পরিবার—এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়। উঁচু বর্ণের পাত্রের সঙ্গে নীচু বর্ণের পাত্রীর বিবাহের মাধ্যমে অনুলোম বিবাহভিত্তিক পরিবার আবার ‘পাত্রী উঁচু বর্ণের এবং পাত্র নীচু বর্ণের’ বিয়ের মাধ্যমে প্রতিলোম বিবাহভিত্তিক পরিবার গঠিত হয়।

উত্তর: গ

উদ্দীপকের প্রথম অংশে সায়রার বাবা আকবর সাহেবের কাজের মাধ্যমে পরিবারের অর্থনৈতিক কাজের চিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।

মানবসমাজে পরিবারের ভূমিকা চিরন্তন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা পরিবর্তিত হচ্ছে। পরিবারের সাধারণ কিছু কাজ আছে, যা সব সমাজের পরিবারের মধ্যে বিরাজমান। পরিবারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ হলো অর্থনৈতিক কাজ। পরিবার একসময় ছিল সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু। তখন পরিবারেরই যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিস উত্পাদিত হতো। তাই তখন পরিবারকে বলা হতো উত্পাদনের একক। বর্তমান সময়ে পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন প্রয়োজনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন এবং বিনিময়ে পরিবারের প্রয়োজন পূরণ করেন। তাই পরিবারকে বর্তমানে বলা হয় আয়ের একক।

জনাব আকবার সাহেব ব্যবসার মাধ্যমে আয় করেন এবং পরিবারের প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি আয়ের টাকায় ক্রয় করেন। ফলে উত্পাদন না করে বর্তমানে আয়ের মাধ্যমে পরিবারের অর্থনৈতিক কার্যাবলি সম্পাদন করেন। তাই জনাব আকবর সাহেবের কাজের মাধ্যমে পরিবারের অর্থনৈতিক কাজের কথা বোঝানো হয়েছে।

উত্তর: ঘ

উদ্দীপকে আকবর সাহেব বাসায় ফিরে টিভিতে আমার বন্ধু রাশেদ  চলচ্চিত্র দেখার মাধ্যমে সামাজিকীকরণে গণমাধ্যমের ভূমিকা তুলে ধরা হয়েছে।

সামাজিকীকরণ একটি জীবনধর্মী প্রক্রিয়া। জন্মের পর একটি শিশুকে সামাজিক মানুষে পরিণত করতে কতগুলো প্রতিষ্ঠান ভূমিকা রাখে, এর মধ্যে গণমাধ্যম একটি। আধুনিক যুগের সংস্কৃতিই গড়ে উঠছে গণমাধ্যমকে কেন্দ্র করে। গণমাধ্যমগুলোর মধ্যে রয়েছে সংবাদপত্র, বেতার, চলচ্চিত্র, টেলিভিশন ইত্যাদি।

গণমাধ্যমের সাহায্যে শিশুমনের বিভিন্ন খোরাক পূরণের পাশাপাশি নিজেদের সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেকে খাপ খাওয়াতে শেখে। জীবন এবং জীবনবোধ নিয়ে তাদের ধারণা তৈরিতেও গণমাধ্যম ভূমিকা রাখে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত বিভিন্ন সংবাদ কিংবা অনুষ্ঠান ব্যক্তির জীবনগঠনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।

আকবর সাহেব তার মেয়ে সায়রাকে নিয়ে চলচ্চিত্র দেখার মাধ্যমে ও জীবনবোধ সম্পর্কে যেমন ধারণা তৈরি হতে পারে, তেমনি জীবনগঠনেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখতে পারে। সায়রার মানসিক বিকাশ কিংবা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য যেমন বিনোদন দরকার, তেমনি বিনোদনের নেতিবাচক প্রভাব দ্বারা তার জীবন ভুল পথে পরিচালিত হতে পারে। এ জন্য জনাব আকবর মেয়েকে নিয়ে চলচ্চিত্রটি উপভোগের মাধ্যমে সামাজিকীকরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম গণমাধ্যমকে ব্যবহার করছেন। তাই জনাব আকবর সাহেবের শেষের কাজটি সামাজিকীকরণে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।

শিক্ষক

মিরপুর বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা