বাংলা | প্রবন্ধ রচনা

কাগজ

[সংকেত: ভূমিকা, উদ্ভাবন, প্রস্তুতপ্রণালি, প্রকারভেদ, প্রাপ্তিস্থান, ব্যবহার, উপসংহার]

ভূমিকা: আমাদের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে কাগজ অন্যতম। জ্ঞানের বিকাশ ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কাগজের অবদান অতুলনীয়। কাগজ আমাদের শিক্ষা ও সভ্যতার বাহন।

উদ্ভাবন: প্রায় দুই হাজার বছর আগে চীন দেশে প্রথম কাগজ উদ্ভাবন হয় বলে অনেকের ধারণা। মিসরের প্যাপিরাস নামের একপ্রকার গাছের পাতা দিয়ে কাগজ তৈরি হতো। ১৮৭৩ সালে ইংল্যান্ডে প্রথম কাগজের কল তৈরি হয়।

উপকরণ: পাটকাঠি, খড়, বাঁশ, তুলা, ঘাস প্রভৃতি দিয়ে কাগজ তৈরি করা হয়। বর্তমানে ফার নামের কাঠ দিয়েও কাগজ তৈরি হচ্ছে।

প্রস্তুতপ্রণালি: কাগজ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো যন্ত্রের সাহাযে৵ চূর্ণ করে নিতে হয়। এর সঙ্গে আঠালো একরকম জিনিস মেখে প্রস্তুত করা হয় কাগজের মণ্ড। এই মণ্ডকে শোধন করে ভেতরের পানি বের করে নেওয়া হয়। পরিণত মণ্ডের সঙ্গে নানা রকম রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে আধুনিক কাগজ তৈরি হয়।

প্রকারভেদ: কাগজ নানা আকারের ও রঙের হয়ে থাকে। ফুলস্ক্যাপ, ডাবল ক্রাউন, রয়েল, ডিমাই প্রভৃতি আকারের কাগজ বই ছাপার কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ‘নিউজপ্রিন্ট’ কাগজ মূলত সংবাদপত্র ছাপার কাজে ব্যবহার করা হয়।

প্রাপ্তিস্থান: পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই কাগজের কল আছে। বাংলাদেশের কাগজের কলগুলোর মধ্যে খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিল, চন্দ্রঘোনা পেপার মিল, পাকশী পেপার মিল উল্লেখযোগ্য।

ব্যবহার: দৈনন্দিন জীবনে কাগজ একটি আবশ্যকীয় উপাদান। কাগজ প্রধানত বই–খাতা, পত্রিকা, প্যাকেট ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। কাগজ আছে বলেই আমরা ঘরে বসে বিশ্বের নানা খবর সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানতে পারছি।

উপসংহার: কাগজ মানবসভ্যতার ধারক ও বাহক। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কাগজের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। মানুষের সভ্যতা যত দিন থাকবে, তত দিন কাগজও থাকবে।

টেলিভিশন

[সংকেত: ভূমিকা, আবিষ্কার, ব্যবহার, উপকারিতা, অপকারিতা, উপসংহার]

ভূমিকা: আধুনিক সভ্যতাকে বিজ্ঞান উপহার দিয়েছে অনেক কিছু। টেলিভিশন তেমনই এক বিস্ময়কর আবিষ্কার, যা মানুষের জীবনধারাকে বদলে দিয়েছে। টেলিভিশন শব্দটি ‘টেলি’ ও ‘ভিশন’—এই দুটি লাতিন শব্দের সংযোগে তৈরি হয়েছে। ‘টেলি’ শব্দের অর্থ ‘দূরত্ব’ এবং ‘ভিশন’ শব্দের অর্থ ‘দেখা’। সুতরাং টেলিভিশন শব্দের অর্থ দাঁড়ায় দূরদর্শন যন্ত্র।

আবিষ্কার: পল নিপকও নামের একজন জার্মান বিজ্ঞানী প্রথম এ বিষয়ে অভিমত প্রকাশ করেন। এই অভিমতের ওপর ভিত্তি করে ১৯২৬ সালে ইংল্যান্ডের জন এল বেয়ার্ড টেলিভিশন যন্ত্র উদ্ভাবন করেন। ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশে প্রথম টেলিভিশনের ব্যবহার শুরু হয়। বাংলাদেশে রঙিন টেলিভিশন সম্প্রচার শুরু হয় ১৯৮০ সালে।

ব্যবহার: আমাদের দেশের টেলিভিশন কেন্দ্র থেকে দেশ-বিদেশের খবরাখবর, নৃত্যগীত, নাটক, লোকগাথা, ছোটদের অনুষ্ঠান, ছায়াছবি ইত্যাদি প্রদর্শিত ও প্রচারিত হয়ে থাকে।

উপকারিতা: টেলিভিশনের সাহায্যে দেশ-বিদেশের সংবাদ জানা যায়। এ ছাড়া টেলিভিশনের অন্য সব অনুষ্ঠানই হয় শিক্ষামূলক, নইলে বিনোদনমূলক। তাই মানুষের ব্যস্ত জীবনে টেলিভিশন একটি ভিন্নধারার বিনোদনমাধ্যমও বটে।

অপকারিতা: অতিরিক্ত টেলিভিশন দেখার কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। টেলিভিশন দেখা যদি ছাত্রছাত্রীদের নেশায় পরিণত হয়, তবে তা ক্ষতিকর। একটানা অধিক সময় ধরে টেলিভিশন দেখা চোখেরও ক্ষতি করতে পারে।

উপসংহার: টেলিভিশন আধুনিক সভ্যতার অন্যতম প্রচারমাধ্যম। তথ্য সরবরাহ, আনন্দ-বিনোদন এবং গণযোগাযোগের ক্ষেত্রে টেলিভিশনের অবদান অনস্বীকার্য।