বাংলা ২য় পত্র

.
.

ব্যাকরণ
প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ বাংলা ২য় পত্রের ব্যাকরণ অংশের প্রশ্নোত্তর ধারাবাহিকভাবে দেওয়া হলো।
প্রশ্ন: ণ-ত্ব বিধান কাকে বলে? ন-ত্ব বিধানের পাঁচটি নিয়ম লেখো।
উত্তর: ণ-ত্ব বিধান: যে নিয়মে দন্ত্য ‘ন’ মূর্ধন্য ‘ণ’-তে পরিণত হয়, তাকে ণ-ত্ব বিধান বলে। ণ-ত্ব বিধানের পাঁচটি নিয়ম:
১. ঋ, র, ষ—এই তিনটি বর্ণের পর তৎসম শব্দের দন্ত্য ‘ন’ মূধন্য ‘ণ’ হয়। যেমন: ঋণ, ঘৃণা, রণ, বর্ণ, ভূষণ ইত্যাদি।
২. ঋ, র, ষ-এর পর স্বরবর্ণ, ক-বর্গ, প-বর্গ, ষ, হ অথবা ং (অনুস্বার) থাকলে তার পরবর্তী দন্ত্য ‘ন’ মূর্ধন্য ‘ণ’ হয়। যেমন: লক্ষণ, ভক্ষণ, রেণু, পাষাণ, নির্বাণ, দর্পণ, গ্রহণ ইত্যাদি।
৩. ট বর্গের পূর্বে দন্ত্য ‘ন’ মূর্ধন্য ‘ণ’ হয়। যেমন: বণ্টন, লুণ্ঠন, খণ্ড ইত্যাদি।
৪. প্র, পরা, পরি, নির—এই চারটি উপসর্গের পরবর্তী দন্ত্য ‘ন’ মূর্ধন্য ‘ণ’ হবে। যেমন: প্রণাম, প্রমাণ, পরায়ণ, পরিণতি, নির্ণয় ইত্যাদি।
৫. ত, থ, দ, ধ-এর পূর্বে সংযুক্ত বর্ণে দন্ত্য ‘ন’ হয়, ‘ণ’ হয় না। যেমন: দৃষ্টান্ত, বৃন্ত, গ্রন্থ, ক্রন্দন, বন্ধন ইত্যাদি।
প্রশ্ন: ষত্ব বিধান বলতে কী বোঝো? ষত্ব বিধানের পাঁচটি নিয়ম লেখো।
উত্তর: যে বিধানে তৎসম শব্দে ‘ষ’-এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রিত হয়, তাকে ষত্ব বিধান বলে। নিচে ষত্ব বিধানের পাঁচটি নিয়ম দেওয়া হলো:
১. অ, আ ভিন্ন অন্য স্বরধ্বনি এবং ক-র এর পর ষ-এর প্রয়োগ হলে তা অবিকৃত থাকে। যেমন: ভীষণ, বিমর্ষ, জিগীষা ইত্যাদি।
২. ই-কারান্ত ও উ-কারান্ত উপসর্গের পর কতগুলো ধাতুতে ‘ষ’ হয়। যেমন: অভিষেক, অনুষ্ঠান ইত্যাদি।
৩. ঋ-কার ও র-এর পর ‘ষ’ হয়। যেমন: বৃষ, কৃষ্টি ইত্যাদি।
৪. ট ও ঠ-এর আগে মূর্ধন্য ‘ষ’ হয়। যেমন: পুষ্টি, সৃষ্টি।
৫. নিঃ, দুঃ, বহিঃ, আবিঃ, চতুঃ প্রাদুঃ—এ শব্দগুলোর পর ক, খ, প, ফ থাকলে বিসর্গ-এর স্থানে ‘ষ’ হয়। যেমন: নিষ্ফল, নিষ্কাম, বহিষ্কার ইত্যাদি।

প্রশ্ন: বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম লেখো।
উত্তর: বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত প্রমিত বাংলা বানানের দুটি নিয়ম নিচে দেওয়া হলো:
১. রেফের পরে ব্যঞ্জন বর্ণের দ্বিত্ব হয় না। যেমন: ধর্ম, কর্ম, গর্ব ইত্যাদি।
২. সন্ধিতে ম্ স্থানে ং বিকল্প ঙ হয়। যেমন: অহম+কার = অহংকার; সম+গতি = সংগতি, সঙ্গতি।
৩. ণ-ত্ব বিধান ও ষ-ত্ব বিধানের নিয়মগুলো কেবল সংস্কৃত থেকে আগত তৎসম শব্দের বেলায় প্রযোজ্য। যেমন: ঋণ, বর্ণ, ভূষণ ইত্যাদি তৎসম শব্দ। দেশি, বিদেশি ও মিশ্র শব্দে ণ ও ষ ব্যবহৃত হবে না। যেমন: জার্মান, স্টোভ ইত্যাদি।
৪. জাতি, ভাষা, পেশা, প্রাণী, বস্ত্ত, কর্মবাচক শব্দ এবং দ্বিরাবৃত্ত শব্দে কেবল ই-কার হয়। যেমন: বেজি, কেরানি ইত্যাদি।
৫. বাংলা শব্দে ‘হস’ চিহ্ন দেওয়ার দরকার নেই। তবে ভুল উচ্চারণের সম্ভাবনা থাকলে ‘হস’ চিহ্ন ব্যবহার করা বিধেয়। যেমন: আল্লাহ্‌, শাহ্‌ ইত্যাদি।
৬. বিদেশি শব্দে ‘ষ’ হবে না। মূল উচ্চারণ অনুযায়ী শ, স হবে। যেমন: জিনিস, মসলা, শরবত ইত্যাদি।
# বাকি অংশ ছাপা হবে আগামীকাল
শিক্ষক
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, ঢাকা