প্রশ্ন: ক্রিয়াপদ কাকে বলে? ক্রিয়াপদের শ্রেণিবিভাগসহ উদাহরণ দাও।
উত্তর: ক্রিয়াপদ: ধাতুর প্রয়োগগত রূপ হলো ক্রিয়া। বাক্যের আবার দুটি অংশ—উদ্দেশ্য ও বিধেয়। উদ্দেশ্য হলো কর্তা এবং বিধেয় ক্রিয়া। ক্রিয়াপদ বিধেয় অংশে থাকে।
পড়ছে, খেলছে পদগুলো দ্বারা কোনো না কোনো কাজ করা বোঝাচ্ছে, এ জন্য এগুলো ক্রিয়াপদ।
সংজ্ঞা: যে পদ দিয়ে কোনো কাজ করা বোঝায়, তাকে ক্রিয়াপদ বলে।
যে পদের দ্বারা কোনো কার্য সম্পাদন করা বোঝায়, তাকে ক্রিয়াপদ বলে।
ক্রিয়াপদের শ্রেণিবিভাগ—
অর্থ সম্পর্কের দিক থেকে ক্রিয়াপদকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়—
১. সমাপিকা
২. অসমাপিকা
সমাপিকা ক্রিয়া: যে ক্রিয়াপদের দ্বারা বাক্যের অর্থ বা ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায়, তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে। সমাপিকা ক্রিয়াপদের দ্বারা বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণ বা সমাপ্ত হয়।
যেমন: কাল ছাত্ররা আসবে। একসময় ফুটবল খেলতাম।
ওপরের দুটি বাক্যে ক্রিয়াপদের দ্বারা বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পেয়েছে; অর্থগত কোনো অপূর্ণতা নেই। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি ক্রিয়াপদই সমাপিকা ক্রিয়া।
সমাপিকা ক্রিয়া সকর্মক ও অকর্মক দুই-ই হতে পারে। অনেক দিন ধরে ভাবছি লিখব (অকর্মক-সমাপিকা); কাল তোমাকে চিঠি লিখেছি (সকর্মক-সমাপিকা)।
অসমাপিকা ক্রিয়া: যে ক্রিয়াপদের দ্বারা
বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায় না, বাক্যটি সমাপ্ত হয়েছে কি না বোঝায় না এবং
বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণতার জন্য একটি সমাপিকা ক্রিয়ার অপেক্ষায় থাকে, তাকে অসমাপিকা
ক্রিয়া বলে।
বাক্যে অসমাপিকা ক্রিয়া থাকতেও পারে, না–ও পারে। কিন্তু সমাপিকা ক্রিয়া থাকতেই হবে, না হলে বাক্যটির অর্থ সম্পূর্ণ হয় না।
‘এ কথা শুনে তিনি হাসলেন’—একটি সম্পূর্ণ বাক্য।
‘হাসলেন’—সমাপিকা ক্রিয়া।
কিন্তু ‘এ কথা শুনে’—এই পর্যন্ত বাক্যটি বললে অর্থ অসম্পূর্ণ থাকে।
‘শুনে’ ক্রিয়াপদটি অসমাপিকা। ‘হাসলেন’ সমাপিকা ক্রিয়ার সাহায্যে ‘শোনা’ ক্রিয়াটির অর্থ সম্পূর্ণতা পায়।
আমি বাড়ি এসে (অসমাপিকা) তোমাকে দেখলাম (সমাপিকা)।
সমাপিকা ক্রিয়ার মতো অসমাপিকা ক্রিয়ারও কর্তা, করণ, অধিকরণ, অপাদান থাকতে পারে। অসমাপিকা ক্রিয়ারও কর্ম থাকতে পারে। বাক্যে সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তা ও কর্ম এক অথবা পৃথকও হতে পারে।
আমি খেয়ে এসেছি। ‘খেয়ে’ ও ‘এসেছি’ উভয়ের কর্তা ‘আমি’।
আমি আম কিনে এনেছি। এই বাক্যে উভয় ক্রিয়াপদের কর্তা ‘আমি’ এবং কর্ম ‘আম’।