* অনুচ্ছেদ রচনা
প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ বাংলা ২য় পত্র থেকে অনুচ্ছেদ রচনা নিয়ে আলোচনা করব।
৭. সকালবেলা
সকালবেলাটা আমার খুবই প্রিয় একটা সময়। আমি খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠি। হাতমুখ ধুয়ে বাড়ির পাশে নদীর তীরে হাঁটতে যাই। সেখান থেকে সকালের সূর্যোদয় খুবই সুন্দর লাগে। সকালে শীতল বাতাস আমার দেহ-মন জুড়িয়ে দেয়। নানা রকম পাখির কলকাকলিতে পরিবেশটা মুখরিত হয়ে ওঠে। এ সময় মসজিদে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা সমস্বরে পবিত্র কোরআন শরিফ তেলাওয়াত করে। কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে আমি বাড়ি ফিরে নাশতা করে পড়তে বসি। তারপর বন্ধুদের সঙ্গে মিলে স্কুলে যাই। ছুটির দিনে সকালবেলা আমি বাবাকে নানা কাজে সাহায্য করি। সকালবেলা তাড়াতাড়ি উঠলে আমার সারাটা দিন খুব ভালো কাটে।
৮. ঘরের সামনের রাস্তা
আমার ঘরের সামনে একটি পায়ে হাঁটা রাস্তা আছে। ঘর থেকেই রাস্তাটি দেখা যায়। রাস্তাটি শুরু হয়েছে পাশের গ্রাম থেকে। একটি বড় রাস্তার সঙ্গে গিয়ে এটি মিশেছে। সারা দিনই কত রকমের মানুষ যে এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে তার হিসাব নেই। অফিসের কর্মচারী, কৃষক, ছাত্রছাত্রী, দিনমজুর, ফেরিওয়ালা প্রভৃতি পেশার মানুষ সকালবেলা তাদের কর্মক্ষেত্রে যায় এ রাস্তা দিয়ে। কাজ শেষে বিকেলে আবার ফিরে আসে তাদের বাড়িতে এ রাস্তা দিয়েই। আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখি পথিকের আনাগোনা। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা—এক এক ঋতুতে রাস্তাটি এক এক রূপ ধারণ করে। পূর্ণিমার রাতে চাঁদের আলোয় রাস্তাটি খুব সুন্দর লাগে। তখন মনে হয় রাস্তাটি যেন চলে গেছে কোনো অজানার দেশে।
৯. একটি পুরোনো বটগাছের কথা
আমার জন্মসাল এখন আর মনে পড়ে না। তবে এ দেশের মানুষকে শ দুয়েক বছর ধরে দেখছি। অনেক সাধু-সন্ন্যাসী আমার ছায়ায় আস্তানা গেড়েছে। বাজার বসেছিল একটানা অনেক বছর। মাঝখানে শুধু মেলা বসত। যুদ্ধের বছরটাতে হাজার হাজার মানুষ চলার পথে আমার ছায়ায় শান্তি খুঁজেছে। অকারণে আমার ওপর অত্যাচারও কম হয়নি। অনেক ভয়ের কাহিনি আছে আমাকে নিয়ে। অনেক শুনেছি মানুষের কষ্টের কাহিনি, নীরব সাক্ষী হয়ে দেখেছিও অনেক। আমার ঝুরি ও ডালপালাগুলো দেখে বৃদ্ধ মনে হলেও এখনো আমি পাখির সঙ্গে, ফুলের সঙ্গে গাই যৌবনের গান। কালের সাক্ষী হিসেবে অনেক সম্মান পেয়েছি আমি। তবু মানুষের সেবা করতে পেরে ধন্য আমি। ধন্য আমার জন্ম।
১০. স্কুল লাইব্রেরি
আমাদের স্কুল লাইব্রেরিটি বেশ পুরোনো। স্কুলের প্রতিষ্ঠালগ্নেই এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রায় পাঁচ হাজার বই, দেশি-বিদেশি পত্রপত্রিকার এক সমৃদ্ধ সংগ্রহশালা এটি। চারটি সারিতে ছাত্রছাত্রীরা বসে পড়তে পারে। শিক্ষকদের বসার ব্যবস্থাটাও দারুণ। বহিরাগত পাঠকেরা বই ধার করে নিতে পারেন। সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত লাইব্রেরিটি খোলা থাকে। আগে স্কুল ভবনে থাকলেও এখন লাইব্রেরিটির জমি তার নিজস্ব। অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি এর সদস্য। প্রতিবছর একটি সাহিত্য সাময়িকী প্রকাশিত হয় এখান থেকে। আমার ছাত্রছাত্রীরা এখান থেকেই স্বপ্ন সাজায় ভবিষ্যতের। প্রধান শিক্ষক সবকিছু পরিচালনা করেন। তবে বাংলা বিভাগের শিক্ষকই লাইব্রেরির তত্ত্বাবধান করে থাকেন। এটি আমাদের সবার গর্ব।
শিক্ষক
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, ঢাকা