*সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ বিজ্ঞান বিষয়ের অধ্যায়-২ থেকে সৃজনশীল পদ্ধতির একটি নমুনা প্রশ্নোত্তর আলোচনা করা হলো।
প্রশ্ন:
ক. বংশগতি কাকে বলে?
খ. ক্রোমোজোমকে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয় কেন?
গ. চিত্রের কোষ বিভাজন-প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করো।
ঘ. প্রজাতির ধারাবাহিকতা রক্ষায় ওপরের বিভাজনটির ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।
উত্তর-ক
মাতা-পিতার বৈশিষ্ট্য যে প্রক্রিয়ায় সন্তানসন্ততিতে সঞ্চারিত হয়, তাকে বংশগতি বলে।
উত্তর-খ
নিউক্লিয়াসে অবস্থিত নির্দিষ্টসংখ্যক সুতার মতো যে অংশগুলো জীবের বংশগত বৈশিষ্ট্য বহন করে, তাকে ক্রেমোজোম বলে। ক্রোমোজোম বংশগতির ধারা অক্ষুণ্ন রাখার জন্য কোষ বিভাজনের সময় জিনকে সরাসরি মাতা-পিতা থেকে বহন করে পরবর্তী বংশধরে নিয়ে যায়। এ কারণে ক্রোমোজোমকে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয়।
উত্তর-গ
চিত্রে প্রদর্শিত কোষ বিভাজনটি মিয়োসিস। মিয়োসিস কোষ বিভাজনের মাধ্যমে একটি সুকেন্দ্রিক কোষ বিশেষ প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয়ে চারটি কোষে পরিণত হয়। এই বিভাজন-প্রক্রিয়ায় নিউক্লিয়াস দুবার কিন্তু ক্রোমোজোম একবার বিভক্ত হয় এবং নতুন সৃষ্ট কোষে ক্রেমোজোমের সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোমের সংখ্যার অর্ধেক হয়। এই কোষ বিভাজন ডিপ্লয়েড জীবের মাতৃজনন কোষে হয়। ফলে হ্যাপ্লয়েড গ্যামেট সৃষ্টি হয়।
উত্তর-ঘ
চিত্রে মিয়োসিস কোষ বিভাজন দেখানো হয়েছে। ডিপ্লয়েড জীবে জনন মাতৃকোষে মিয়োসিস কোষ বিভাজন ঘটে থাকে। মিয়োসিস কোষ বিভাজনের ফলে একটি মাতৃজনন কোষ বিভাজিত হয়ে চারটি কোষে পরিণত হয় এবং প্রতিটি কোষে ক্রেমোজোমের সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রেমোজোমের সংখ্যার অর্ধেক হয়। অর্থাত্ জননকোষে n সংখ্যক ক্রোমোজোম থাকে। জননকোষে ক্রোমোজমের সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোমের সংখ্যার অর্ধেক না হলে পুং ও স্ত্রী জননকোষের মিলনে সৃষ্ট জীবে ক্রোমোজোমের সংখ্যা দ্বিগুণ অর্থাত্ 4n হয়ে যেত। ফলে জীবের বৈশিষ্ট্যের ধারাবাহিকতা রক্ষা পেত না। যদি মিয়োসিস না ঘটত, তবে বংশানুক্রমে ক্রোমোজোমের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে দ্বিগুণ, চার গুণ, আট গুণ—এভাবে বাড়তে থাকত। ফলে প্রজাতির বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট হতো। সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে প্রজাতির ধারাবাহিকতা রক্ষায় চিত্রে প্রদর্শিত বিভাজনটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রভাষক
রূপনগর মডেল স্কুল ও কলেজ, ঢাকা