রান্নাঘরে চাই

এই ঈদে রান্নাঘরের ওপর চাপটা একটু বেশি থাকে। তাই এখন থেকেই রান্নাঘরের সব জিনিস গুছিয়ে ফেলতে হবে। প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো ঠিকমতো কিনে হাতের কাছেই রেখে দিতে হবে। এসব নিয়েই বিস্তারিত জানিয়েছেন গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের গৃহব্যবস্থাপনা ও গৃহায়ণ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রীনাত ফওজিয়া।
রান্নাঘরের প্রস্তুতি
l যেহেতু কোরবানির ঈদ, তাই ছুরি, কাঁচি, বঁটি—এসব জরুরি জিনিস আগে থেকেই শাণ দিয়ে রাখা প্রয়োজন।
l মসলা পেষার জন্য শিল-নোড়া কাটানো বা ধার করানো প্রয়োজন।
l কী রাঁধবেন—সম্ভব হলে এখনই ঠিক করে ফেলুন। তারপর সে অনুযায়ী উপকরণগুলো গুছিয়ে রাখুন। রান্নার প্রয়োজনীয় সব উপকরণ চোখ বরাবর দেয়ালসংলগ্ন ক্যাবিনেটে রাখলে প্রয়োজনের সময় সহজেই পাওয়া যাবে।
l রান্নাঘরে ময়লা যেন চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে না থাকে, সে জন্য ঢাকনাওয়ালা ডাস্টবিন ব্যবহার করতে হবে।
l রান্না করা খাবারে যেন পিঁপড়ায় সংক্রমণ না করতে পারে, এ জন্য বাজারের বিভিন্ন ধরনের জলকান্দা পাওয়া যায়। সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
l কিচেন ক্যাবিনেটের নিরাপদ স্থানে দা, বঁটি, ছুরি ইত্যাদি রেখে দিতে হবে।
l বাজারে বিভিন্ন ধরনের ট্রে পাওয়া যায়। এর একটিতে বড় হাতলের চামচ, অন্যটিতে টেবিল চামচ, ছোট হাতলের চামচ, সবজি কুচি করার যন্ত্র—এভাবে পৃথক করে রাখলে স্বল্প সময়ে রান্নাঘরের কাজ দ্রুত শেষ করা যায়।
l রান্নাঘরের মেঝে ও কাঠের আসবাব পরিষ্কার করার জন্য ফ্লোর ক্লিনার বা কাঠের জিনিস পরিষ্কারের ক্লিনার বাজারে পাওয়া যায়। এগুলো কিনে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
l ওভেন, রাইসকুকার, ব্লেন্ডার, ফুড প্রসেসর—এগুলো ঈদের অন্তত এক সপ্তাহ আগে থেকে পরিষ্কার করতে হবে।
ঈদের আগে রান্নার প্রস্তুতি
ঈদের দিন অতিথি আপ্যায়ন ও রান্নার আয়োজন নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন উপস্থাপক ও রান্নাবিদ শারমিন লাকী।
আপ্যায়নের প্রস্তুতি
l এখনই ফ্রিজ ও ডিপফ্রিজ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। ফ্রিজের বরফ গলিয়ে নিন। এরপর লেবুর রস পানিতে মিশিয়ে তা দিয়ে কাপড় ভিজিয়ে ফ্রিজের ভেতরটা মুছে নিন।
l মাংসের জন্য আদা, পেঁয়াজ, রসুন, গরম মসলা, হলুদ, গোলমরিচ, মরিচ, জায়ফল, জয়ত্রী, তেজপাতা, শাহি জিরা, পোস্তদানা, পেস্তাবাদাম, সয়াসস, বারবিকিউ সস, ওয়েস্টার সস, ভিনেগার, টক দই—এসব কিনে রাখুন। ভিন্নধর্মী কোনো খাবার রান্নার পরিকল্পনা থাকলে তার উপকরণও এখনই জোগাড় করে ফেলুন। অনেক সময় ঈদের ঠিক আগের দিন এসব বাজারে পাওয়া মুশকিল হয়ে যেতে পারে।
l ঈদের দিন বিশেষ রেসিপিতে কয়টা পদ করা হবে, তার পরিকল্পনা আগে থেকে করে রাখতে হবে। সে অনুযায়ী রেসিপির তালিকা করতে হবে, যেন শেষ পর্যন্ত রান্নার কোনো উপকরণ বাদ না পড়ে।
l বিশেষ পদ তৈরির ক্ষেত্রে ঈদের কয়েক দিন আগে থেকে সবজি, মাশরুম, ক্যাপসিকাম ইত্যাদি কিনে ফ্রিজে রাখতে হবে।
l বিভিন্ন ধরনের মজাদার খাবার পরিবেশনের জন্য সুন্দর সার্ভিং ডিশ ও বড় বাটি এখন থেকেই কিনে নিতে পারেন। বাজারে বার্নারসহ ট্রে পাওয়া যায়, সেগুলো কিনতে পারেন।
l ঈদের দিন সাধারণত দুপুর ১২টা থেকে বেলা একটার মধ্যে কলিজা চলে আসে। কলিজার সঙ্গে পোলাওয়ের চেয়ে পরোটা খেতে অনেকে পছন্দ করেন। তাই পরোটা সকালেই বানিয়ে রাখতে পারেন।
l এ ছাড়া দেশি ফল যেমন: পেয়ারা, জাম্বুরা, আনারস, আমড়া—এসবের সঙ্গে পাপড়ি চাট বা চটপটির মসলা ও সামান্য বিটলবণ দিয়ে ফ্রুট ককটেল ও সালাদ তৈরি করে পরিবেশন করতে পারেন।
l যেহেতু মাংসের তৈরি বিভিন্ন খাবার এই ঈদে বেশি খাওয়া হয়, তাই এগুলোর পাশাপাশি টক দই রাখতে হবে।
l ঈদের আগের দিন মিষ্টি কিছু খাবার যেমন: পায়েস, ফিরনি, সেমাই—এগুলো রান্না করে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। মাংসের তৈরি খাবারের সঙ্গে আচার বা চাটনি দেওয়া যেতে পারে।