শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবার বন্ধ করতে চাই না: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি
ফাইল ছবি

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, করোনার কারণে আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে চাই না। এ জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। একই সঙ্গে অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সচেতন থাকতে হবে।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) নতুন শিক্ষাক্রমের পরীক্ষামূলক কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন। করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে দ্বিতীয় ধাপে এক মাস বন্ধের পর আজই দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সশরীর ক্লাস শুরু হয়েছে। প্রথম দফায় আজ খুলেছে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। আগামী ২ মার্চ খুলবে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দিনেই দেশের ৬২টি মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পরীক্ষামূলকভাবে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হয়েছে।

এনসিটিবির সূত্রমতে, এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে চালুর পর ২০২৩ সালে প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে, ২০২৪ সালে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। উচ্চমাধ্যমিকের একাদশ শ্রেণিতে ২০২৬ সালে এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে ২০২৭ সালে নতুন শিক্ষাক্রম চালু করার সময়সীমা ঠিক করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ব্যবস্থায় বড় রকমের পরিবর্তন হবে। প্রাক্-প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বিদ্যমান পরীক্ষার চেয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিক মূল্যায়ন (শিখনকালীন) বেশি হবে। এর মধ্যে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা হবে না, মূল্যায়ন হবে সারা বছর ধরে চলা বিভিন্ন রকমের শিখন কার্যক্রমের ভিত্তিতে। পরবর্তী শ্রেণিগুলোর মূল্যায়নের পদ্ধতি হিসেবে পরীক্ষা ও ধারাবাহিক শিখন কার্যক্রম দুটিই থাকছে। আর দশম শ্রেণির আগপর্যন্ত কোনো পাবলিক পরীক্ষা না নেওয়ার কথা রয়েছে এই শিক্ষাক্রমে।

নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, ২০২৪ সাল থেকে মাধ্যমিক শিক্ষায় আলাদা কোনো বিভাগ থাকছে না। এখন নবম শ্রেণিতে যেভাবে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বেছে নিতে হয়, শিক্ষার্থীদের সে রকম কোনো ভাগ তখন আর থাকবে না। দশম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীকে অভিন্ন ১০টি বিষয় পড়তে হবে। বিভাগ বিভাজন হবে উচ্চমাধ্যমিকে গিয়ে। আর আগামী বছর (২০২৩) থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন হবে।

এনসিটিবি মিলনায়তন থেকে দেশের ৬২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করে নতুন শিক্ষাক্রমের পরীক্ষামূলক কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীরা নিজেরা করে করে শিখবে। শিক্ষার্থীরা দক্ষ, যোগ্য ও মানবিক বোধসম্পন্ন হয়ে গড়ে উঠবে। পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের কোথায় কোথায় সমস্যা আছে, তা জানাতে শিক্ষক, অভিভাবকসহ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক, এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান প্রমুখ।