চুয়েটে জাতীয় রোবোটিকস ও প্রযুক্তি উৎসব শুরু

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) আজ বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে জাতীয় রোবোটিকস ও প্রযুক্তি উৎসব। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকাট্রনিকস ও শিল্প প্রকৌশল বিভাগের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো তিন দিনব্যাপী এ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।

আজ সকাল ৯টায় কেক কাটা ও আনন্দ শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসবের অনুষ্ঠানমালা। আনন্দ শোভাযাত্রাটি মেকাট্রনিকস ও শিল্প প্রকৌশল বিভাগের সামনে থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে গিয়ে শেষ হয়। বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূঁইয়া। এরপর একটি কারিগরি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় রোবোটিকস ও প্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানান চুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক সজল চন্দ্র বণিক, রুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. রুকনুজ্জামান, ট্রান্সকম লিমিটেডের প্ল্যান্ট ব্যবস্থাপক শুভদীপ ভট্টাচার্য, ইলেকটিক লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইব্রাহীম, সিমেন্সের টিম লিড মিঠু কুমার ভৌমিক ও বাংলাদেশ স্টিল রোলিং লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. শহীদুল ইসলাম। বেলা তিনটায় মেকাট্রনিকস ও শিল্প প্রকৌশল বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় অন্তর্বিভাগ ক্রিকেট প্রতিযোগিতা।

উপাচার্য মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূঁইয়া বলেন, ‘রোবটের ক্রমবর্ধমান ব্যবহার বৈশ্বিক অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে। এরই মধ্যে রোবটের ব্যবহার শ্রমবাজারে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। যেসব কাজ যান্ত্রিক ও পুনরাবৃত্তিমূলক, সেসব ক্ষেত্রে রোবট মানুষের বিকল্প হিসেবে কাজ করছে। তাই বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তথ্যপ্রযুক্তিগতভাবে এগিয়ে যেতে রোবোটিকস ও বিজ্ঞানচর্চার কোনো বিকল্প নেই। তরুণ প্রজন্মকে রোবোটিকস শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করতে এ ধরনের আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি। শিক্ষার্থীরা রোবোটিকসে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসার মাধ্যমে নিজেদের মেধা বিকশিত করার সুযোগ পাবে।’

এ উৎসবে থাকছে বিভিন্ন পর্যায়ের সাতটি প্রতিযোগিতা। আগামীকাল শুক্রবার দ্বিতীয় দিনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে লাইন অনুসরণকারী রোবট, রোবো ফুটবল ও হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের সমন্বয়ে বাস্তব সমস্যা সমাধান প্রতিযোগিতা।

আগামী শনিবার শেষ দিনে রয়েছে প্রজেক্ট প্রদর্শনী, সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকশা তৈরি ও দাবা প্রতিযোগিতা। এদিন সন্ধ্যায় সমাপনী অনুষ্ঠান ও বিভাগের শিক্ষার্থীদের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ উৎসব।

আরও পড়ুন

আয়োজকেরা জানান, বুয়েট, কুয়েট, রুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৪১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০০–এর অধিক প্রতিযোগী উৎসবে অংশ নিয়েছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন শিল্পকারখানার প্রতিনিধিরাও অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।

মেকাট্রনিকস ও শিল্প প্রকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রসঞ্জীত দাশ প্রথম আলোকে বলেন, ‘রোবোটিকস ও বিজ্ঞান নিয়ে জাতীয় পর্যায়ের এই আয়োজন শিক্ষার্থীদের রোবোটিকস চর্চায় আগ্রহী করে তুলতে সাহায্য করবে। শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী চিন্তা ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বৃদ্ধি ও বর্তমান বিশ্বের ক্রমবর্ধমান প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেই আমরা এ উৎসবের আয়োজন করেছি। এখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৭০০–এর অধিক শিক্ষার্থী, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিল্পকারখানার প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তির বিভিন্ন প্রায়োগিক দিক সম্পর্কে শেখার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ পাবে।’

এ উৎসবের সহযোগী পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে প্রথম আলো।

আরও পড়ুন