ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসন নিশ্চিত করার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও প্রতীকী অনশন পালনের ঘোষণা দিয়েছেন ছাত্রীরা। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আগামীকাল সোমবার ওই কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে আজ রোববার বিকেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওই কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামীকাল সকাল ১০টা থেকে অবস্থান কর্মসূচি ও প্রতীকী অনশনের কর্মসূচি পালন করবেন ছাত্রীরা। এ সময় সাতটি দাবি তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ২৯ ডিসেম্বর নারী শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসিকীকরণের দাবিতে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। সেই দাবিগুলো তুলে ধরে তিনি বলেন, স্মারকলিপিতে উল্লেখিত অধিকাংশ দাবি পূরণ করতেই প্রশাসন একপ্রকার অপারগতা প্রকাশ করে। পরে ছাত্রীরা কোষাধ্যক্ষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তিনি ছাত্রীদের আবাসিক হলে সিট স্বল্পতা ও গৃহীত মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
ইসরাত জাহান বলেন, কোষাধ্যক্ষ আশ্বস্ত করেছেন আগামী তিন বছরের মধ্যে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন হল নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার আগপর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সিট সংকট সমাধানের কোনো অস্থায়ী ব্যবস্থা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া সম্ভব নয়। ইসরাত আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের অর্থসহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা নিলেও প্রশাসন আবাসিকীকরণের দায়িত্ব নিতে অনিচ্ছুক। উপরন্তু অর্থসহায়তা কবে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছাবে, সে সম্পর্কেও সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
অস্থায়ী আবাসন ও পরবর্তী সময়ে মূল ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থীদের স্থায়ী আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত হওয়ার আগপর্যন্ত কর্মসূচি চলমান থাকবে বলে জানান ইসরাত জাহান।
সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবিদাওয়া পূরণের জন্য ডাকসু নির্বাচন জরুরি বলেও মন্তব্য করেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে গত বুধবার উপাচার্যকে দেওয়া স্মারকলিপিতে ছাত্রীদের উল্লেখ করা দাবিগুলো হলো: ১. প্রথম বর্ষেই শতভাগ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে; ২. অবিলম্বে গণরুম বিলুপ্ত করে পর্যাপ্ত আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে; ৩. নতুন ছাত্রী হল চালু না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানাধীন ভবনে বা ক্যাম্পাস–সংলগ্ন এলাকায় ভবন ভাড়া নিয়ে ছাত্রীদের অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। এ বিষয়ে দ্রুত প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে; ৪. ছাত্রীদের নতুন হল মূল ক্যাম্পাসের ভেতরেই নির্মাণ এবং দ্রুত নির্মাণকাজ দৃশ্যমান করতে হবে। ৫. অনতিবিলম্বে অনাবাসিক ছাত্রীদের হলে প্রবেশের সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে এবং হলের ডাইনিংসহ অন্যান্য সুবিধা গ্রহণের অনুমতি দিতে হবে; ৬. ক্রমান্বয়ে প্রতিটি হলে ডাবলিং ব্যবস্থা তুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের আবাসনের সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে; এবং ৭. নতুন ভবনে স্থানান্তরের মাধ্যমে কুয়েত মৈত্রী হল এবং শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রীদের ধারাবাহিকভাবে মূল ক্যাম্পাসে নিতে হবে।