মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা কাল, জেনে নিন নম্বর বণ্টনসহ খুঁটিনাটি
দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা আগামীকাল শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ১ ঘণ্টার এ পরীক্ষা দেশের ১৯টি পরীক্ষাকেন্দ্রের একাধিক ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে।
এবার আবেদন জমা পড়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ২৬১টি। কোটাসহ মেডিকেলে মোট আসন ৫ হাজার ৩৮০টি। এ হিসাবে এই বছর ১টি আসনের জন্য ২৫ জন (২৫ দশমিক ১৪) পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবেন। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে একই আসনের বিপরীতে ১ লাখ ৪ হাজার ৪৪ শিক্ষার্থী মেডিকেল কলেজগুলোয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন করেছিলেন। সে হিসাবে ওই বছর আসনপ্রতি ১৯ দশমিক ৩৪ শিক্ষার্থী আবেদন করেছিলেন। এ বছর আসনপ্রতি ছয়জন প্রতিদ্বন্দ্বী পরীক্ষার্থী বেড়েছে।
এবার দ্বিতীয়বার পরীক্ষার জন্য আগের এইচএসসি ও সমমান পাস করা প্রার্থীদের ৩ এবং মেডিকেলে ভর্তি প্রার্থীদের ৬ নম্বর কেটে মেধা তালিকা করা হবে।
পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্দেশনা
এদিকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের সকাল সাড়ে ৯টার আগেই কেন্দ্রে প্রবেশ করাসহ বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্দেশনাগুলো হলো—
*পরীক্ষাকেন্দ্র/ভেন্যুর গেট খুলবে সকাল ৮টায়। পরীক্ষার দিন সকাল সাড়ে ৯টার পর কোনো পরীক্ষার্থী হলে প্রবেশ করতে পারবেন না; পরীক্ষার্থীরা প্রবেশপত্রের রঙিন প্রিন্ট কপি নিয়ে আসবেন
*কেন্দ্র/ভেন্যুতে পরীক্ষার্থীদের (ছেলে ও মেয়ে) পৃথক পৃথক তল্লাশির ব্যবস্থা থাকবে। পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন, ক্যালকুলেটর, হাতঘড়িসহ অন্য ডিজিটাল ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ। ডিভাইস পাওয়া গেলে অথবা কাউকে এ ধরনের কোনো ডিভাইস ব্যবহার করতে দেখা গেলে তাঁর উত্তরপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে
*ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র/ভেন্যুতে সকাল ৮টা থেকে শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করতে ইনভিজিলেটররা (কক্ষ পরিদর্শক) সকাল ৮টা হতে পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত কক্ষে অবস্থান করে প্রবেশপত্রে পরীক্ষার্থীর ছবির জলছাপ ও রঙিন ছবির সঙ্গে পরীক্ষার্থীর চেহারা মিলিয়ে পরীক্ষাকক্ষে প্রবেশের অনুমতি দেবেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কেন্দ্রে উপস্থিত থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন
*পরীক্ষার্থী, ইনভিজিলেটর ও ভেন্যুর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মন্ত্রণালয়/অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কোনোভাবেই মোবাইল, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ব্লুটুথ, এয়ারফোন, ইত্যাদি বহন করবেন না। ভর্তি পরীক্ষার হলে ভর্তি পরীক্ষা–সংশ্লিষ্ট কাজের সঙ্গে জড়িত কেউ মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না
*ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র/ভেন্যুতে ভর্তি পরীক্ষা–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি প্রবেশ করতে পারবে না; পরীক্ষার দিন পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোয় আশপাশের ফটোকপি মেশিন বন্ধ থাকবে; পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেকোনো প্রকার অসদাচরণ, প্রতারণা বা গুজব ছড়ানোর সঙ্গে জড়িত কাউকে চিহ্নিত করা গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দেশে মেডিকেল কলেজ ১১০টি। এর মধ্যে সরকারি মেডিকেল কলেজ ৩৭টি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ৬৭টি। এ ছাড়া একটি আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ ও পাঁচটি বেসরকারি আর্মি মেডিকেল কলেজ আছে। সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে হয় মেধাতালিকার ভিত্তিতে। আর ভালো কলেজে ভর্তি হন তালিকার ওপরে থাকা শিক্ষার্থীরা।
লিখিত ভর্তি পরীক্ষা কীভাবে
লিখিত ভর্তি পরীক্ষা এইচএসসি পরীক্ষার সিলেবাস অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। লিখিত ভর্তি পরীক্ষায় ১০০টি প্রশ্নের প্রতিটি ১ নম্বর করে মোট নম্বর ১০০।
লিখিত পরীক্ষার নম্বর বিভাজন কীভাবে
বিষয়ভিত্তিক নম্বর বিভাজন থাকবে জীববিজ্ঞানে ৩০, রসায়নে ২৫, পদার্থবিজ্ঞানে ২০, ইংরেজিতে ১৫ ও সাধারণ জ্ঞানে (বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি) ১০। পরীক্ষার সময় ১ (এক) ঘণ্টা। লিখিত পরীক্ষায় প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক উত্তরের জন্য ১ (এক) নম্বর প্রদান করা হবে। কোনো প্রশ্নের একাধিক উত্তর প্রদান করলে উত্তরটি ভুল বলে গণ্য হবে। প্রতিটি ভুল উত্তর প্রদানের জন্য শূন্য দশমিক ২৫ নম্বর কাটা হবে। লিখিত পরীক্ষায় ৪০ (চল্লিশ) নম্বরের কম প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা দেশে ভর্তি ও বিদেশে এমবিবিএস বা সমতুল্য কোর্সে ভর্তির অনুমতির জন্য অকৃতকার্য হিসেবে বিবেচিত হবেন। লিখিত পরীক্ষায় কৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের মেধাক্রমসহ ফল প্রকাশ করা হবে।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) প্রণীত মেডিকেল এবং ডেন্টাল কলেজ/ইউনিটে এমবিবিএস এবং বিডিএস কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি নীতিমালা-২০২৫ আগেই প্রকাশ করেছে। এবার ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তিতে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য দুভাবে নম্বর কাটার কথা বলা হয়েছে। এবারও পাস নম্বর ৪০।
এবার দ্বিতীয়বার পরীক্ষার জন্য আগের এইচএসসি ও সমমান পাস করা প্রার্থীদের ৩ এবং মেডিকেলে ভর্তি প্রার্থীদের ৬ নম্বর কেটে মেধা তালিকা করা হবে।
এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ মোট ১০০ নম্বর হিসাবে নির্ধারণ করা হবে। এসএসসি/সমমান ও এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ এবং জাতীয় ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধা তালিকা তৈরি করে শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে।
সদ্য এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএর ১০ গুণের সঙ্গে এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএর ১০ গুণ এবং ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের যোগফলের ভিত্তিতে মেধাতালিকা তৈরি করা হবে।