ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আবেদনে শিক্ষার্থীদের জন্য যে ৫ পরামর্শ

ফাইল ছবিপ্রথম আলো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষার আবেদন গতকাল সোমবার বিকেল চারটার পর থেকে শুরু হয়েছে। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারছেন। এর আগে বিকেল চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান প্রশাসনিক ভবনে অধ্যাপক আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চ্যুয়াল ক্লাসরুমে আনুষ্ঠানিকভাবে অনলাইন ভর্তি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির নির্ধারিত ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে পারছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য পাঁচটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে। এসব পরামর্শ অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছে।

৫ পরামর্শের হলো—
১. অনাকাঙ্ক্ষিত বিভ্রান্তি এড়াতে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন শিক্ষার্থীদের নিজে করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। নিজে সম্ভব না হলে তাঁর পক্ষে অন্য কেউ আবেদন করার সময় পাশে দাঁড়িয়ে খেয়াল রাখার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। অতীতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের ভুলের কারণে অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি;
২. আবেদনের সময়ের সঙ্গে পরীক্ষার আসনের অবস্থানের কোনো যোগসূত্র নেই। আবেদন গ্রহণের শুরু ও শেষ তারিখে আবেদন করা দুজন শিক্ষার্থীর একই কেন্দ্রে একই কক্ষে আসনের বণ্টন হতে পারে;
৩. চারুকলা ইউনিটের পরীক্ষাকেন্দ্র শুধু ঢাকা শহরে থাকবে;
৪. কোনো বিভাগীয় শহরে আসনসংখ্যার কোনো সীমা নেই। একটি বিভাগীয় শহরে আবেদন করা সবার পরীক্ষাই সে বিভাগে গ্রহণ করা হবে (চারুকলা ইউনিট ব্যতীত);
৫. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিসংক্রান্ত তথ্যাবলি কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ বা লিংকডিন) প্রচার করা হয় না। ভর্তিসংক্রান্ত সব তথ্য শুধু ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়। তাই সঠিক তথ্যের জন্য কোনো সামাজিক মাধ্যমে অনুসরণ না করে উপরিউক্ত ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য ও নির্দেশাবলি দেখার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়।

আবেদন কীভাবে করবেন শিক্ষার্থীরা, তার বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ওয়েবসাইটে। আবেদনের জন্য পাঁচটি ধাপের কথা বলা হয়েছে।
১. লগইন করে প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে হবে। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার তথ্য দিতে হবে।
২. শিক্ষার্থীদের বিস্তারিত প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে হবে। প্রশ্ন ও উত্তরপত্রের ভাষা (যে ভাষায় পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক) দিতে হবে, বর্তমান ঠিকানা, মুঠোফোন নম্বর, ই-মেইল (অবশ্যই ব্যক্তিগত), পিতা–মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর (ঐচ্ছিক) ও পেশা, কোটা (বিস্তারিত ভর্তি নির্দেশনায় মিলবে)। আর যে বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক, তা উল্লেখ করতে হবে।
৩. ছবির জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে হবে।
দৈর্ঘ্য: ৩৬০-৫৪০ পিক্সেল
প্রস্থ: ৫৪০-৭২০ পিক্সেল
সাইজ: ৩০-২০০ কেবি
টাইপ: .jpg or .jpeg
৪. পাসওয়ার্ড দিতে হবে। টেলিটক, বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেল মুঠোফোন নম্বর থেকে খুদে বার্তা (এসএমএস) পাঠানো যাবে। তবে অবশ্যই আবেদনকারীর ব্যক্তিগত মুঠোফোন নম্বর ব্যবহার করতে হবে।
৫. শেষে ১০০০ টাকা ফি প্রদান করতে হবে। আবেদন ফি মোবাইল ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী ব্যাংকের ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড দিয়ে ফি প্রদান করা হবে।

আবেদন কত দিন চলবে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ১০০০ টাকা ফি দিয়ে আবেদন করতে পারছেন। অনলাইনে আবেদন করা যাবে আগামী ২০ মার্চ পর্যন্ত।

পরীক্ষা কবে

আগামী ২৯ এপ্রিল চারুকলা ইউনিটের (সাধারণ জ্ঞান ও অঙ্কন) মধ্য দিয়ে শুরু হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এবারের ভর্তি পরীক্ষা। এরপর আগামী ৬ মে কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিট, ১২ মে বিজ্ঞান ইউনিট এবং ১৩ মে অনুষ্ঠিত হবে ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা। চারুকলা ইউনিট ছাড়া অন্য তিনটি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ঢাকাসহ দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে অনুষ্ঠিত হবে। চারুকলার পরীক্ষা হবে ঢাকা কেন্দ্রে। সব ইউনিটের পরীক্ষাই হবে সংশ্লিষ্ট তারিখে বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত।

প্রবেশপত্র ডাউনলোড কবে

আগামী ১৮ এপ্রিল থেকে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করা যাবে। সংশ্লিষ্ট ইউনিটের পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগপর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র ডাউনলোড করা যাবে।

আবেদনের যোগ্যতা

এর আগে গত ১২ জানুয়ারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবারের ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতা ও মানবণ্টনের বিস্তারিত জানিয়েছে। এতে বলা হয়, এবারের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে হলে আবেদনকারীদের ন্যূনতম যোগ্যতা হিসেবে ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মাধ্যমিক (এসএসসি) বা সমমান এবং ২০২২ সালের উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। বিজ্ঞান ইউনিটের জন্য এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার (চতুর্থ বিষয়সহ) জিপিএর যোগফল ন্যূনতম ৮ ও আলাদাভাবে ৩ দশমিক ৫০; কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের জন্য দুই জিপিএর যোগফল ন্যূনতম ৭ দশমিক ৫০ ও আলাদাভাবে ৩; ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের জন্য এসএসসি-এইচএসসির জিপিএর যোগফল ন্যূনতম ৭ দশমিক ৫০ ও আলাদাভাবে ৩ এবং চারুকলা ইউনিটের জন্য জিপিএর যোগফল ন্যূনতম ৬ দশমিক ৫০ ও আলাদাভাবে ৩ থাকতে হবে।

ভর্তি পরীক্ষার মানবণ্টন কীভাবে

চারুকলা ইউনিট ছাড়া অন্যান্য ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় এবার ৬০ নম্বরের বহুনির্বাচনী ও ৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হবে। শুধু চারুকলা ইউনিটের পরীক্ষায় ৪০ নম্বরের বহুনির্বাচনী ও ৬০ নম্বরের অঙ্কন পরীক্ষা হবে। চারুকলা ইউনিটের বহুনির্বাচনী পরীক্ষার জন্য ৩০ মিনিট ও লিখিত পরীক্ষার জন্য ৬০ মিনিট সময় থাকবে। অন্যান্য ইউনিটের বহুনির্বাচনী পরীক্ষার জন্য ৪৫ মিনিট ও লিখিত পরীক্ষার জন্য ৪৫ মিনিট সময় থাকবে। ভর্তি পরীক্ষায় মোট ১২০ নম্বরের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। এর মধ্যে ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ এবং এসএসসি বা সমমান ও উচ্চমাধ্যমিক বা সমমান পরীক্ষার ফলাফলের ওপর থাকবে ২০ নম্বর।