একাদশে ভর্তিতে তিন ধাপে আবেদন, গ্রুপ নির্বাচন যেভাবে

এবারও তিন পর্যায়ে একাদশে ভর্তিতে আবেদন গ্রহণ করা হবে। ভর্তির জন্য কোনো পরীক্ষা হবে না।
ফাইল ছবি

চলতি বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাস করেছে ১৬ লাখ ৪১ হাজার ১৪০ জন শিক্ষার্থী। পাস করা শিক্ষার্থীদের একাদশে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু ১০ আগস্টে। অনলাইনে আবেদন চলবে ২০ আগস্ট পর্যন্ত। এবারও তিন পর্যায়ে আবেদন গ্রহণ করা হবে। ভর্তির জন্য কোনো পরীক্ষা হবে না।

গতকাল রোববার ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অবশ্য গত সোমবার এক সভায় এই নীতিমালা ঠিক করা হয়।

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালায় বলা হয়েছে, তিন ধাপে আবেদনপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভর্তির কাজ শেষে আগামী ৮ অক্টোবরে শুরু হবে একাদশ শ্রেণির ক্লাস। ভর্তির সময় এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ঢাকা মহানগরে পাঁচ হাজার টাকা সেশন চার্জ ও ভর্তি ফি নেওয়া যাবে। ঢাকা মহানগর ছাড়া অন্য মহানগর এলাকায় তিন হাজার, জেলায় দুই হাজার ও উপজেলা বা মফস্‌সল এলাকায় দেড় হাজার টাকা দেওয়া যাবে। এ ছাড়া এমপিওভুক্ত নয়, এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে উন্নয়ন ফি, সেশন চার্জ ও ভর্তি ফি কত নেওয়া যাবে, সেটিও নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ঢাকা মহানগরে বাংলা ভার্সনে সাড়ে সাত হাজার ও ইংরেজি ভার্সনে সাড়ে আট হাজার টাকা নেওয়া যাবে।

কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পেয়ে বিজয় সূচক চিহ্ন দেখাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, বরিশাল নগর, ২৮ জুলাই
ছবি: সাইয়ান

ঢাকা মহানগর বাদে অন্যান্য মহানগর এলাকায় বাংলা ভার্সনে পাঁচ হাজার ও ইংরেজি ভার্সনে ছয় হাজার টাকা, জেলা পর্যায়ে বাংলা ভার্সনে তিন হাজার ও ইংরেজি ভার্সনে চার হাজার টাকা এবং উপজেলা ও মফস্‌সল এলাকায় বাংলা ভার্সনে আড়াই হাজার ও ইংরেজি ভার্সনে তিন হাজার টাকা নেওয়া যাবে।

একাদশে ভর্তির নীতিমালা দেখুন এখানে.pdf

প্রথম পর্যায়ের নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর। এরপর ১৬ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় এবং ২৩ সেপ্টেম্বর তৃতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ করা হবে। তিন ধাপের ফল প্রকাশের পর ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিপ্রক্রিয়া চলবে। ক্লাস শুরু হবে ৮ অক্টোবর থেকে।

অনলাইনে আবেদনপ্রক্রিয়া কীভাবে

অনলাইনে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একাদশে ভর্তির আবেদন করতে পারবে। ১৫০ টাকা আবেদন ফি জমা দিয়ে সর্বনিম্ন ৫টি এবং সর্বোচ্চ ১০টি কলেজে ভর্তির পছন্দক্রম দেওয়া যাবে আবেদনে। একজন শিক্ষার্থী যতগুলো কলেজে আবেদন করবে, তার মধ্য থেকে তার মেধা, কোটা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি কলেজে তার অবস্থান নির্ধারণ করা হবে প্রকাশিত ফলাফলে।

গ্রুপ নির্বাচন যেভাবে

বিজ্ঞান গ্রুপ থেকে এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের যেকোনো একটি নির্বাচন করতে পারবেন। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপ থেকে উত্তীর্ণরা এ দুই গ্রুপের যেকোনো একটি নির্বাচন করতে পারবেন। দাখিল উত্তীর্ণ বিজ্ঞান গ্রুপের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের যেকোনো একটি ও সাধারণ গ্রুপ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের যেকোনো একটি নির্বাচন করতে পারবেন। ভর্তির জন্য কোনো পরীক্ষা হবে না, শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে।

তিন ধাপে আবেদন ও ফল প্রকাশ

প্রথম ধাপে অনলাইনে একাদশে ভর্তির আবেদন চলবে ১০ থেকে ২০ আগস্ট। তবে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে অনলাইন আবেদন ও কল সেন্টার বন্ধ থাকবে। ২১ থেকে ২৪ আগস্ট আবেদন যাচাই–বাছাই করা হবে। ৩১ আগস্ট পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে ফল বদলানো শিক্ষার্থীদের আবেদনের সুযোগ দেওয়া হবে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর রাত আটটায় প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে। ৭ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর নির্বাচনে নিশ্চায়নের সুযোগ পাবেন প্রথম ধাপে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা।

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ফলাফল পেয়ে রাজধানীর রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের শিক্ষার্থীদের উল্লাস। তবে এমন উল্লাস করতে পারেনি ৪৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা
ছবি: খালেদ সরকার

১২ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর রাত আটটা পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপের আবেদন নিয়ে ফল প্রকাশ করা হতে পারে ১৬ সেপ্টেম্বর। একই দিন রাত আটটায় প্রথম মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ করা হবে। ১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচিতরা নির্বাচন নিশ্চায়নের সুযোগ পাবেন। আর ২০ ও ২১ সেপ্টেম্বর তৃতীয় পর্যায়ের আবেদন নিয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর ফল প্রকাশ করা হবে। ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বর তৃতীয় ধাপের নির্বাচন নিশ্চায়ন চলবে।

গত ২৮ জুলাই এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে ১১ শিক্ষা বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ৪১ হাজার ৪৫০ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৬ লাখ ৪১ হাজার ১৪০ জন। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা এখন একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির চেষ্টা করবে।