গণপরিবহন ধর্মঘটে দুর্ভোগে চুয়েটে ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থীরা
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) তিন বাসে আগুন দেওয়া, পরিবহনমালিক এবং শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার, মুক্তিসহ চার দাবিতে আজ সকাল ছয়টা থেকে চট্টগ্রামের পাঁচ জেলায় ধর্মঘট পালন করছেন গণপরিবহনের মালিক ও শ্রমিকেরা। এ অবস্থায় আজ রোববার থেকে শুরু হয়েছে সমন্বিত প্রকৌশল গুচ্ছের ভর্তি কার্যক্রম। চট্টগ্রামে গণপরিবহন ধর্মঘটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন চুয়েটে ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থীরা। গণপরিবহন না থাকায় সড়কে বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে তাঁদের।
কুমিল্লা থেকে ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গণপরিবহন না থাকায় আমাদের কিছুটা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়েছে। গণপরিবহন না থাকায় অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে এসেছি। এতে আমাদের বেশি ভাড়া গুনতে হয়েছে। সেই সাথে সময়ও বেশি লেগেছে।’
আরেক শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব বলেন, ‘গণপরিবহন ধর্মঘটের বিষয়ে জানতে পেরে চুয়েটে ঠিকঠাক পৌঁছাতে পারব কি না, তা নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। তবে চুয়েট প্রশাসন আমাদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করে দেওয়ায় কোনো সমস্যা ছাড়াই নির্বিঘ্নে আমরা আসতে পেরেছি।’
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আসা অভিভাবক আবদুল আওয়াল পাটোয়ারী এবং বিরু তালুকদার বলেন, ‘গণপরিবহন না চলায় আমাদের বিকল্প যানবাহনের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে, যার জন্য কিছুটা বেশি ভাড়া দিতে হয়েছে। তবে চুয়েটে আসার পর থেকে প্রশাসন আমাদের সব ধরনের সহযোগিতা করছে।’
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়ক কমিটির সভাপতি চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক সুদীপ কুমার পাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভর্তি কার্যক্রম নির্বিঘ্নে চলছে। ধর্মঘটের কথা মাথায় রেখে আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য দুটি বাসের ব্যবস্থা করেছিলাম। কোনো শিক্ষার্থী কোনো সমস্যায় পড়ে আমাদের জানালে আমরা তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে ভর্তি কার্যক্রম আরও দুই ঘণ্টা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০ ভাগ শিক্ষার্থী এখানে এসে উপস্থিত হয়েছে।’
গত সোমবার বেলা সাড়ে তিনটায় মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে বাসের ধাক্কায় নিহত হন চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা (২২) ও দ্বিতীয় বর্ষের তৌফিক হোসাইন (২১)। আহত হন জাকারিয়া হিমু (২১)। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে চট্টগ্রাম–কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে চার দিন আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন চলাকালে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আগুন দেন শাহ আমানত পরিবহনের তিনটি বাসে। চারটি দাবিতে এ ধর্মঘট পালন করছেন গণপরিবহনের মালিক ও শ্রমিকেরা। এরপর গতকাল শনিবার বিকেলে গণপরিবহন মালিক ও শ্রমিকের বিরুদ্ধে দেওয়া মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তার মালিক-শ্রমিকের মুক্তি, সড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করা, বিভিন্ন জায়গায় বাস আটকে রাখার প্রতিবাদ ও চুয়েটে পুড়িয়ে দেওয়া তিনটি বাসের ক্ষতিপূরণের দাবিতে আজ রোববার সকাল ছয়টা থেকে ধর্মঘটের ঘোষণা দেয় বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।