একাদশে খালি থাকবে সাড়ে ৭ লাখ আসন

  • একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু ৮ ডিসেম্বর। চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

  • ভর্তি এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতেই। 

এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল ভালো হওয়ায় শিক্ষার্থীদের উচ্ছাস। গত সোমবার রাজধানীর রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে
প্রথম আলো

এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় যত শিক্ষার্থী পাস করেছে, তারা সবাই যদি একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়, তারপরও সাড়ে সাত লাখের বেশি আসন খালি থাকবে। এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে ১৭ লাখ ৪৩ হাজার ৬১৯ জন। আর একাদশ শ্রেণিতে আসন আছে ২৫ লাখের বেশি। তবে অন্যান্য বছরের মতো এবারও তুলনামূলকভাবে ‘ভালো মানের’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য চাপ বেশি হবে। কারণ, এসব প্রতিষ্ঠানে আসন কম।

ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে আসনের এ তথ্য জানান। বেশ কয়েক বছর ধরে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বাবধানে অনলাইনে ভর্তির কাজটি হচ্ছে।

অন্যান্য বছরের মতো এবারও তুলনামূলকভাবে ‘ভালো মানের’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য চাপ বেশি হবে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ওই কর্মকর্তা বলেন, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবার এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেছে ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৬৫৩ জন। কিন্তু ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে একাদশ শ্রেণিতে আসন আছে ৫ লাখের বেশি। এ রকম অন্য শিক্ষা বোর্ডগুলোতেও পাস করা শিক্ষার্থীর চেয়ে একাদশ শ্রেণিতে আসন বেশি আছে।

এবার একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন গ্রহণ শুরু হবে ৮ ডিসেম্বর। চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এবারও একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে। ভর্তির জন্য কোনো পরীক্ষা হবে না। অনলাইনে হবে ভর্তির কাজটি।

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর গতকাল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন গ্রহণের এই তারিখসহ অন্যান্য বিষয় ঠিক করা হয়। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি অনলাইনে সভায় যোগ দেন। বাকিরা সশরীর সভায় যোগ দেন।

বৈঠকে উপস্থিত ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার প্রথম আলোকে বৈঠকের সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, অনলাইনে সর্বনিম্ন ৫টি এবং সর্বোচ্চ ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পছন্দক্রম দিয়ে আবেদন করা যাবে।

২৮ নভেম্বর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৩৭ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ১৭ লাখ ৪৩ হাজার ৬১৯ জন। এই বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী এখন উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তির অপেক্ষায় আছে। 

ফল প্রকাশের দিন গত সোমবার শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছিলেন, উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি যে পদ্ধতিতে হয়, এ বছরও সে পদ্ধতিতেই হবে। সেখানে কোনো ব্যত্যয় হবে না। আর ভর্তিতে আসনসংকট হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ, যত শিক্ষার্থী পাস করে, তার চেয়ে আসনসংখ্যা অনেক বেশি আছে।

এত জিপিএ-৫, এত ‘ভালো’ কলেজ কই?

এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ফলাফলের সর্বোচ্চ সূচক জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ লাখ ৩৩ হাজার ৭৬৩ জন শিক্ষার্থী। শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকাসহ সারা দেশে সব মিলিয়ে মোটামুটি ‘ভালো মানের কলেজ’ আছে দেড় শতাধিক। তবে এসব কলেজে কত আসন আছে, তা এই মুহূর্তে সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তবে এটি নিশ্চিত যে যত শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে, তার চেয়ে অনেক কম আসন আছে।

যেমন ঢাকা কলেজে একাদশ শ্রেণিতে আসন আছে ১ হাজার ২০০টি। এর মধ্যে ৯০০টি বিজ্ঞান শাখার, ১৫০টি মানবিক ও ১৫০টি ব্যবসায় শিক্ষা শাখার জন্য। কিন্তু এই কলেজে প্রতিবছর প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন করে।

এ ছাড়া নটর ডেম কলেজ, ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সিটি কলেজ, ঢাকা কমার্স কলেজ, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজসহ ঢাকায় আরও কয়েকটি পরিচিত কলেজ আছে, যেগুলোতে প্রতিবছর ভর্তির চাপ পড়ে। এ রকমভাবে ঢাকার বাইরেও কিছু পরিচিত কলেজ আছে যেগুলোতে ভর্তি হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেশি। অর্থাৎ জিপিএ-৫ পেয়েও পরিচিত ও নামী কলেজগুলোতে অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে না।