বুয়েট ডিসির ২৫ বছর

বুয়েট ডিসির সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত
বুয়েট ডিসির সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত

‘জামিলুর রেজা চৌধুরী স্যারের মতো বড় একজন মানুষ আমাদের অনুষ্ঠানে আসতে রাজি হলেন, সময় দিলেন। আমাদের উৎসাহ বেড়ে গেল আরও। পুরো আয়োজন নিয়েই মুগ্ধতা কাটছে না।’ বলছিলেন বুয়েট ডিবেটিং ক্লাবের (বুয়েট ডিসি) সভাপতি আহমাদ রাশিক। তাঁর মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, মুগ্ধতার রেশ কাটেনি। ক্লাবরুমে বসে কথা হচ্ছিল বুয়েট ডিসির সদস্যদের সঙ্গে। কয়েক দিন আগে হয়ে গেল বুয়েট ডিবেটিং ক্লাবের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠান ‘এসেন্স’। একটা বিতর্ক সংগঠনের অনুষ্ঠানে কেবল বিতর্ক নিয়েই কথা হবে, বুয়েট ডিসি এই ভাবনাটা ভুল প্রমাণ করে দিয়েছে। তাদের আয়োজন শুধু বিতার্কিকদের জন্য নয়, সবার জন্যই ছিল।

বুয়েট ডিবেটিং ক্লাবের সহসভাপতি মুবাশশির আহমেদ বলছিলেন, ‘শুধু বিতর্ক নিয়ে অনুষ্ঠানে কেবল বিতার্কিকেরাই উপস্থিত থাকে বলে উপস্থিতি কম হয়। তাই আমরা চেয়েছিলাম “এসেন্স” সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে।’ অনুষ্ঠানটিতে তিনটি পর্ব ছিল—ডিবেটাথন, পোস্টার উপস্থাপন ও একটি লেখালেখির প্রতিযোগিতা। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে বুয়েট ডিসির আরেক সহসভাপতি সঞ্জীব ভট্টাচার্য বলছিলেন, ‘ডিবেটাথন হলো ডিবেট ও হ্যাকাথনের সমন্বয়। এখানে সবাইকে একটা সমস্যার সমাধান করতে বলা হয়েছিল। তাঁদের সমাধান কেন গ্রহণযোগ্য, সে সম্পর্কে প্রশ্ন করেছেন বিচারকেরা, উত্তর দিতে হয়েছে প্রতিযোগীদের।’

ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য কোন সমস্যাটা সবচেয়ে আশঙ্কাজনক হতে পারে, তা নিয়ে ছিল পোস্টার উপস্থাপনের আয়োজন। তিন নম্বর পর্বটাও দারুণ আকর্ষণীয়। বুয়েট ডিসির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ হাসান বললেন, ‘তিন নম্বর সেগমেন্টে ছিল সুবোধ নিয়ে একটি রাইট আপ। পশ্চিমবঙ্গে যেখানে বলা হচ্ছে, “সুবোধ তুই ছড়িয়ে যা”; আমাদের এখানে বলা হচ্ছে, “সুবোধ তুই পালিয়ে যা”। আমরা আসলে জানতে চাইছিলাম, আমাদের এখানে সুবোধ নিয়ে কে কী ভাবে। আমরা এই সেগমেন্টে আশাতীত সাড়াও পেয়েছি।’ এই প্রতিযোগিতায় বিচারকের ভূমিকা পালন করেছিলেন মাহফুজ সিদ্দিকি। আয়োজনে বিতর্ক যে একদমই ছিল না, তা কিন্তু নয়। বাংলাদেশের জন্য টেকসই উন্নয়ন প্রকল্প প্রাসঙ্গিক কি না, এ প্রসঙ্গে বিতর্ক করেছেন বিতার্কিকেরা।

সফলভাবে এত বড় অনুষ্ঠান হয়ে যাওয়ায় ক্লাবের সব সদস্যের মুখেই হাসি। গত ২৫ বছরের যাত্রায় যাঁরা ক্লাবের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাঁরাও যোগ দিয়েছিলেন এই আয়োজনে। এসেছেন বুয়েটের অন্যান্য সংগঠনের সদস্যরাও। প্রতিটি সংগঠনকে দেওয়া হয়েছে ‘অ্যাওয়ার্ড অব অ্যাপ্রিসিয়েশন’। মুঠোফোনে কথা হলো বুয়েট ডিসির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হাফিজুল হকের সঙ্গে। প্রিয় ক্লাব নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘যখন আমরা ক্লাবটা প্রতিষ্ঠা করি, তখন এটি ছিল আমাদের মনের খোরাকের জন্য। আমরা ক্যাম্পাসের সবাই মিলে একসঙ্গে বিতর্কচর্চা করতাম, আড্ডা দিতাম, পাঠচক্রও ছিল। কিন্তু এখন সময় পাল্টেছে। এখন এই ক্লাবের সবকিছু অনেক বড় হয়ে গেছে। এত বড় বড় অনুষ্ঠান হচ্ছে। নিজেকে এই ক্লাবের একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে ভাবতে ভালো লাগে।’