প্রায় অচল হাত-পা নিয়ে পরীক্ষা দিল খাদিজা

মামির সঙ্গে পরীক্ষাকেন্দ্রে খাদিজা।  প্রথম আলো
মামির সঙ্গে পরীক্ষাকেন্দ্রে খাদিজা। প্রথম আলো

এক পা নেই, আরেক পা-ও পুরোপুরি স্বাভাবিক নয়। বাম হাতের চারটি আঙুল নেই। আর ডান হাতের কবজি সরু, আঙুলগুলোও পুরোপুরি স্বাভাবিক নয়। কৃত্রিম পা দিয়ে সে চলে। আর শারীরিক এ পরিস্থিতির মধ্যেও থেমে নেই খাদিজা আক্তার রিমা। প্রাথমিক ও জুনিয়র পরীক্ষার গণ্ডি পেরিয়েছে, এবার মাধ্যমিকের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে চায় সে। গতকাল এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে বাংলা বিষয়ের পরীক্ষা দিয়েছে সে।

নাটোর সদর উপজেলার কদমতলী বাজারের তেঘরিয়া এলাকার লুৎফর রহমান ও হাসি খাতুন দম্পতির দুই সন্তানের মধ্যে বড় খাদিজা আক্তার। তাঁদের ছোট ছেলে রোহান চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। ছোটবেলা থেকেই খাদিজা তার নানা আশকান প্রামাণিকের বাড়িতে থেকে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে। নানার বাড়ি বাগাতিপাড়া উপজেলার ফাগুয়াড়দিয়াড়ের জামতলা মোড়ে। খাদিজা উপজেলার ফাগুয়াড়দিয়াড় উচ্চবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। বাগাতিপাড়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের ৫ নম্বর কক্ষে গতকাল বাংলা পরীক্ষায় অংশ নেয় সে। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়। পরীক্ষা শেষে খাদিজা জানায়, শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার মামির সঙ্গে কেন্দ্রে এসেছে সে। কৃত্রিম পায়ে চলাফেরা আর অস্বাভাবিক হাতে লিখতে অসুবিধা হয়। তবু এগিয়ে যেতে চায় সে।

খাদিজার মামি মেরিনা আক্তার বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই পড়ালেখা করার প্রবল ইচ্ছা ছিল খাদিজার। প্রতিদিন ঝড়বৃষ্টি, রোদ, কাদাপানি উপেক্ষা করে কৃত্রিম পায়ে ভর দিয়ে নিয়মিত স্কুলে যেত সে। এ ইচ্ছার কারণেই নিজের বাড়িতে রেখে খাদিজাকে সহযোগিতা করছি।’

ফাগুয়াড়দিয়াড় উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, ‘খাদিজা আক্তার বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। তার পড়ালেখার প্রতি আগ্রহের কথা চিন্তা করে তাকে আমরা বিনা টাকায় ফরম পূরণসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছি।’