চেনা জিনিস, অন্য চোখে

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলার শিক্ষার্থীদের প্রদর্শনী ঘুরে দেখছেন শিক্ষার্থীরা
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলার শিক্ষার্থীদের প্রদর্শনী ঘুরে দেখছেন শিক্ষার্থীরা

যেকোনো উৎসবে খুলনা শহরের মানুষের মধ্যমণি যেমন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি), একইভাবে খুবিতে কোনো আয়োজন করা হলে তা হয়ে যায় পুরো খুলনাবাসীর। পঞ্চমবারের মতো আয়োজিত খুবির চারুকলা স্কুলের শিল্পকর্ম প্রদর্শনীতেও দেখা মিলল সেই চিত্রের। সপ্তাহব্যাপী আয়োজিত প্রদর্শনীতে প্রতিদিনই ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি খুলনাবাসীদের পদচারণ। 

৩ জুলাই উদ্বোধন করা হয় চারুকলার শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর। শিল্পী শশিভূষণ পাল আর্ট গ্যালারিতে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। চারুকলা স্কুলের আওতাধীন তিনটি ডিসিপ্লিন—ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং, প্রিন্টমেকিং ও ভাস্কর্য ডিসিপ্লিনের ১৭৮ জন শিক্ষার্থীর শিল্পকর্ম এই প্রদর্শনীতে ছিল। প্রতিদিন বেলা ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী গ্যালারি উন্মুক্ত ছিল সবার জন্য। 

৩ জুলাই বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাস্কর্য ডিসিপ্লিন প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) মো. শেখ সাদী ভূঞার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন উপাচার্য মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ট্রেজারার সাধন রঞ্জন ঘোষ, ডিন (ভারপ্রাপ্ত) চারুকলা ইনস্টিটিউট অধ্যাপক মো. মনিরুল ইসলাম, আইকিউএসির পরিচালক অধ্যাপক মো. সারওয়ার জাহান। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মো. মাহবুবুর রহমান, ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিন প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রিন্টমেকিং ডিসিপ্লিন প্রধান নিহার রঞ্জন সিংহ। 

এরপর প্রধান অতিথি তিন বিভাগে ৩০টি নির্বাচিত শিল্পকর্মের জন্য ৩০ জন শিল্পীকে পুরস্কার দেন। এর মধ্যে শিল্পী শশিভূষণ পাল গ্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিনের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ববিতা আক্তার, প্রিন্টমেকিং ডিসিপ্লিনের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী প্রসেনজিৎ রায় ও ভাস্কর্য ডিসিপ্লিনের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী বুদ্ধ দেব মণ্ডল। 

প্রদর্শনীতে ছিল বিভিন্ন মাধ্যমে তৈরি শিল্পকর্ম। চারুকলার শিক্ষার্থীদের ক্লাস অ্যাসেসমেন্ট থেকে শুরু করে শখের বসে আঁকা কোনো ছবি, সবই স্থান পেয়েছে এই প্রদর্শনীতে। শিক্ষার্থীদের কাছে এটি নিজেদের সৃজনশীলতা সবার কাছে তুলে ধরার একটি মঞ্চ। তাই প্রতিদিনই বন্ধুবান্ধব, মা-বাবা কিংবা স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে প্রদর্শনী ঘুরে দেখেছেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা। বাইরের দর্শকদের জন্য সন্ধ্যায় গ্যালারির বাইরের দিকটা সাজানো হয়েছিল প্রদীপের আলোছায়া ও ফুল দিয়ে। যাঁদের জন্য আয়োজন, সেই দর্শকদের কেমন লেগেছে প্রদর্শনী? গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাত নাদিয়া বলেন, ‘প্রতিবছর চারুকলার এই প্রদর্শনীতে এলে একটা জিনিসকে ভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে দেখার আগ্রহ তৈরি হয়। কিছু শিল্পকর্ম দেখলে সাধারণ কাঠের বা পাথরের টুকরা মনে হয়। কিন্তু ভালো করে খেয়াল করলে তার আসল অর্থ ধরতে পারা যায়।’