'মেড ইন বাংলাদেশ' গল্পের চরিত্ররা

বুটেক্সের নির্মানাধীন ১৫ তলা ভবন। ছবি: লেখক
বুটেক্সের নির্মানাধীন ১৫ তলা ভবন। ছবি: লেখক

বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে কথা বলতে গেলে অবধারিতভাবেই চলে আসে তৈরি পোশাকশিল্পের কথা। কারণ আমাদের দেশের বৈদেশিক মুদ্রার একটা বড় অংশ আসে পোশাক রপ্তানি থেকে। ভিনদেশি নামীদামি ব্র্যান্ডের কাপড়ে আমরা যখন দেখি, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেখা, বুকটা গর্বে ভরে ওঠে।

এই গর্বের পেছনে যাঁদের অবদান সবচেয়ে বেশি, তাঁরা হলেন এ দেশের গার্মেন্টসকর্মী। আর এই গার্মেন্টসকর্মীদের নেতৃত্ব দেন টেক্সটাইল বা বস্ত্র প্রকৌশলীরা। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব টেক্সটাইল (বুটেক্স) হলো সেই প্রতিষ্ঠান, যা বহু বছর আগে থেকে এই খাতে দক্ষ ও মেধাবী প্রকৌশলী তৈরি করছে। দক্ষিণ এশিয়ায় এটিই হলো একমাত্র টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের পোশাকশিল্পকে এগিয়ে রাখতে তাই এই বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনেক দায়িত্ব। বলা হচ্ছে, সামনে আসছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব। অতএব নিশ্চয়ই দিনে দিনে দায়িত্বটা আরও বাড়ছে।

আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ বলেই হয়তো, মনের অজান্তেই আমার ক্যাম্পাস নিয়ে কথা বলতে গেলে অনেক বেশি প্রশংসা করে ফেলি। তবে এ-ও বিশ্বাস করি, বুটেক্স এই প্রশংসার দাবিদার। প্রতিবছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রথম ১০ হাজার জন প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। সেখান থেকে বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ে ৬০০ জন ছাত্রছাত্রীকে নির্বাচন করা হয় ভর্তির জন্য। মোট ১০টি বিভাগে ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হয়।

সব বিভাগের শিক্ষার্থীরাই ‘টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার’ হিসেবে স্নাতক শেষ করে। তবে বিভাগের ভিত্তিতে আলাদা করে বিশেষায়িত করা যায়। যেমন আমি সব পরীক্ষায় পাস করার পর পরিচয়টা হবে—আমি একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার এবং একই সঙ্গে ফ্যাশন ডিজাইনার (স্পেশালাইজড ইন টেক্সটাইল ফ্যাশন অ্যান্ড ডিজাইন)।

কোর্স শেষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টেক্সটাইল–সম্পর্কিত অনেক বিষয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ আছে। এ ছাড়া বুটেক্স থেকেও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়া যায়।

সামগ্রিক দিক বিবেচনায় বাংলাদেশ সরকারের সচেতনতা ও আন্তরিকতায় দিন দিন উন্নত হচ্ছে এই ক্যাম্পাস। এরই ধারাবাহিকতায় চলছে স্বপ্নের ‘বঙ্গবন্ধু ভবন’ (নতুন একাডেমিক ভবন)–এর নির্মাণকাজ। কাজ শেষ হলে সম্ভবত এটিই দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে উঁচু ভবন হবে। শুধু ভবনের উচ্চতা নয়, দেশকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতেও নিশ্চয়ই কাজ করবে এই ক্যাম্পাসের ছাত্রছাত্রীরা। তখন ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ গল্পের পেছনে ঘুরেফিরে আসবে আমাদের কথা।

আমরা গর্বিত,
আমরা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার,
আমরা বুটেক্সিয়ান!
স্বাগত স্বপ্নের ক্যাম্পাসে।

টেক্সটাইল ফ্যাশন অ্যান্ড ডিজাইন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়