শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ: তারুণ্যের স্ফুরণ

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের এই তরুণেরাই ‘স্ফুরণ’–এর প্রাণ। ছবি: সংগৃহীত
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের এই তরুণেরাই ‘স্ফুরণ’–এর প্রাণ। ছবি: সংগৃহীত

আইটেম, কার্ড, টার্ম, প্রফ—ছোট–বড় নানা পরীক্ষার চাপ থেকে একটু ছুটি নিয়ে মনের খোরাক মেটাতে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা গড়ে তুলেছিলেন ‘স্ফুরণ’ নামের সংগঠনটি। তাও প্রায় ১০ বছর আগে। আগামীকাল ৯ সেপ্টেম্বর স্ফুরণের ১০ বছর পূর্তি হবে। তাই বর্ণিল সাজে সেজেছে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণ।

সংগঠনটির একসময়ের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমানে উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসক শামীম আহমেদ। কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘স্ফুরণের যাত্রা যখন শুরু হয়, তখনো কলেজের ডেন্টাল ইউনিট চালু হয়নি। এমবিবিএসের শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটু একটু করে এগিয়ে যেতে থাকে স্ফুরণ। 

২০১২–তে এসে যুক্ত হয় ডেন্টাল ইউনিট। সংগঠন তৈরির ক্ষেত্রে কিছু প্রতিশ্রুতিশীল তরুণের চিন্তার প্রতিফলন হচ্ছে এই সংগঠন। স্ফুরণের শুরুর দিকের কথা বলতে গিয়ে শামীম কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য চিকিৎসক আবদুল্লাহ আল ফারুক, রাকিবুল ইসলাম, মিথুন বিশ্বাস, রাহাত হোসেনের মতো অগ্রজদের প্রতি। সে সময় পাশে থেকে সাহস জুগিয়েছেন শামসুল ইসলাম, ফখরুল ইসলাম ও চিকিৎসক বুলেট সেন। পরে সংগঠনের কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যান শাহরিয়ার হোসেন, শাহনেওয়াজ সোহান, ফেরদৌস রহমান, চিকিৎসক আরেফিন ও সবুজ। সংগঠনটির নামকরণ করেন চিকিৎসক তন্ময় চক্রবর্তী।

বর্ষপূর্তি উপলক্ষে স্ফুরণের সদস্যদের সবার মধ্যে কাজ করছে উৎসবের আমেজ। ক্যাম্পাসকে বর্ণিল সাজে সাজাতে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে সদস্যদের কাজ। ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে স্ফুরণ একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের করবে। আয়োজন করবে শিশু–কিশোরদের জন্য চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। দেওয়া হবে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা, জানালেন সংগঠনের সদস্যরা।

২০০৯ সালে যাত্রা শুরু করা এই সংগঠনের মোট সদস্য এখন ১ হাজার ১০০। এর মধ্যে চিকিৎসক রয়েছেন ৪৫০ জন আর শিক্ষার্থী ৬৫০ জন। সংগঠনে ভালো কাজের ওপর ভিত্তি করে গঠন করা হয় কার্যকরী কমিটি। এমবিবিএস পর্যায়ে এখন সভাপতি হিসেবে আছেন মেহেদী হাসান এবং সাধারণ সম্পাদক শুভাশিষ বিশ্বাস। অন্যদিকে ডেন্টালের সভাপতি বাপ্পা ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক সৌমিক ভট্টাচার্য। স্ফুরণের সঙ্গে যুক্ত হওয়া প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি পড়াশোনার ব্যাপারে সহযোগিতা পান স্ফুরণ পরিবারের অগ্রজদের কাছ থেকে।

স্ফুরণের আইকন হিসেবে রয়েছেন সাজিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘বার্ষিক অনুষ্ঠান হিসেবে আমরা সাত দিনব্যাপী একটি অনুষ্ঠান করে থাকি। যেখানে বিশেষ শিশুদের জন্য অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। আর এ বছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের কারণে আমরা রক্তদান থেকে শুরু করে মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে শোভাযাত্রা করেছি এবং লিফলেট বিতরণ করেছি।’