মন ভালো করা ফিন ফেস্ট

উৎসবের উদ্বোধন করা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত
উৎসবের উদ্বোধন করা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

‘করি না কোনো ভয়/ হোক সে বাধা/ হোক সে ঝড়/ আমার গর্ব/ আমার প্রত্যয়/ ফিন্যান্স আমার পরিচয়...’ এই গানেই প্রাণ পেয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ আয়োজিত ‘ফিন ফেস্ট’। ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ভবনের সামনে হয়ে গেল এই মহাযজ্ঞ। অনুষ্ঠানে বিভাগের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত সাতটি ব্যাচের ৩৭৫ জন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। আনন্দ আয়োজন তো ছিলই, পাশাপাশি ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করার দিকনির্দেশনাও পেয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

আয়োজকেরা জানালেন, ১৭ ফেব্রুয়ারি সকালে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ভবনের সামনে কেক কেটে ও বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপাচার্য এমরান কবির চৌধুরী। পরে বের হয় শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে আবার ফিরে আসে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ভবনের সামনে। এরপর ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের চেয়ারম্যান ফেরদৌস জাহানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উপাচার্য এমরান কবির চৌধুরী।

উদ্বোধনী পর্বে উপাচার্য এমরান কবির চৌধুরী বলেন, ‘যেকোনো উৎসব শিক্ষার্থীদের মন ভালো রাখে। এক বিভাগের দেখাদেখি অন্যরাও এ ধরনের আয়োজন করে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রস্তুত করতে শেখে।’

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাডমিন্টন কোর্টে পিঠা উৎসব হয়। শিক্ষার্থীরা নিজেরাই চুলায় আগুন দিয়ে পিঠা তৈরি করেন। উপাচার্যও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন। সেই সঙ্গে সাতটি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা সাতটি দেয়ালিকা প্রদর্শন করেন। দেয়ালিকায় তাঁরা ১৯৪৭-এর দেশভাগ থেকে শুরু করে ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের কথা তুলে ধরেন। কোনো কোনো ব্যাচ ১৯৭২ সালের পর যত ধরনের মুদ্রা, টাকা, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড বের হয়েছে, তা উপস্থাপন করেন। একই সঙ্গে শেয়ারবাজার পরিস্থিতি, অর্থ ব্যবস্থাপনা ও ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত স্যার ফজলে হাসান আবেদকে স্মরণ করে লেখা উপস্থাপন করেন।

এ প্রসঙ্গে বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আহিলি কানিত ও মুনিরা আক্তার বলেন, ‘বিশ্বের অন্যতম বড় এনজিও ব্র্যাক। বড় ধরনের অর্থ তারা লগ্নি করে সামাজিক উন্নয়ন করছে। তাই স্যারকে স্মরণ করা হয়েছে।’

এদিকে বেলা একটায় ক্যাম্পাসের গোলচত্বরে গানের তালে তালে নেচে-গেয়ে মেতে ওঠেন কমলারঙা টি-শার্ট পরা শিক্ষার্থীরা। তাঁদের সঙ্গে আনন্দযজ্ঞে অংশ নেন শিক্ষকেরাও। বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রথম দিনের অনুষ্ঠান শেষ হয়।

১৮ ফেব্রুয়ারি সকাল নয়টা থেকে বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, দাবা, বল ছোড়া, মিউজিক্যাল চেয়ার ও হাঁড়িভাঙা খেলায় অংশ নেন। বেলা তিনটায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং ক্লাবের প্রেসিডেন্ট মো. এমদাদুল হকের সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠান হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য এমরান কবির চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিভাগের চেয়ারম্যান ফেরদৌস জাহান। পরে প্রধান অতিথি বিভিন্ন ইভেন্টে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। সন্ধ্যায় ব্যান্ড দল আর্ট অব হ্যাভেনের শিল্পী বীথি ও বিভাগের শিক্ষার্থীরা সংগীত পরিবেশন করেন। এরপর নাটক ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ মঞ্চায়ন হয়। পরে গালা নাইটের মধ্য দিয়ে দুই দিনব্যাপী আয়োজিত উৎসব শেষ হয়। ২০১৩ সালে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ যাত্রা শুরু করে। এবারই প্রথম ঘটা করে বিভাগটি এই আয়োজন করল।