ফুটবলের নিশাত

নিশাত চৌধুরী
নিশাত চৌধুরী

নিশাত চৌধুরীর স্কুল ও কলেজজীবন কেটেছে কুয়েতে। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলাও ছিল তাঁর স্কুলজীবনেরই অংশ। বাস্কেটবল, টেবিল টেনিস আর ফুটবল তো ছিলই। তবে এই তিনটির মধ্যে ফুটবলই তাঁর ভালোবাসার জায়গা। বড় ভাই নাবিল খালেদের সঙ্গে নিয়মিত টিভিতে ফুটবল খেলা দেখতেন। খেলাটাও শিখেছেন ভাইয়ের কাছ থেকে।

স্কুলে পড়ার সময় স্কুল দলের হয়ে খেলতেন তিনি। আন্তস্কুল টুর্নামেন্টে নিশাতের স্কুল তিনবারের চ্যাম্পিয়ন। স্কুল দলের রক্ষণ ভাগে শক্ত খেলোয়াড় ছিলেন নিশাত। স্কুল শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য ২০১৬ সালে বাংলাদেশে আসেন তিনি। ভর্তি হন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে। এখন মায়ের সঙ্গে তিনি বাংলাদেশেই থাকেন। পড়ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষে। 

বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের শুরুর দিকেই নাম লেখান নর্থ সাউথের মূল ফুটবল দলে। বড় বড় প্রতিযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করছেন। বঙ্গবন্ধু আন্তবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পেও খেলছেন তিনি। 

এ ছাড়া নিজ বিভাগের ফুটবল দলের সদস্য এই ডিফেন্ডার। নিশাত ও তাঁর বন্ধুরা বিভাগ থেকে নতুন প্রতিভাবান ফুটবলার অন্বেষণের কাজ করেন। নিয়মিত তাঁদের প্রশিক্ষণও দেন। তাঁদের কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়া প্রায় চারজন মেয়ে এখন নর্থ সাউথের মূল দলে খেলে বলে জানালেন নিশাত। 

ক্যাম্পাসে নিশাত নারী খেলোয়াড়দের কাছে এক অনুপ্রেরণার নাম। তাঁকে দেখেই অনেক মেয়ে ফুটবল খেলা শুরু করেছেন। নিশাত বলেন, ‘ফুটবলার হিসেবে ক্যাম্পাসের অনেকেই আমাকে চেনেন। আমার ডিপার্টমেন্টের অনেকের কাছেই শুনেছি, আমাকে দেখেই নাকি তাঁরা খেলতে এসেছেন। ব্যাপারটি আমার কাছে খুবই ভালো লাগে।’ 

দেশের বাইরেও তাঁর খেলার অভিজ্ঞতা আছে। তাই প্রশ্ন ছিল, বাংলাদেশে আর কুয়েতে মেয়েদের খেলাধুলার পরিবেশের মধ্যে কী ধরনের পার্থক্য তাঁর চোখে পড়ে? উত্তরে নিশাত বলেন, ‘কুয়েতে সবাইকে খেলোয়াড় হিসেবেই বিবেচনা করা হয়, ছেলে-মেয়ের কোনো বৈষম্য সেখানে নেই।’ 

তবে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির এই শিক্ষার্থী আশাবাদী, বাংলাদেশেও একদিন নারী কিংবা পুরুষ—সবাইকেই শুধু খেলোয়াড় হিসেবেই দেখা হবে। আগের চেয়ে বর্তমানে নারীদের সুযোগও বেড়েছে বলে মনে করেন তিনি। 

পরিবার সব সময়ই খেলাধুলার ব্যাপারে তাঁর পাশে ছিল। দূর থেকেই বড় ভাই নিশাতকে খেলাধুলা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ দিয়ে যান নিয়মিত। পড়াশোনা শেষে গবেষক হতে চান নিশাত। তবে যত দিন সুযোগ পাবেন, তত দিন ফুটবল খেলা চালিয়ে যাবেন বলে জানান তিনি।
নিশাত চৌধুরী, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি