‘বিদেশে পড়াশোনা, সহজেই'

কথায় আছে, জ্ঞানার্জনের জন্য প্রয়োজনে সুদূর চীন দেশে যাও। যুগবদলের পালায় চীন পেরিয়ে এখন এ দেশের শিক্ষার্থীরা আরও দূরদূরান্তে যাচ্ছেন। নিজেদের সফল ক্যারিয়ার গড়তে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমাচ্ছেন দেশের বাইরে। এই পাড়ি জমানোর জন্য কারও পথটা চেনা, কেউবা অচেনা পথে দিকনির্দেশক খোঁজেন। যাঁরা দিকনির্দেশক খোঁজেন, তাঁদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান। বিদেশে উচ্চশিক্ষা–বিষয়ক তেমনই একটি পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান ‘মেইসেস’। প্রতিষ্ঠানটি চলতি মাসে তিন বিভাগে শিক্ষা মেলার (এডুকেশন মিট) আয়োজন করেছে।

১৪ অক্টোবর ঢাকায়, ১৫ অক্টোবর সিলেটে এবং ১৬ অক্টোবর চট্টগ্রামে বার্ষিক এডুকেশন মিটের আয়োজন করেছে মেইসেস। শিক্ষার্থীরা এই এডুকেশন মিটে যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও মালয়েশিয়ার শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্বকারী বিশ্ববিদ্যালয়-কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন।

১২ অক্টোবর সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিনিধিত্বকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি ফেসবুক লাইভ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মেইসেস। ‘বিদেশে পড়াশোনা, সহজেই’ শীর্ষক লাইভ অনুষ্ঠানটি প্রথম আলো ডটকম ও প্রথম আলো ফেসবুক পেজে প্রচার হয়। এতে কানাডা, জাপান, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও মালয়েশিয়ার কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ, পড়াশোনা ও ভবিষ্যতের সফলতার কথা তুলে ধরেন।

‘বিদেশে পড়াশোনা, সহজেই’ শীর্ষক লাইভ অনুষ্ঠানটি প্রথম আলো ডটকম ও প্রথম আলো ফেসবুক পেজে প্রচার হয়।

লাইভ অনুষ্ঠানটির শুরুতে মেইসেসের ব্যবস্থাপনা অংশীদার রুহাম মঞ্জুর সবাইকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ‘এ আয়োজনের উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের এক জায়গায় একাধিক দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সরাসরি আলাপ-আলোচনা ও পরামর্শ করার সুযোগ প্রদান করা। বিদেশে পড়াশোনার সম্ভাবনা, বৃত্তি, ছাত্রজীবনের অভিজ্ঞতা, জীবনযাত্রা, কোনো নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতা এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে তাদের যেকোনো বিভ্রান্তি দূর করা। প্রতিবছর এ আয়োজনে বিদেশে পড়তে যেতে আগ্রহী দুই হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এবারও আমরা আশা করছি, আমাদের স্বপ্ন দেখা তরুণেরা তাদের স্বপ্নপূরণের পথে হাঁটতে মেইসিসকেই বেছে নেবে।’

ফেসবুক লাইভ অনুষ্ঠানের শুরুতে কানাডার চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আঞ্চলিক প্রতিনিধিরা নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ-সুবিধা, পড়াশোনার পরিবেশের কথা বর্ণনা করেন।

টরন্টোর মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির প্রতিনিধি শ্রেয়া পোদ্দার জানান, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ এত মনোরম আর পড়াশোনা এত ব্যবহারিকভাবে করানো হয় যে একজন শিক্ষার্থী ভবিষ্যতের স্বপ্নপূরণে চিন্তাহীনভাবে ভর্তি হতে পারবেন।

লন্ডনে পড়াশোনার সুবিধা হলো, এখানে তিন বছরে গ্র্যাজুয়েট এবং এক বছরে পোস্টগ্র্যাজুয়েট শেষ করে শিক্ষার্থীরা খুব সহজে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারেন। তাই জীবন সাজানোর জন্য যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেয়।
জেসিকা ব্রোয়েন, ইউনিভার্সিটি অব বার্মিংহামের প্রতিনিধি

কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলফেয়ারের মাসুম চৌধুরী বলেন, ১৯৬৪ সাল থেকে চলা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি ও জীববিজ্ঞানের পড়াশোনা পৃথিবীবিখ্যাত। এসব বিষয়ে যাঁরা আগ্রহী, তাঁরা পড়াশোনা করতে পারেন ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলফেয়ারে।

যুক্তরাজ্যের পড়াশোনা নিয়ে কথা বলেন ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ প্রতিনিধি। ইউনিভার্সিটি অব বার্মিংহামের জেসিকা ব্রোয়েন জানান, লন্ডনে পড়াশোনার সুবিধা হলো, এখানে তিন বছরে গ্র্যাজুয়েট এবং এক বছরে পোস্টগ্র্যাজুয়েট শেষ করে শিক্ষার্থীরা খুব সহজে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারেন। তাই জীবন সাজানোর জন্য যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেয়।

পড়াশোনার জন্য বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা খুব সহজেই জাপানে আবেদন করতে পারবেন। এতে জাপানি ভাষা শেখার কোনো প্রয়োজন নেই। ইংরেজিতে পুরো পড়াশোনার প্রক্রিয়া শেষ করে যেকেউ খুব ভালো কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারবেন। জাপানে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা যাঁরা পড়াশোনা করেন, দেখা যায়, পড়াশোনা শেষে তাঁরা একসঙ্গে দু-তিনটা চাকরির প্রস্তাব পান।

অনেক অভিভাবক সন্তানদের বিদেশ পড়াতে চান, কিন্তু খুব দূরেও পাঠাতে চান না। তাঁদের জন্য মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টার দূরত্বের মালয়েশিয়া পছন্দের শীর্ষে থাকতে পারে। লাইভ প্রতিষ্ঠানতে মালয়েশিয়ার এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির প্রতিনিধি মোহাম্মদ হামজা বলেন, যাঁরা সন্তানদের দূরে পাঠাতে চান না, কিন্তু তাঁদের দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা প্রত্যাশা করেন, তাদের জন্য মালয়েশিয়া একটা বড় সুযোগ। আবার ধর্মীয় অনুশাসনের মাঝে থেকে যাঁরা পড়াশোনা করতে চান, মালয়েশিয়া এখন তাঁদের পছন্দের শীর্ষে।

জানা যায়, মাঝেমধ্যে অনেক শিক্ষার্থী বা তাঁদের অভিভাবকেরা বুঝে উঠতে পারেন না সন্তানকে আন্ডারগ্রেডে পাঠাবেন, নাকি পোস্টগ্র্যাজুয়েটে। যাঁরা এ রকম দ্বিধায় ভোগেন, তাঁদের জন্য মেলায় থাকবে পাথওয়ে পার্টনার নাভিস্টা এবং স্টাডি গ্রুপ।

উল্লেখ্য, মেলা চলবে দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। শিক্ষার্থীরা ইভেন্টে অংশগ্রহণ করতে পারবেন বিনা মূল্যে।