তরুণ প্রজন্মের আধুনিক ও মানসম্পন্ন শিক্ষার স্মার্ট ক্যাম্পাস

শিক্ষা সফর ঘিরে উচ্ছ্বসিত ঢাকার ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজের শিক্ষার্থীরা
ছবি: কলেজের সৌজন্যে

একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যোগ্য নাগরিক ও দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে প্রয়োজন মানসম্পন্ন শিক্ষা। কিন্তু ঢাকায় চাহিদার তুলনায় মানসম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অপ্রতুল। সেগুলোতে আসনসংখ্যাও সীমিত। ফলে ঢাকাসহ দেশের মফস্বল শহর-গ্রাম থেকে আসা অসংখ্য মেধাবী শিক্ষার্থী ঐতিহ্যবাহী মানসম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তির সুযোগ পায় না।

এমন বাস্তবতাকে সামনে রেখে এবং মানসম্পন্ন শিক্ষার ব্যাপক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ঢাকার প্রাণকেন্দ্র ধানমন্ডিতে প্রতিষ্ঠিত হয় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজ। এটির প্রতিষ্ঠাতা ড্যাফোডিল গ্রুপের কর্ণধার মো. সবুর খান। কলেজটি ঢাকা শিক্ষা বোর্ড অনুমোদিত এবং বিশেষ পরিচালনা পর্ষদ দ্বারা পরিচালিত।

২০০৩ সালে যাত্রার শুরু থেকেই বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের রয়েছে বাংলা এবং ইংরেজি মাধ্যমে পড়ার ব্যবস্থা। গত ২২ বছরে শিক্ষাদান করে আসা প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে একাদশ ও দ্বাদশ-দুটি শ্রেণি। কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনায় রয়েছেন দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন কর্ণেল মো. সাদীকুল বারী, পিএসসি (অব.)। এ প্রতিষ্ঠানে যোগদানের আগে তিনি ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ (জেসিসি) ঝিনাইদহ, যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

কলেজটির মূল শক্তি হচ্ছে, এটি তরুণ প্রজন্মের আধুনিক ও মানসম্পন্ন উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার স্মার্ট ক্যাম্পাস। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিত্য-নতুন শিক্ষা-উপকরণ সংযোজন এ কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি নিশ্চিত করে। এছাড়া কলেজের শিক্ষা কার্যক্রমে বিদ্যমান কিছু বৈশিষ্ট্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিকে শিক্ষার্থী-অভিভাবকের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে। যার মধ্যে রয়েছে নিয়মিত মাসিক ও অন্যান্য পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা, শ্রেণিশিক্ষকের পাশাপাশি গাইড-শিক্ষক সুবিধা, অস্বচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক সহযোগিতা, অমনোযোগী এবং তুলনামূলক দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা ইত্যাদি।

কলেজটির আছে নিজস্ব ভবন এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শ্রেণিকক্ষ। যেখানে রয়েছে সার্বক্ষণিক বিদ্যুত ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সুব্যবস্থা। শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে শিক্ষা-উপকরণ সরবরাহ করা হয়।

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজের অধ্যক্ষ কর্নেল মো. সাদীকুল বারী বলেন, ‘যাত্রার শুরু থেকে এ কলেজের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা। তাঁদের সুপ্ত প্রতিভা, সৃজনশীল গুণাবলির বিকাশ ঘটানো এবং দেশপ্রেম জাগ্রত করা। সময়োপযোগী পাঠদানের মাধ্যমে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে দেশে ও দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষার জন্য উপযুক্ত করে গড়ে তোলা। এ ছাড়া শৃঙ্খলা এবং সময়ানুবর্তিতা শেখানোর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে দায়িত্ববোধের সঞ্চার করা।’

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজের অধ্যক্ষ কর্নেল মো. সাদীকুল বারী
ছবি: সংগৃহীত

কর্ণেল মো. সাদীকুল বারী আরও বলেন, ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজ, ঢাকা দেশের একটি আদর্শ কলেজ হিসেবে রূপান্তরিত হবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। কারণ নির্দিষ্ট গন্ডি নয়, আগামীর আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সহশিক্ষা, উচ্চশিক্ষা ও প্রতিযোগিতামূলক কার্যক্রমে কলেজটির রয়েছে বাড়তি গুরুত্ব।’

শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ ও সুবিধা

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজ বরাবরই শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। তাই মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বিশেষ বৃত্তি-সুবিধা। শুধু তা-ই নয়, এসএসসিতে ভালো ফলাফল প্রাপ্তদের এ কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়। এ ছাড়া কলেজের সাময়িক বিভিন্ন পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের বেতন সম্পূর্ণ মওকুফ করা হয়।
শিক্ষার্থীদের ঝামেলাহীন যাতায়াতের জন্য রয়েছে পরিবহণ এবং উন্নত যোগাযোগব্যবস্থার সুবিধা। দূর-দূরান্তের শিক্ষার্থীদের জন্য হোস্টেলের ব্যবস্থাও রয়েছে। ফলে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা নিশ্চিন্তে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে এ কলেজে। এ ছাড়া রয়েছে ছাত্রীদের জন্য পৃথক শাখায় পাঠদানের ব্যবস্থা। উচ্চশিক্ষা লাভের ক্ষেত্রে এ কলেজের শিক্ষার্থীদের ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তির ক্ষেত্রে ৩০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বৃত্তি লাভের সুযোগ রয়েছে।

স্মার্ট ক্যাম্পাস

কলেজ সূত্রমতে, করোনাকালে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজেই প্রথম অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছে। যা সম্ভব হয়েছে কর্তৃপক্ষের ‘স্মার্ট ক্যাম্পাস’ ভাবনার কল্যাণে। আধুনিকায়নের এ যুগে তত্ত্বীয় জ্ঞানের পাশাপাশি ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জনের জন্য বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে আধুনিক উপকরণে সমৃদ্ধ তিনটি ল্যাব। যা অভিজ্ঞ শিক্ষকদের দক্ষ নির্দেশনায় পরিচালিত হয়। শিক্ষার্থীদের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ ক্যাম্পাস সিসিটিভি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।

অমর একুশে উদযাপনে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজের শিক্ষকেরা
ছবি: কলেজের সৌজন্যে

এ ছাড়া উন্নতমানের আইসিটি ল্যাব, লাইব্রেরি ও ইন্টারনেট সুবিধার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আগামীর স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার ব্যবস্থা করা হয়।

শুধু তা–ই নয়. কলেজের নিজস্ব ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম ‘College.AC’–এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাঁদের পড়াশোনায় বিভিন্নভাবে সহযোগিতা পাচ্ছে। পাশাপাশি এডুকেশনাল ইনস্টিটিউট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (EIMS) দ্বারা শিক্ষার্থীদের আগমন-প্রস্থান, কলেজ বিজ্ঞপ্তিসমূহ এবং পরীক্ষার ফলাফল সম্পর্কে অভিভাবকদের অবহিতকরণের সুব্যবস্থা রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি।

সহশিক্ষা কার্যক্রম

পড়াশোনার পাশাপাশি শরীর ও মনের বিকাশের লক্ষ্যে এখানে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ ইনডোর (কলেজ অডিটরিয়াম) ও আউটডোরে (ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস) খেলাধুলা করানো হয়। এছাড়া পাঠ্যবইয়ের বাইরে বিভিন্ন গল্প-উপন্যাসের বই পড়ে লাইব্রেরিতে আনন্দমুখর সময় কাটান শিক্ষার্থীরা। সচেতন ও দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে ড্যাফোডিল ফ্যামিলির সহযোগী প্রতিষ্ঠান ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, জবসবিডি ডটকম, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (সিডিসি) এবং হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (এইচআরডিআই) বিভিন্ন সময়ে কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে কর্মশালা করে থাকে।

আধুনিক ও মানসম্মত শিক্ষার মাধ্যমে কলেজটিকে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত করাতে সমর্থ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সংশ্লিষ্টরা।