আইইউবিতে সালিমুল হক স্মারক বক্তৃতা

আইইউবি মিলনায়তনে স্মারক বক্তব্য দিচ্ছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীছবি: বিজ্ঞপ্তি

ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)-তে অনুষ্ঠিত হলো জলবায়ুবিজ্ঞানী অধ্যাপক সালিমুল হক স্মারক বক্তৃতা ‘প্রমোটিং ক্লাইমেট জাস্টিস: রোলস অব কোর্টস অ্যান্ড ইয়ুথ’। গত মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত আইইউবি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি স্কুল অব ল-এর অধ্যাপক সেজার রদ্রিগেজ-গারাভিটো।

সাবের হোসেন চৌধুরীর বক্তব্যের বিষয় ছিল ‘প্রমোটিং ক্লাইমেট জাস্টিস থ্রু ইয়ুথ এনগেজমেন্ট’। তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আমাদের অবদান ন্যূনতম, কিন্তু আমরাই এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি সবচেয়ে বেশি। এটি একটি বড় ধরনের অন্যায়। পাশাপাশি আমাদের যতটুকু সক্ষমতা, তার চেয়ে বেশি অভিযোজন করতে হচ্ছে। এটি আরেকটি অন্যায়। এ ছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য যখন আমাদের স্বাস্থ্য, অবকাঠামো, শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ ও তরুণ জনগোষ্ঠীর দক্ষতা বৃদ্ধিতে আরও বেশি বিনিয়োগ করা দরকার, তখন দেশের মানুষকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে রক্ষা করার জন্য আমাদের বিনিয়োগ করতে হচ্ছে। এটি আরও একটি বড় অন্যায় ঘটছে আমাদের প্রতি।’

অধ্যাপক রদ্রিগেজ-গারাভিটোর বক্তব্যের প্রতিপাদ্য ছিল ‘প্রমোটিং ক্লাইমেট জাস্টিস থ্রু লিটিগেশনস’। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটস-এ সুইস নারীদের একটি সংগঠন ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক একটি মামলায় জয়লাভ করেছে। এর অর্থ হলো, বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এ আদালতটি পরিষ্কার ভাষায় রায় দিয়েছে যে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় যথেষ্ট কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া মানবাধিকারের পরিপন্থী। তাপপ্রবাহ, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি—এগুলো সবই মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ; ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত; বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান; আইইউবির উপাচার্য অধ্যাপক তানভীর হাসান, সেন্টার ফর ক্লাইমেট জাস্টিস-বাংলাদেশের পরিচালক এম হাফিজুল ইসলাম খান ও আইইউবির ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ইক্যাড) ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাকিব হক। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আইইউবির ডিপার্টমেন্ট অব ল-এর উপদেষ্টা অধ্যাপক বোরহান উদ্দীন খান।

নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি স্কুল অব ল-এর সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড গ্লোবাল জাস্টিস; বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি; ফ্রেন্ডশিপ; ওয়ার্ল্ডস ইয়ুথ ফর ক্লাইমেট জাস্টিস ও লোকাল কনফারেন্স অব ইয়ুথ বাংলাদেশের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটির সার্বিক আয়োজনে ছিল সেন্টার ফর ক্লাইমেট জাস্টিস বাংলাদেশ; আইইউবির ডিপার্টমেন্ট অব ল, ডিপার্টমেন্ট অব এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ও ইক্যাড।

প্রখ্যাত জলবায়ুবিজ্ঞানী অধ্যাপক সালিমুল হক ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর ৭১ বছর বয়সে ঢাকায় পরলোকগমন করেন। তিনি আইইউবির এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক এবং ইক্যাডের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন। ২০২২ সালে বিখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী ‘নেচার’ তাঁকে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১০ জন বিজ্ঞানীর একজন হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় পরিবেশ পদক ও ব্রিটেনের অফিসার অব দ্য অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ অ্যাম্পায়ার (ওবিই) উপাধি লাভ করেন। বিজ্ঞপ্তি