১২তম বছরে পদার্পণ করল মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি, জমকালো আয়োজনে উৎসবের আমেজ

সুদীর্ঘ ১১টি বছর পার করে ১২তম বছরে পদার্পণ করল দেশের একমাত্র মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় ‘বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি (বিএমইউ)’। বিশ্ববিদ্যালয়টির এই সুদীর্ঘ পথচলাকে স্মরণীয় করে রাখতে বিভিন্ন জমকালো ইভেন্টের মধ্য দিয়ে ‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ২০২৪’ উদ্‌যাপন করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়টির ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন উপলক্ষে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে একটি র‍্যালি, ফটো প্রদর্শনী, রক্তদান কর্মসূচি ও অডিটরিয়ামে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির উপাচার্য রিয়ার এডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি জাঁকজমকপূর্ণ হয়ে ওঠে।

আরও পড়ুন

‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ২০২৪’ উদ্‌যাপন উপলক্ষে সকাল ৯টায় র‍্যালির আয়োজন করা হয়। র‍্যালিটি মিরপুর-১২–তে অবস্থিত ইউনিভার্সিটির অস্থায়ী ক্যাম্পাস মেঘনা বিল্ডিং থেকে শুরু হয়ে পদ্মা বিল্ডিং হয়ে সর্বশেষ মেঘনা বিল্ডিংয়ে এসে শেষ হয়।

সকাল ৯টা থেকেই ইউনিভার্সিটির মেল কমনরুমে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি পালন করা হয়, যা বেলা ২টা পর্যন্ত চলে। বিএসএমআরএমইউ স্টুডেন্টস প্ল্যাটফর্ম এবং বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এ মহৎ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকেরা স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন।

একই সময়ে ইউনিভার্সিটির মেল কমনরুমে ফটোগ্রাফি ক্লাবের উদ্যোগে স্থিরচিত্র ও ভিডিও প্রদর্শনী এবং কুইজিং ক্লাবের উদ্যোগে দেয়ালপত্রিকা প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ইউনিভার্সিটি অডিটরিয়ামে ‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ২০২৪’ উদ্‌যাপনের মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভসূচনা হয়। পরবর্তী সময় দেশের একমাত্র মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির ১১ বছর পূর্তি উপলক্ষে অডিটরিয়ামে বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকে এযাবৎ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড/অর্জনের ওপর একটি ভিডিও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া ইউনিভার্সিটির কালচারাল ক্লাব কর্তৃক গান, নাচ, কবিতা আবৃত্তি, নাটকসহ বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।

আরও পড়ুন

এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির উপাচার্য রিয়ার অ্যাডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ কেমন হবে, তা নির্ভর করছে তোমাদের ওপর। তাই তোমাদের কাছে প্রত্যাশা অনেক বেশি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা যে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, এ অর্জনের পথে যাঁরা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন, তাঁদের মহান আত্মত্যাগের ইতিহাস আমাদের সর্বদা স্মরণ করতে হবে। আমাদের এ মহান অর্জন যেন কিছুতেই বৃথা না যায়, সে লক্ষ্যে সর্বদা আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে।’

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘দেশকে উন্নতির সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছাতে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমাদের পরিকল্পনামাফিক কাজ করতে হবে। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিজেদের উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে মেরিটাইম শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। আমাদের সমুদ্র সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতে এবং সমুদ্রে আমাদের নিজেদের অধিকার অক্ষুণ্ন রাখতে মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করি।’

বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি (বিএমইউ), ২৬ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে সংসদের আইন পাসের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এটি দেশের ৩৭তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়।

লেখক: সাদিকুর রহমান সাদি, মেরিটাইম ল অ্যান্ড পলিসি, বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি (বিএমইউ)

আরও পড়ুন