আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে নয়, আন্দোলন অধিকার আদায়ের
শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লাগাতার আন্দোলনে অচল হয়ে পড়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন অবকাশ শেষে আজ রোববার একাডেমিক কার্যক্রম চালু হওয়ার কথা থাকলেও বন্ধ রয়েছে সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা ও দাপ্তরিক কার্যক্রম। রোববার (৭ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক লাউঞ্জ ‘মুখবন্ধে’ অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এ সময় তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। শিক্ষক সমিতি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের কর্মসূচির সঙ্গে সংগতি রেখে কর্মসূচি পরিচালনা করছে।
এ সময় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক তুষার কান্তি সাহা, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার প্রধান, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. রিয়াদ হাসান, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক তপন কুমার সরকার, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও দপ্তরপ্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া শিক্ষক সমিতির অন্যান্য নেতা আসিফ ইকবাল আরিফ, মো. মাহবুবুর রহমান জনি, দেবাশিস ব্যাপারী, মাসাদুল মান্নান, তারিকুল ইসলাম জনি, আলিম মিয়া, ইরফান আজিজ, হিরুক মুশফিক, সবুজ চন্দ্র ভৌমিক, ফিরোজ আহমেদসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রত্যয় স্কিম চালু হলে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার মানে ব্যাপক পতন ঘটবে। কার্যত এর শিকার হবেন দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানেরা, যাঁরা বিদেশে বা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাবেন না। আমাদের আন্দোলন হলো ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। সরকারের উচিত হবে শিক্ষকদের দাবি মেনে নিয়ে ক্লাসে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া। আমাদের এ আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে নয়, আন্দোলন হলো অধিকার আদায়ের আন্দোলন।’
প্রত্যয় স্কিমসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না হওয়ায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন কর্তৃক ঘোষিত সর্বাত্মক আন্দোলন কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
একই দাবিতে ওই দিন থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আন্তবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের আহ্বানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের দাপ্তরিক কার্যক্রম থেকে বিরত থেকে পূর্বঘোষিত সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন তাঁরা। রোববার সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে পঞ্চম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি শুরু করে কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিভিন্ন স্লোগানে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। অন্যদিকে নিজ নিজ কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করেছে ডিরেক্ট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। বিজ্ঞপ্তি